জনগণের নিরাপত্তা দিতে যা করার তাই করা হবে -প্রধানমন্ত্রী

বিরোধী জোটের হরতাল-অবরোধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সহ্যের একটা সীমা আছে। দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে যা যা করা দরকার তাই করা হবে। নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি নেত্রী যে ভুল করেছেন তার খেসারত তাকেই দিতে হবে। জনগণ কেন এর খেসারত দেবে। গতকাল বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। গত ৪ঠা জানুয়ারি ঢাকায় সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর গতকালই প্রথম সমাবেশ করলো আওয়ামী লীগ। আগের দিন নানা নাটকীয়তার পর গতকাল সকালে ঢাকায় সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে আওয়ামী লীগকে শর্ত সাপেক্ষে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় মহানগর পুলিশ। এ সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগমের লক্ষ্য থাকলেও একই দিন ঢাকার আশপাশের জেলায় ২০-দল হরতাল ডাকায় প্রত্যাশিত জনসমাগম হয়নি এ সমাবেশে। এদিকে সমাবেশ ঘিরে কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয় আশপাশের এলাকায়। এ নিরাপত্তা ঘেরের মধ্যেই অস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ। পরে ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বৈধ অস্ত্র হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, অফিসে বসে তিনি আন্দোলন করেন। ঘর ছেড়ে অফিসে কেন? উনি বলেন, উনাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমি বলব, উনি বাড়িতে চলে যাক, কেউ বাধা দেবে না। কিন্তু উনি বাড়ি ফিরে যাবেন না। ওখানে বসে সরকার উৎখাত করবেন। ঘর থেকে পালানো উনার পুরনো অভ্যাস। উনি নিজে পালাবেন আর বলবেন আমরা অবরুদ্ধ করে রেখেছি। শেখ হাসিনা বলেন, উনাকে কেউ অবরুদ্ধ করে রাখেনি। উনি নিজেই দেশের মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। খালেদা জিয়া কোন স্বপ্নে বিভোর? যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে অবরোধ ডাকবেন, মানুষ খুন করবেন, এটা আমরা মেনে নেব না। জনগণের ওপর জুলুম-অত্যাচার বন্ধ করুন। দেশের মানুষ শান্তি চায়। প্রায় ৪০ মিনিট স্থায়ী বক্তব্যের বেশিরভাগ সময়জুড়ে খালেদা জিয়ার সমালোচনায় মুখর ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন একটু শান্তিতে আছে তখন অশান্তি বেগমের মনে অশান্তির আগুন জ্বলছে। সেই আশান্তির আগুনে তিনি গোটা দেশকে পোড়াতে চাইছেন। খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রানী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের নেত্রী। উনার ঘারে ভূত চেপেছে। উনি অবরোধ ডাকেন। কিন্তু তার অবরোধ কেউ মানে না। তার ভেতরে যদি এতটুকু মনুষ্যত্ব থাকতো তবে অবরোধ ডেকে মানুষ হত্যা করতেন না। তার সরকারের গত এক বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর আমরা এক বছর সফলতার সঙ্গে পূর্ণ করেছি। যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর করছি। সমুদ্রসীমা জয় করেছি। বিশ্বের মাত্র ৫টি দেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। দেশের মানুষের মাঝে আজ আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অজর্ন করেছে। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি কেন অংশগ্রহণ করেনি এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছিল। তাই জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। আর জামায়াত অংশগ্রহণ করেনি বলে তিনিও (খালেদা জিয়া) নির্বাচনে আসেননি। তাছাড়া তিনি জানতেন নির্বাচনে আসলে তার ভরাডুবি হবে। একারণেও তিনি নির্বাচনে অংশ নেননি। বিএনপির ২০০১-২০০৬ সালের ক্ষমতার মেয়াদে বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি কোনদিন এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেনি। ক্ষমতায় থাকতে তারা হাওয়া ভবন খুলে বসেছিল। হাওয়া ভবনকে ভাগ না দিয়ে ব্যবসা, বাণিজ্য চাকরি কিছুই করা যেত না। সমস্ত দেশ তখন অন্ধকারে ছিল। আর এই সুযোগে দেশে জরুরি অবস্থা এল। পঁচাত্তর-পরবর্তী দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, পঁচাত্তরের পর সেনাবাহিনীতে একটার পর একাট ক্যু হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সংবিধান স্থগিত করে দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন জিয়াউর রহমান। যে যুদ্ধাপরাধীরা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছিল, আমাদের মা-বোনকে ধর্ষণ করেছিল, জিয়া তাদের প্রতিষ্ঠিত করে তাদের মন্ত্রী বানায়, উপদেষ্টা বানায়। