পোশাকে ভর করে বাড়ছে রপ্তানি আয়

১৫২, ২২২, ২৬৭ ও ২৬৩ কোটি ডলার—গত চার মাসের তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের পরিসংখ্যান এসব। পোশাক খাতের স্বস্তিদায়ক এই আয়ের কারণে দেশের পণ্য রপ্তানির সামগ্রিক চেহারায় ইতিবাচক প্রবণতা টিকে আছে। তবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, প্লাস্টিক, পাট ও পাটজাত, কৃষিজাত ও হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানিতে হোঁচট খাচ্ছে বাংলাদেশ।
চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে দেশের মোট পণ্য রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৯২৬ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার। এই আয় ১ হাজার ৮৮৯ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া আয়টি গত অর্থবছরের একই সময়ের ১ হাজার ৭৮০ কোটি ডলারের চেয়ে ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি। ছয় মাস শেষে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) গতকাল সোমবার এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, মোট পণ্য রপ্তানির ৮১ দশমিক ৭৮ শতাংশ তৈরি পোশাক খাত থেকে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ওভেন ও নিট পোশাকের রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৭৬ কোটি ডলার। এ আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের ১ হাজার ৪৪৪ কোটি ডলারের চেয়ে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। ছয় মাস শেষে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ।
তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘কর্মপরিবেশ উন্নয়নে পোশাক কারখানার পরিদর্শন শেষ হয়েছে। এখন সংস্কারকাজ চলছে। সেই হিসাবে পোশাক রপ্তানি আয় খারাপ বলা যাবে না। তবে ডলারের বিপরীতে ইউরোর দরপতনের কারণে পরিমাণ ঠিক থাকলেও অর্থের হিসাবে পোশাক রপ্তানি কম দেখা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, বছরে পোশাক রপ্তানিতে অন্তত ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকবে। কারখানার সংস্কারকাজ শেষ হলে রপ্তানি আয় অবশ্যই বাড়বে।’
এদিকে, পোশাক রপ্তানির আয় ইতিবাচক থাকলেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত, হিমায়িত খাদ্য ও প্লাস্টিক, হোম টেক্সটাইল এবং পাট ও পাটজাত পণ্য নেতিবাচক বৃত্তেই ঘোরপাক খাচ্ছে। আলোচ্য সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ৬৬ কোটি, পাট ও পাটজাত পণ্যে ৪৯ কোটি, হোম টেক্সটাইলে ৪২ কোটি, হিমায়িত খাদ্যে ৩৩ কোটি, কৃষিজাত পণ্যে ৩০ কোটি এবং প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানিতে ৫ কোটি ডলার আয় হয়েছে। এসব পণ্যে রপ্তানিতে সর্বনিম্ন ৬ থেকে সর্বোচ্চ ২৬ শতাংশ পর্যন্ত কম প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন প্রকৌশল পণ্যে ৩১ কোটি, টেরি টাওয়েলসহ অন্যান্য বিশেষায়িত বস্ত্রজাত পণ্যে ৬ কোটি ডলার আয় হয়েছে।
শুধু জানুয়ারিতে ৩১৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এটি গত জানুয়ারির চেয়ে ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছর ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় হয়েছিল ৩ হাজার ১২০ কোটি ৮৯ লাখ মার্কিন ডলার।

No comments

Powered by Blogger.