‘এবার একটু থামুন’ -চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে ১৪ দলের সমাবেশ

(চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে গতকাল ১৪ দল আয়োজিত জনসভায় বক্তৃতা করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দি​ন চৌধুরী l ছবি: প্রথম আলো) অনেক মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। এই বর্বরতা বন্ধ করতে হবে। মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চরম ব্যবস্থা নেবে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে ১৪ দল আয়োজিত জনসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অবরোধ ও হরতালের নামে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের নাশকতা ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, যারা প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান দেয় না, রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে মারে, তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নেই। সভায় বক্তব্য দেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি ও সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরউদ্দিন, জাসদ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন, ওয়াকার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ফ্রান্সে পত্রিকা অফিসে ঢুকে যারা হামলা করেছে, সে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী তাদের গুলি করে মেরেছে। বেলজিয়ামে দুজন বন্দুকধারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমেরিকায়ও সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এসব করা হয়েছে জননিরাপত্তার স্বার্থে। বাংলাদেশেও যদি কোনো গোষ্ঠী জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, মানুষকে বোমা মেরে হত্যা করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জনগণকে রক্ষায় চরম ব্যবস্থা নেবে। খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়াকে নাকি ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। এটি কোন ইনজেকশন যে প্রধানমন্ত্রী যাওয়ার আগে খালেদা জিয়ার ঘুম ধরে আর প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর ঘুম ভাঙে। দেশে যে অবস্থা শুরু হয়েছে, জনগণ বিএনপিকে এখন ইনজেকশন দেবে। ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিএনপির নেত্রীর আন্দোলন গণতন্ত্রের পক্ষে নয়, সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এসব বর্বরতা এখনই রুখে দেওয়া হবে।
মঈন উদ্দীন খান বাদল বলেন, ‘পেট্রলবোমায় হতাহতদের আহাজারি আপনাদের গায়ে লাগে না। ওদের মা-বাবা ও স্বজনেরা কারও কাছে বিচার না দিয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছেন। আপনারা অনেক মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন। এবার একটু থামুন। মানুষ মারার কারণে আল্লাহ কী নিষ্ঠুর বিচার করেছেন জনগণ তা দেখেছে। আপনারা যদি নাশকতা বন্ধ না করেন, তাহলে ১৪ দল জনগণের কাছে যাবে। তখন অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিএনপিকে জাল গোটাতে হবে।’
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘নাশকতাকারীদের কারা নির্দেশ দিচ্ছেন এবং কারা অর্থ দিচ্ছেন, তাঁদের নাম আমরা জানি। আমি সাবধান করে দিচ্ছি, পর্দার আড়ালে থেকে আর খেলবেন না। আমাদের ছেলেরা ওত পেতে রয়েছে। বোমাবাজি বন্ধ না করলে আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগকে ধরে রাখতে পারব না। তারা লাঠি নিয়ে প্রস্তুত আছে।’
মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিএনপি জোট হরতাল-অবরোধ দিয়ে জাতিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষার সময় কোনো বোমাবাজ ও জঙ্গিবাদকে সহ্য করা হবে না। সহ্যেরও সীমা আছে।

No comments

Powered by Blogger.