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়। যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই আদর্শ ও চেতনা থেকে তখন দেশকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। সারা দেশ তখন অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছিল। ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জাতির সামনে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এটা সবাই বোঝে। বোঝে না খালেদা জিয়া ও তার কুলাঙ্গার পুত্র তারেক রহমান। যেমন মা তেমন বেটা। হাওয়া ভবন খুলে অর্থ সম্পদ বানিয়েছিল। মুচলেকা দিয়ে বিদেশ গিয়েছিল। এখন দু’জনই এক হয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমা হয়েছে। হজের পরে মুসলিমদের সবচেয়ে বড় সমাগম এটি। বিএনপি নেত্রীর ইসলামের প্রতি এতো দরদ। কিন্তু ইজতেমার সময় উনি অবরোধ প্রত্যাহার করলেন না। তবে এতে করে তিনি ইজতেমায় মুসল্লিদের ঢল থামাতে পারেননি। আমি ধন্যবাদ জানাই আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। যারা ইজতেমায় মুসল্লিদের আসতে সহযোগিতা করেছেন। জনসভায় দলীয় নেতাকর্মীদের পাড়ায় মহল্লায় সন্ত্রাসী খুঁজে বের করার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পাড়ায় পাড়ায় সন্ত্রাসী বোমাবাজদের খুঁজে বের করবেন। কারা বোমা বানায়, কারা আগুন দেয়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারাই সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখতে পারবে না।
জনসভায় দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন খালেদা জিয়ার নেতাকর্মীরা মানুষের রক্ত নিচ্ছেন। খালেদা জিয়া দেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু মানুষ খালেদা জিয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বর আমরা স্বাধীনতা পেলেও স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ তখনও পাওয়া হয়নি। ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে আসার পর আমরা স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করবো। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, খালেদার ফোন এখন কেউ ধরে না। পাকিস্তানের নওয়াজ শরীফ ও ইমরান খানও ধরবে না। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও অবরোধ গণতান্ত্রিক অধিকার নয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ আইন করে অবরোধকে নিষিদ্ধ করা হোক। এছাড়া মিথ্যাচারের জন্য খালেদার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আপনাকে (খালেদা জিয়া) নাকি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তালা খুললে যান না। আবার নিরাপত্তার জন্য থানায় গিয়ে জিডি করেন। তিনি বলেন, আপনি চুনকালি নিয়ে থাকেন। দেশের মানুষের আপনাকে আর দরকার নেই। ভেজাল নেত্রীর নেতৃত্ব বাদ দিয়েই দেশ এগিয়ে যাবে। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মতিয়া চৌধুরী বলেন, লাজ লজ্জা নাই। অমিত শাহের সঙ্গে ফোনালাপ ভুয়া প্রমাণিত হলেও গলার জোর কমে না। আপনাদেরকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি যদি এবিষয়ে কোন টেপ থাকে তাহলে তা বের করেন। প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমরা রক্ষা করতে পারিনি। তিনি শুধু নিজের রক্তই নয়, তার গোটা পরিবারের সদস্যরাই দেশের জন্য রক্ত দিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর  স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে আমরা তার রক্তের ঋণ শোধ করবো।
