গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে বার্ন ইউনিট বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার প্রতিশ্রুতি

আগে টাকা নয়, সেবা এবং দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে উদ্বোধন করা হলো পূর্ণাঙ্গ একটি বার্ন ইউনিট। বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে সীমিত আসনে পোড়া রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে ব্যয় বেশি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসা থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি সামপ্রতিক সময়ে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা বেড়ে যাওয়া ও তাদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়ায় এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে। গতকাল ধানমন্ডীতে হাসপাতালের সেমিনার হলে এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জানানো হয়, ৬টি সাধারণ সিট এবং আইসিইউ, সিসিইউ ও জরুরি  সেবার একাধিক সিট নিয়ে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এটি প্রাথমিক উদ্যোগ। প্রয়োজনে পরিসর বাড়ানো হবে। এমনকি খুব শিগগির ঢাকার বাইরে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শাখা হাসপাতালেও স্বতন্ত্র বার্ন ইউনিট চালু করা হবে। এ সময় পোড়া রোগীদের অন্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলোকে অতি মানবিক এই সেবায় এগিয়ে আসতে উৎসাহ যোগাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। বক্তৃতা করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রো-ভিসি প্রফেসর ডা. রেজাউল ইসলাম, চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. একে খান এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোবাশ্বের মল্লিক। বক্তারা চিকিৎসা সেবার এ খাতে আরও সরকারি সহায়তা বাড়ানোর তাগিদ দেন। বলেন, বর্তমানে এসিড নিক্ষেপ ও অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনা যেভাবে বেড়েছে তা বন্ধ করা যেমন জরুরি  তেমনি এর চিকিৎসা আরও সহজ করাও প্রয়োজন। কিন্তু এরকম উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এজন্য বেসরকারি পর্যায় থেকেও এগিয়ে আসতে হবে। বিত্তবান ও সুহৃদ ব্যক্তিরা এ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটকে সহায়তা করতে চাইলে তাকে স্বাগত জানানো হবে। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সন্ত্রাসের কারণে দগ্ধরোগীদের হার বেড়েছে। অথচ তাদের জন্য জরুরি সেবার সুযোগ কম। কয়েকটি নির্দিষ্ট হাসপাতাল ছাড়া প্রকৃত সেবা পাওয়া যায় না। রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করে মানুষকে শান্তি দেয়া সরকারের যেমন দায়িত্ব তেমনি পোড়া রোগীদের সেবা নিশ্চিত করাও তাদের দায়িত্ব। সরকারের পাশাপাশি আমরা সেই দায়িত্ব পালনে অংশীদার হতে চাই। তিনি পোড়া রোগীদের বেশিরভাগ দরিদ্র উল্লেখ করে তাদের চিকিৎসা সেবা দ্রুত নিশ্চিত করার স্বার্থে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। বলেন, সরকারকে অতি দ্রুত সব এমবিবিএস চিকিৎসককে পোড়া রোগের বিষয়ে শর্ট ট্রেনিং দিতে হবে। এটি মাত্র এক সপ্তাহে করা সম্ভব। পাশাপাশি কমাতে হবে ওষুধের দাম। একই সঙ্গে গণশিক্ষা বাড়ানো দরকার। এর মাধ্যমে আগুন থেকে রক্ষা এবং দগ্ধদের শুশ্রূষায় সচেতনতা বাড়ানো ও প্রাথমিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এজন্য গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.