খালেদাকে গ্রেপ্তারের পরিণতি হবে সরকারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া

বিরোধী জোটের শীর্ষনেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করলে সেটা সরকারের জন্য রাজনৈতিক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে গ্রেপ্তার ও বিচার করার জন্য সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা তারস্বরে চিৎকার জুড়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাই শেখ সেলিম বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনকে নাকি প্রকাশ্যে রাস্তায় ধরে এনে বিচার করা হবে। শেখ সেলিমের এ ধরনের বক্তব্য কেবল শেখ হাসিনাকে খুশি করা।  নিজের অপরাধ ঢাকা দেয়ার জন্যই বোনকে খুশি করতে এখন বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে গলা ছেড়ে গালিগালাজ করছেন। রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তা ও বিএনপি’র অস্তিত্ব প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র জ্বালা। সেটি বুঝতে পেরেই শেখ সেলিম দিনরাত বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে অশ্রাব্য চিৎকার করে যাচ্ছেন। তবে বড় কোন বিপদ ঘটে গেলে শেখ সেলিম যে শেখ হাসিনারও বিচার চাইবেন- তাতে কোন সন্দেহ নেই। বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করতে আইনি প্রক্রিয়া দেখা হচ্ছে বলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, এখন একদলীয় রাষ্ট্র, একদলীয় জাতীয় সংসদ, একদলীয় নির্বাচন, একদলীয় জনপ্রশাসন এবং একদলীয় বিচার ব্যবস্থা বিরাজমান। সমগ্র রাষ্ট্রটিকেই আওয়ামীকরণ করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় আইনি প্রক্রিয়ার অর্থ হচ্ছে-প্রধানমন্ত্রীর জারিকৃত ফরমানের ধারাবাহিক বাস্তবায়ন। অর্থাৎ গ্রেপ্তার থেকে শুরু করে বিচারের রায় পর্যন্ত। কিন্তু জনগণও যে বিচারক আওয়ামী লীগ যেন সেটা ভুলে না যায়। আওয়ামী নেতারা ভুলে গেছে দেশের মালিক জনগণ, কোন ভোটারবিহীন সরকার বা সংসদ নয়। অসভ্য আস্ফালনকারীরা নিশ্চয় জনগণের স্মৃতি থেকে মুছে যাবে না। তিনি বলেন, গত ছয় বছর ধরে বিএনপিকে ধ্বংস করতে এমন কোন বেপরোয়া নিষ্ঠুরতা নেই যা এই অবৈধ সরকার করেনি। আওয়ামী লীগের প্রকাশ্য কর্মসূচি ছিল বিএনপিসহ আন্দোলনরত বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুম করা কিংবা বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে গুলি করে ক্ষতবিক্ষত লাশ অজ্ঞাত স্থানে ফেলে দেওয়া। আওয়ামী শাসন আর মরণের বার্তা যেন সমার্থক। জনগণের কণ্ঠনালী কেটে গণতন্ত্রকে কবরস্থ করার ঐতিহ্য এদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগেরই। সেজন্য নতুন রূপে নয়, আসল রূপেই বাকশালকে চুড়ান্ত রূপে দাঁড় করানো হয়েছে। আর এজন্যই বেগম জিয়াকে বন্দি করার নানা ফন্দি আঁটা থেকে শুরু করে গণমাধ্যমকে শুধুমাত্র সরকারের সকল বার্তা প্রচারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর বাকস্বাধীনতার আইনগত অধিকারকে তো আগেই শুলে চড়ানো হয়েছে। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সরকারের নীতিনির্ধারকরা আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের বুকে গুলি করতে বলেছেন। গোয়েন্দা পুলিশরা বন্দুক যুদ্ধের গল্প বানিয়ে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের হত্যার পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাহবা পাচ্ছেন। আন্দোলন ঠেকাতে প্রতিরোধ কমিটির নামে বেসামাল সশস্ত্র ক্যাডারদের লেলিয়ে দিয়ে আন্দোলনকারীদের লাশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতকিছুর পরেও আন্দোলনরত নেতাকর্মীরা অবরোধ-হরতালে নির্ভীক অগ্রবাহিনী হিসেবে অংশগ্রহণ করছে। তিনি বলেন, সরকার মনে করছে, বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করলেই ২০ দলের আন্দোলনে ভাটা পড়বে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে কথিত বন্দুকযুদ্ধ ও ক্রসফায়ারের পরও আন্দোলনকারীরা যখন হরতাল অবরোধে অগ্রগামী তখন বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তারের পরিণতি হবে বর্তমান অবৈধ সরকারের জন্য রাজনৈতিক অন্তেষ্টিক্রিয়া।

No comments

Powered by Blogger.