সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ আর নেই- বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক

চলে গেলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ। স্থানীয় সময় বৃহসপতিবার দিবাগত রাত একটায় তিনি ইন্তিকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি...  রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গত বছর ডিসেম্বরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। তার নামাজে জানাজা শুক্রবার বাদ আসর ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ গ্র্যান্ড মসজিদে  অনুষ্ঠিত হয়। তার মৃত্যুতে মুসলিম বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে আসে। আবদুল্লাহ’র মৃত্যুতে আজ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। শোক জানাতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী সৌদি আরব যাচ্ছেন। শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ বিশ্ব নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন। বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজকে চির বিদায় জানাতে গতকাল রিয়াদে সমবেত হন লাখো মানুষ। জুমা নামাজের পর রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আব্দুল্লাহ গ্র্যান্ড মসজিদে জানাজা শেষে বাদশাহ’র মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সমাধিক্ষেত্রের উদ্দেশে। সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিহিত পুরুষরা অংশ নেন শোকযাত্রায়। আবদুল্লাহকে শেষ বিদায় জানাতে রিয়াদে সমবেত হন বিশ্ব নেতারা। বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর তার সৎ ভাই বাদশাহ সালমান সৌদি আরবের শাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। ৭৯ বছর বয়সী সালমান এতদিন ধরে রাজধানী রিয়াদের গভর্নর ও পরবর্তিতে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বাদশাহ আবদুল্লাহর আরেক সৎ ভাই মুকরিনকে যুবরাজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সালমানের পর তিনিই হবেন সৌদি বাদশাহ। এদিকে নতুন বাদশাহ সালমান আগের বাদশাহর নীতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি মুসলিম বিশ্বের ঐক্য ও সংহতির পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় বাদ এশা নতুন বাদশাহ ও যুবরাজ শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালে সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজের মৃত্যুর পর নিয়মতান্ত্রিকভাবে তার সন্তানদের হাতে পর্যায়ক্রমে দেশটির শাসনভার এসেছে। একাধিক স্ত্রীর গর্ভে বাদশাহ আবদুল আজিজের ৪৫ জন পুত্রসন্তান রয়েছেন। বর্তমান বাদশাহ সালমান তার ২৫তম সন্তান। মাত্র ২০ বছর বয়সে তাকে রিয়াদের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। প্রায় অর্ধশত বছর তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। কঠোর পরিশ্রম ও শৃঙ্খলার জন্য তার খ্যাতি রয়েছে। ২০১১ সালে তিনি সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন।
২০০৫ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহ শাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমপর্ক বজায় রেখেছে সৌদি আরব। তিনি এমন এক দশকে সৌদি আরব শাসন করেছিলেন, যখন মধ্যপ্রাচ্য ছিল আরব বসন্ত আর জঙ্গিবাদে উত্তাল। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গণ-আন্দোলনের মুখে বিভিন্ন বাদশাহ ক্ষমতাচ্যুত হচ্ছিলেন। তবে সৌদি আরবে সে ঢেউ একেবারেই আঘাত হানেনি। আরব বসন্তের সময় নিজ দেশকে স্থিতিশীল কৃতিত্ব দেয়া হয় বাদশাহ আবদুল্লাহকে। তার আমলে দেশটি বড় অংকের অর্থনৈতিক মজুদ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। সৌদি আরব নিবাসীদের কাছে তিনি ছিলেন দারুণ জনপ্রিয়। তার প্রয়াণের সংবাদে সৌদি আরব জুড়ে নেমেছে শোকের ছায়া। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের শোক প্রকাশ করেছেন। টুইটারে একজন লিখেছেন, আমরা শুধু একজন বাদশাহ নয় হারিয়েছি একজন পিতাকে।
বিশ্বজুড়ে শোক: বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুতে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ শোক জানিয়েছে। আজ রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। দেশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শোক জানাতে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ একই দিনে সৌদি আরবে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা। রাষ্ট্রীয় শোক পালনের অংশ হিসেবে সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্থনমিত রাখা হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুতে দ্রুত শোক প্রকাশ করেন। লিখিত বিবৃতিতে ওবামা বলেন, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করেছে। আমি সবসময় বাদশাহ আবদুল্লাহর চিন্তাভাবনা ও আমাদের সত্যিকার উষ্ণ সমপর্কের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি। জাপান, ভারত, ফ্রান্সের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়েছেন। ৪০ দিনের শোক পালন করবে জর্ডান ও বাহরাইন।
তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন এক বিবৃতিতে বাদশাহর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে বাদশাহ আবদুল্লাহর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন তিনি। এছাড়া মানবতার কাজে তার সহযোগীতার কথাও স্মরণ করেন বান কি মুন। মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল সিসি বলেন, সৌদি আরব ও আরব জাতি নিজের সেরা সন্তানদের এক নেতাকে হারালো। পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ শোক প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন। বাদশাহ আবদুল্লাহ দুই পবিত্র মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রত্যেক পাকিস্তানির মনে সবসময় থাকবেন বলে জানান তিনি। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি শোক প্রকাশ করে বলেন, আফগানরা সবসময় নিজেদের আন্দোলনে বাদশাহ আবদুল্লাহর মহান সহযোগিতার কথা স্মরণ রাখবে। তিনি সবসময় আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় সমর্থন দিয়েছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। ইসরাইলি প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন বলেছেন, বাদশাহ আবদুল্লাহর উদার নীতি মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভূমিকা রেখেছিল। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শোক প্রকাশ করে বলেছে, তিনি চীনের একজন বন্ধু ছিলেন। চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সমপর্ক রক্ষায় তিনি সবসময় গুরুত্বারোপ করতেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল বলেন, নিজের পিতার মতো বাদশাহ আবদুল্লাহও এমন একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তি, যিনি নিজের দেশের মানুষের উন্নয়নে ও বিশ্বে নিজ দেশের নেতৃত্ব বৃদ্ধিতে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার শান্তি প্রক্রিয়ায় তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একজন বন্ধুকে হারালো। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ বলেন, লরা ও আমি এমন একজন মানুষের মৃত্যুতে শোকাহত, যাকে আমি শ্রদ্ধা করি ও যার সঙ্গে কাজ করতে পেরে সম্মান বোধ করি।
এক নজরে আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ (১৯২৪-২০১৫)
পবিত্র দুই মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক সদ্যপ্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ ছিলেন সৌদি আরবের ষষ্ঠ বাদশাহ। ১৯২৪ সালে রিয়াদে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। নিজের বাবার মতো তিনিও ধর্ম, ইতিহাস ও আরব ঐতিহ্যের প্রতি বিশেষ গভীর শ্রদ্ধা লালন করতেন। বেদুঈন উপজাতিদের একজন হিসেবে বহু বছর জীবনযাপন করায় সম্মান, সরলতা, উদারতা ও সাহসে পরিপূর্ণ ছিলেন তিনি। ১৯৬২ সালে বাদশাহ ফয়সাল তৎকালীন প্রিন্স আবদুল্লাহকে ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। ১৯৭৫ সালে তিনি দ্বিতীয় সহকারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮২ সালে বাদশাহ ফাহাদ সিংহাসনে এলে তিনি পরবর্তী বাদশাহ এবং একই সঙ্গে প্রথম সহকারী প্রধানমন্ত্রী হন। এরপর তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। তিনি ২০০৫ সালের ১লা আগস্ট সৌদি আরবের শাসনভার গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজের উত্তরসূরি। বাদশাহ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি মন্ত্রিপরিষদের প্রধানমন্ত্রী ও ন্যাশনাল গার্ডের প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বাদশাহ হিসেবে শাসনভার গ্রহণের পর তিনি দেশজুড়ে ব্যাপক অর্থনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোগত প্রকল্প হাতে নেন। তার উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে চারটি বড় শহর প্রতিষ্ঠা, বাদশাহ আবদুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সাইয়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি ও প্রিন্সেস নোউরা বিনতে আবদুল রহমান ইউনিভার্সিটি ফর গার্লস প্রতিষ্ঠা, পবিত্র দুই মসজিদের বর্ধনমূলক কাজ এবং ব্যাপক কল্যাণমূলক কাজ অন্যতম। তিনি সৌদি আরবের বিচার বিভাগের ঐতিহাসিক স্বীকৃতি, রাজকীয় উত্তরাধিকারী নির্বাচনে আইন প্রণয়ন করেছিলেন তিনি। ২০০৫ সালে ক্রাউন প্রিন্স বা সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে তিনি দেশের পৌরসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। বৈশ্বিক পর্যায়ে আরব ও ইসলামের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় রক্ষায় তিনি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা রেখেছেন। একই সঙ্গে বৈশ্বিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য তার অবদান অনস্বীকার্য।
