সাবিহউদ্দিনের গাড়িতে আগুন, বিটিভিতে ককটেল বিস্ফোরণ- অবরোধে লণ্ডভণ্ড ট্রেনের শিডিউল অচল মহাসড়ক

টানা অবরোধে ভেঙে পড়েছে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। সরকারের তরফে চেষ্টা করেও মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস এবং পণ্যবাহী ট্রাক নামানো যাচ্ছে না। গতকাল পুলিশ ও বিজিবি’র প্রহারায় কিছু গাড়ি চললেও বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীদের হামলার শিকার হয়। রাতে বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কে যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে একের পর এক নাশকতার কারণে ট্রেন যোগাযোগও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে সময়সূচি। নাশকতার কারণে যাত্রা বাতিল করতে হচ্ছে নির্ধারিত ট্রেনের। গতকাল রাজধানীর সদরঘাটে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চেও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়া রাজধানীতে অবরোধের পঞ্চম দিনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমদের গাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০টি গাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অবরোধ ও হরতাল ঘিরে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে প্রায় দেড়শ’ যানবাহনে। অনেক জায়গায় অভ্যন্তরীণ রুটেও বন্ধ থাকে যান চলাচল। এছাড়া দেশের কোথাও থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। ফলে গতকালও সারা দেশের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় সড়ক পথের পাশাপাশি ঢাকার সঙ্গে চট্টগাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগও বন্ধ ছিল দীর্ঘ সময়। শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে প্রায় সবগুলো রুটে চলাচলকারী ট্রেনের। টানা অবরোধে যোগান না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। অপরদিকে বাইরে চালান না হওয়ায় কাঁচামালসহ উৎপাদিত পণ্যের দাম কমেছে অস্বাভাবিকভাবে। হামলা-গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ ৭ জেলায় হরতাল ডেকেছে বিরোধী জোট। এদিকে চাঁপাই নবাবগঞ্জে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বাসা লক্ষ্য করে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে।
সাবিহউদ্দিনের গাড়িতে আগুন
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহউদ্দিন আহমেদের গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো খ- ১১-৯৪৮৯) আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রাত ৯টার দিকে গুলশান ৮৬ নম্বর সড়কে পুলিশের তল্লাশি চৌকির সামনেই এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের দক্ষিণ দিকে পুলিশের তল্লাশি চৌকির সামনে গাড়ি পার্ক করে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান সাবিহউদ্দিন আহমেদ। আধাঘণ্টা পর দুটি মোটরসাইকেলে এসে কয়েকজন যুবক গাড়িটিতে আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলের কয়েক গজ দূরেই অবস্থান করছিল পুলিশ। এসময় পথচারীরা এসে আগুন নেভায়। গাড়িতে আগুন দেয়ার সময় সাবিহউদ্দিন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন।
ট্রেনের শিডিউল লণ্ডভণ্ড, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
সারা দেশে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে গলদঘর্ম রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে দুর্বৃত্তদের রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলা, আগুন দেয়া, নিরাপত্তাকর্মীদের হামলার ঘটনায় তাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসব নাশকতা যেমন শক্তভাবে এড়াতে পারছেন না তেমনি ট্রেনের ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। গতকাল দুপুরে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় যে, সেখানে যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। দিনের টিকিট সকাল বেলায় শেষ হয়ে গেছে। অনেক যাত্রী টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট কিনছেন। অবরোধের কারণে ট্রেন কখন ছেড়ে যায় আর কখন আসে তার কোন নিশ্চয়তা মিলছে না। এতে সাধারণ যাত্রীরা প্রচণ্ড দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। তাদের কণ্ঠেও হতাশার সুর শোনা গেলো।