প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, পানি ছাড়া যেমন মাছ বাঁচে না। তেমনি নির্বাচন ছাড়া রাজনৈতিক দল টিকে না। নির্বাচনে না এসে আপনি (খালেদা জিয়া) ভুল করেছেন। সেই ভুলের মাশুল জনগণ কেন দেবে? তিনি বলেন, যে দলের সেনাপতি নিজেই অস্ত্র হাতে যুদ্ধে নামে তখন বুঝতে হবে, সেই দলের সৈনিকরা সবাই নিহত। খালেদা জিয়া একাই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছেন। কিন্তু তার পাশে কেউ নেই। নাসিম বলেন, খেলা হবে ২০১৯ সালে। তখন দেখা যাবে কে হারে কে জেতে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি মিথ্যাচারের দল। আগে তারা মুক্তিযুদ্ধ ও রাজনীতি নিয়ে মিথ্যাচার করতো। এখন তারা বিদেশীদের নিয়েও মিথ্যাচার করছে। সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু যদি ফিরে না আসতেন তাহলে এ দেশের কোন অস্তিত্ব থাকতো না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংবিধান ও জাতিসত্তা রক্ষা পাবে। সমাবেশ পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আশরাফুন্নেসা মোশাররফ প্রমুখ। এর আগে দুপুর আড়াইটায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের মাধ্যমে সভার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। বিকাল সাড়ে তিনটায় সভাস্থলে আসেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে দুপুর ১২টা তকে ঢাকার বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন প্ল্যাকার্ডসহ সভাস্থলে আসতে শুরু করেন। দুপুর আড়াইটার মধ্যে সভাস্থলের নির্ধারিত এলাকা পূর্ণ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগের জনসভা উপলক্ষে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও আশপাশ এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ছিলেন তৎপর। এসময় উদ্যানের প্রত্যেকটি ফটকে তল্লাশি করে নেতাকর্মীদের ঢুকতে দেয় পুলিশ। তবে নিরাপত্তার নামে বাড়াবাড়িতে এসময় অনেককেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
‘খালেদাকে আগে কেন এ প্রস্তাব দিলেন না’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান রেখেই একটি নির্বাচনকালীন সরকার হতে পারে এবং শেখ হাসিনাকে প্রধান রেখেই বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারে-রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, গত পরশু এক বুদ্ধিজীবী একটি জাতীয় দৈনিকে বলেছেন, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচনে যেতে পারেন। এই বুদ্ধিজীবী কেন খালেদা জিয়াকে আগে (৫ই জানুয়ারির আগে) এ প্রস্তাব দিলেন না। গতকাল আওয়ামী লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, নির্বাচনটা কী কোন পিকনিক-বনভোজন, দাওয়াত দিয়ে আনতে হবে? নির্বাচন কী গণভোজ যে যখন খুশি তখন দেয়া যাবে! কিছু পত্রিকা এমনভাবে খবর প্রচার করে যেন আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে দেয়নি। আওয়ামী লীগ কাউকে কোন বাধা দেয়নি। বিএনপি স্বেচ্ছায় নির্বাচন বয়কট করেছে। এখন তারা পস্তাইতেছেন। এখন তাদের বুদ্ধিজীবীরা লিখতেছেন। বলছেন, আনঅপোজড এমপি। প্রার্থী না থাকার দায় কী আমাদের? আওয়ামী লীগ কী কোন বাধার সৃষ্টি করেছিল। তারা নিজেরাই আসল না, এখন দোষটা আওয়ামী লীগের আর শেখ হাসিানার। এ সময় নাম উল্লেখ না করে কয়েকটি পত্রিকার সমালোচনা করে আশরাফ বলেন, কিছু পত্রিকা লিখে খালেদা জিয়াকে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে দেয়নি। তিনি বলেন, ফুঁ দিলে উড়ে যাবে আওয়ামী লীগ এমন দল না।
সৈয়দ আশরাফ বিএনপি’র উদ্দেশে বলেন, আগামী নির্বাচনও শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। আপনি (খালেদা জিয়া) চাইলে সে নির্বাচনও বয়কট করতে পারেন। তাইলে এ দলের (বিএনপি) কোন অস্তিত্বই থাকবে না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিএনপি একটি অশুভ দল। যে কোন সময় তারা যে কোন অঘটন ঘটাতে পারে। আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত থাকুন, সতর্ক থাকুন।

No comments

Powered by Blogger.