আরব ও ইসলামিক বিশ্বে সংঘাতের সমাধানে তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা ছিল তার উদ্বেগের কারণ। ২০০২ সালের বৈরুত আরব সম্মেলনে তিনি এ সমপর্কে তার পদক্ষেপ তুলে ধরেছিলেন। আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোতে ঐক্যবদ্ধ আরব স্বার্থ রক্ষায় তার দূরদর্শী ভূমিকা ছিল। ফিলিস্তিনে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। একইসঙ্গে সুদান, চাদ ও দারফুরে সমঝোতা চুক্তিতে তার অবদান ছিল। ২০০৮ সালে তিনি জেদ্দা জ্বালানি সম্মেলনের আয়োজন করেন। বৈশ্বিক তেল বাজার স্থিতিশীল রাখতে ওই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল। এছাড়া তৃতীয় অপেক সম্মেলন, ১৯তম আরব লীগ সম্মেলন ও ২৭তম জিসিসি সুপ্রিম কাউন্সিলের সম্মেলন আয়োজন করেছিলেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের ইস্যুতে তিনি ছিলেন অটল। নিষ্পাপ মানুষের প্রাণ হরণের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ২০০৫ সালে রিয়াদে অনুষ্ঠেয় সন্ত্রাসবিরোধী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি বৈশ্বিক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেন। বাদশাহ ও ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে তিনি বহু দেশ সফর করেছেন। বিদেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সৌদি আরবের সমপর্ক বৃদ্ধিতে তিনি কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাদশাহ আবদুল্লাহর প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর ছিল ১৯৭৬ সালে যুবরাজ হিসেবে। সে সফরে তিনি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরার্ল্ড ফোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দ্বিতীয় সফর ছিল ১৯৮৭ সালের অক্টোবর মাসে। সে সময় তিনি ছিলেন ক্রাউন প্রিন্স অর্থাৎ পরবর্তী বাদশাহ। এ সফরে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ১৯৯৮ সালে তৃতীয় বারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন তিনি। এ দফায় প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সঙ্গে তার বৈঠক হয়। এছাড়া পরবর্তীতে ২০০০ সালে জাতিসংঘে শতবার্ষীকি অনুষ্ঠানে নিউ ইয়র্কে আবারও দেখা হয় ক্লিনটনের সঙ্গে। এছাড়া ২০০২ ও ২০০৫ সালের সালের ২৫শে এপ্রিলে আবদুল্লাহকে টেক্সাসের প্রেসিডেন্সিয়াল র‌্যাঞ্চে আমন্ত্রণ জানান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ।
২০০৮ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহর আতিথেয়তায় জেনাদ্রিয়াতে রাজকীয় র‌্যাঞ্চে অতিথি হিসেবে দু’বার আসেন প্রেসিডেন্ট বুশ। মরুভূমি আর অশ্ব চালনা নৈপুণ্যের প্রতি বাদশাহ আবদুল্লাহর ভালবাসা ছিল। সব থেকে পছন্দ করতেন অ্যারাবিয়ান ঘোড়া। রিয়াদে একুয়েস্ট্রিয়ান ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। জীবনভর তার আরেকটি ভালবাসা ও তীব্র অনুরাগের কাজ ছিল বই পড়া। এতে কিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন সবসময়। দুটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। একটি হলো রিয়াদে বাদশাহ আবদুল আজিজ লাইব্রেরি। অপরটি মরোক্কের ক্যাসাব্ল্যাঙ্কায়। তার উল্লেখ্য উদ্ধৃতির মধ্যে একটি ছিল ২০০৭ সালে ১৯তম আরব লিগ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যের কিছু অংশ। তিনি সেখানে বলেছিলেন, পরিত্রাণের পথে প্রথম পদক্ষেপ হলো নিজেদের মধ্যে এবং একে অপরের মধ্যে অন্তর্নিহিত আত্মবিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। আত্মবিশ্বাস একবার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে এর সঙ্গে আসবে বিশ্বাসযোগ্যতা। আর বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হলে, বইবে প্রত্যাশার বাতাস। আর সেটা যখন ঘটে, আমরা কখনই তখন অঞ্চলের বাইরের কোন শক্তিতে এর ভবিষ্যৎ নিরূপণ করার সুযোগ দেবো না। তাহলে আরব ভূখণ্ডের ওপর আরবিজম ছাড়া অন্য কোন ঝান্ডা উড়বে না।

No comments

Powered by Blogger.