সূত্র জানায়, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বঙ্গবন্ধু  সেতু পর্যন্ত ১১৬ কিলোমিটার এবং ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার কমলাপুর  রেলওয়ে থানা চট্টগ্রাম বিভাগের রেলওয়ে পুলিশের অন্তর্ভুক্ত। এতো বড় এলাকা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যে নিরাপত্তা বাহিনী দরকার তা রেলওয়ের নেই। তবে অবরোধকে কেন্দ্র করে  প্রতি ১ কিলোমিটারে ৩ জন আনসার সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত রেললাইনের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখাশোনা করছেন এবং সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ নিয়ে কমলাপুর থানায় আলাদা একটি নিরাপত্তা সেল খোলা হয়েছে। এছাড়াও কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেনে দুইজন পোশাকধারী এবং ৫ জন সাদা পোশাকধারীসহ ৭ পুলিশের সদস্যরা থাকছেন।
কমলাপুর রেলস্টেশনের কাউন্টার-১ নম্বরের টিকিট মাস্টার আব্দুল আজিজ জানান, অবরোধের কারণে দূরপাল্লার তেমন বাস চলাচল করছে না। কয়েকটি বাস চলাচল করলেও মহাসড়কে নিরাপত্তা নিয়েও অনেক যাত্রী শঙ্কিত। এ কারণে ট্রেনকে অনেকেই নিরাপদ হিসেবে ভাবছেন। ১৭ নম্বর কাউন্টার টিকিট মাস্টার বেলায়েত হোসেন জানান, অবরোধ ঘোষণার পরেই দিনের টিকিট সকাল বেলায় শেষ হয়ে যায়। আগে দিনও শেষ হয়ে যাচ্ছে। যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ রয়েছে। নিরুপায় হয়ে অনেকেই দাঁড়িয়ে যাওয়ার জন্যও টিকিট কিনছেন।
কমলাপুর রেলস্টেশন সূত্র জানায়, প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টায় কমলাপুর রেলস্টেশনে ৬২টি ট্রেন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসে। কিন্তু গতকাল একতা, হাওর, সুবর্ণা ও লালমনি এক্সপ্রেসসহ ২৬টি ট্রেন সময়মতো পৌঁছেনি। যাত্রা বাতিল হয় একটির। প্রতিঘণ্টায় যেখানে ট্রেন চলে ৬০ কিলোমিটার। সেখানে অবরোধকে কেন্দ্র করে ২০ কিলোমিটার চলছে। অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় ট্রেন চালানো হচ্ছে। প্রতি কিলোমিটারের লাইন ঠিক আছে কিনা তা আগে সিগনাল নেয়া হচ্ছে। কেননা, অবরোধকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্নস্থানে রেলের ফিশপ্লেট খুলে ফেলা হচ্ছে। কমলাপুর রেলওয়ে থানার ওসি আব্দুল মজিদ জানান, অল্প জনবল দিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। তবে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করার জন্য আরও দক্ষ জনবল লাগবে। পুলিশ যে কোন মূল্যে নাশকতা এড়ানোর জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুর শহরের ইটেরপোল এলাকায় গতকাল সকাল ৯টার দিকে ২০ দলের সড়ক অবরোধকালে ও মিছিলে সময় পুলিশের ধাওয়া ও ২টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে মিয়ার রাস্তার মাথায় ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া বাস টার্মিনাল, ইটেরপোল, আলীয়া মাদ্‌রাসা এলাকায় তিনটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা। এছাড়া লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা, রায়পুর, রামগঞ্জ, রামগতি, কমলনগর, চন্দ্রগঞ্জ থানাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর থেকে জানান, দিনাজপুরে ৫টি ট্রাক এবং একটি ট্যাংকলরিতে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। এ সময় আগুনে ঝলছে গেছে ট্রাক হেলপার আবুল কালামের শরীর। এছাড়াও আহত হয়েছে আরও একজন সহকারীসহ দু’জন (ড্রাইভার) চালক। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় ইটের আঘাতে আহত হয়েছে ট্রাকচালক আলামিন। একই স্থানে অবরোধকারীদের ধাওয়ার মুখে পালানোর চেষ্টার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেছে একটি মিনি ট্রাক। এতে আহত চালককে বীরগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং (হেলপার) সহকারীকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগের পর আগুন নেভাতে সক্ষম হয় দমকল কর্মীরা। সকাল সাড়ে ৭টায় দিনাজপুর জেলা শহরের ষষ্টিতলা সড়কে বিক্ষোভ মিছিল  করেছে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা।
