ভুটানের সঙ্গে কষ্টের ড্র by বদিউজ্জামান

পল্টনবাজার সাই স্টেডিয়ামের দুই পাশে ছোট্ট গ্যালারি। একদিকে খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী প্রেসবক্স। বাংলাদেশের জনা ত্রিশেক গণমাধ্যমকর্মীকে সেখানেই বসতে হয়েছে। ঢাকা থেকে গুয়াহাটি যাওয়া ফুটবল ফেডারেশনের কয়েকজন কর্মকর্তাও ছিলেন ওই মাঠে। লাল-সবুজের সমর্থক বলতে হাতে গোনা এ কজনই।
ঠিক উল্টো দিকের গ্যালারিতে ভুটানের একদল তরুণ-তরুণী। সবার পরনে একই রঙের পোশাক। একই সুরে সারাক্ষণ চিৎকার করে গেল, ‘ওয়েক আপ ভুটান। গো অ্যাহেড ভুটান।’ তাদের চিৎকারেই কিনা বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪১ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে রইল ভুটান!
অথচ এই ভুটানই নেপালের কাছে ৫-০ গোলে হেরেছে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে। বাংলাদেশের হেসেখেলেই জেতা উচিত ছিল ভুটানের সঙ্গে। কিন্তু জয় দূরে থাক, কোনো রকম ড্র করে মাঠ ছেড়েছেন রেজাউলরা। হেমন্ত, রুবেল, জীবন, ইয়াসিন মিলে সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন অন্তত গোটা পাঁচেক। অথচ এই ম্যাচে জিতলে কালই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হতো বাংলাদেশের। এখন সেমিফাইনালে উঠতে হলে আগামীকাল নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশকে অন্তত ড্র করতেই হবে। হারলেও শেষ চারে যাওয়া যাবে, তবে হারের ব্যবধান ৫ গোলের বেশি হওয়া যাবে না।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না জাতীয় ও অলিম্পিক দল। সাফ ও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পর এসএ গেমসের প্রথম ম্যাচেও স্বপ্নভঙ্গ। ফুটবলারদের এমন পারফরম্যান্সে হতাশ দলের কোচ গঞ্জালো মোরেনো, ‘গোলের সুযোগ নষ্ট করে গেমসটা কঠিন করে তুলল ছেলেরা। ওদের খেলায় আমি মোটেও খুশি নই। ম্যাচ জিতে নির্ভার থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নেপালের সঙ্গে ম্যাচটি এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেল আমাদের জন্য।’
১৯ মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে গোল খেয়ে বসে বাংলাদেশ দল। ফরোয়ার্ড চেচো গিল্টসেনের বাড়িয়ে দেওয়া বলে আলতো টোকায় গোল করেন জিগমে শেরিং দর্জি। গোল খেয়েই যেন আড়মোড়া ভাঙে বাংলাদেশের। ৪২ মিনিটে সমতায় ফেরান নাবিব নেওয়াজ জীবন। জামাল ভুইয়ার কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে মাথা ছুঁয়ে স্কোরলাইন নিয়ে আসেন ১-১ এ।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল নষ্টের প্রদর্শনী হয়েছে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে অলিম্পিক দলের হয়ে নজরকাড়া রুবেল মিয়া ৬৫ মিনিটে নামেন জনির বদলি হিসেবে। দুয়েকবার ডান প্রান্ত দিয়ে তেড়েফুঁড়ে বক্সে ঢুকে খেই হারিয়েছেন। রুবেল নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেন ৭১ মিনিটে। দুই ডিফেন্ডারকে কাটানো রুবেলের সামনে তখন শুধু ভুটানের গোলরক্ষক গায়ালশেন জাঙপো। কিন্তু বাইরে মারলেন! বাকি সময়ে গোল পায়নি কোনো দলই। তবে শেষ মিনিটের আক্রমণে জিতেই মাঠ ছাড়তে পারত ভুটান। চেচোর দুর্দান্ত আক্রমণ কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক লিটন। ড্রয়ের পরও সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন হেমন্ত। টিম বাসে ওঠার আগে বলছিলেন, ‘নেপালকে হারিয়েই সেমিফাইনালে যাব আমরা।’
বাংলাদেশ দল: লিটন, রায়হান, তপু, রেজাউল, ইয়াসিন, জামাল, জীবন, হেমন্ত, সোহেল (সিফাত), ফাহাদ, জনি (রুবেল)।

No comments

Powered by Blogger.