চাঁপাই নবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, চাঁপাই নবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট মোস্তাকিনুর রহমানের বাসভবনে ককটেল হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে এই হামলা চালানো হয়। সন্ধ্যায় যখন তিনি ঘরে বসে ছিলেন এমন সময় তার বাসভবন লক্ষ্য করে দুর্বত্তরা পরপর তিনটি ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। ককটেলগুলো বাসভবনের ভিতরে বিস্ফোরিত হলেও কেউ হতাহত হয়নি। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। শহরের নিয়ামতনগর এলাকায় অবস্থিত গণপূর্ত বিভাগের অফিসার্স কোয়ার্টারে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাকিনুর রহমান। কয়েক গজের মধ্যেই রয়েছে পুলিশ সুপারের বাসভবন। ওই এলাকায় সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরা থাকলেও দুর্বৃত্তরা ককটেল হামলা চালিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যাওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
শিবগঞ্জ (চাঁপাই নবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, দেশের দ্বিতীয় স্থলবন্দর সোনামসজিদ পানামা পোর্ট লিঙ্কে আটকে পড়ে পণ্যবাহী ট্রাক। আটকেপড়া পণ্যবোঝায় ট্রাক গতকাল সকাল ১০টার সময় যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কড়া নিরাপত্তায় পারাপার করার সময় আবারও চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় উপজেলার কানসাট মিলিক ব্রিজ থেকে গোপালনগর মোড়ে ককটেল বিস্ফোরণ, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, ট্রাক ভাঙচুর হয়। এ ঘটনায় আহত হন মাসুদ রানা নামে এক ট্রাক হেলপার। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবরোধকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, শটগান ও রাইফেলে গুলি ছোড়ে।
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে বিভিন্নস্থানে বিএনপি’র ৪ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- সুরুজ, মাসুম ও সুমন।
স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় রূপগঞ্জে সড়কে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে অবরোধকারী পালিয়ে যায়। উপজেলার ভায়েলা এলাকার ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন দেয় অবরোধকারীরা।
রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় কাজল পরিবহন এজেন্সির একটি মালামাল বোঝাই কন্টেইনার ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ট-১৬-০২-৮৬) আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় ড্রাইভার ও হেলপারকে বেদম পিটিয়ে মোবাইল ও ২১ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। এছাড়া সিকদার রাস্তার মাথা ও বর্ডার নামক স্থানে হামলা চালিয়ে একটি ট্রাক, ৬টি মোটরসাইকেল, ২টি অটোরিকশাসহ ১০ গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ সময় কন্টেইনার চালক মাহবুব, হেলপার রাজীব, অটোরিকশা চালক মো. রফিক, যাত্রী মো. পারভেজ ও শফিক হোসেনসহ ৭ জন আহত হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল এসে আগুন নেভায়। অগ্নিসংযোগে মালামালসহ পুড়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, চিরিরবন্দরের দিনাজপুর- সৈয়দপুর মহাসড়কের গোঘাটা নামকস্থানে দূর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে ২টি ট্রাক ও ১টি ট্যাঙ্কলরির সম্মুখভাগ পুড়ে গেছে। এ অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি শুক্রবার রাত আনুমানিক আড়াইটায় উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের গোঘাটা নামকস্থানে ঘটেছে। ট্রাকের চালক বাবলু চন্দ্র রায় জানান, আমরা বীরগঞ্জের ইটভাটায় কয়লা ফেলে আসছিলাম। রাত আড়াইটায় এখানে ২৫/৩০ জনের একটি দুর্বৃত্তের দল রাস্তার দু’ধারে বেশ ক’টি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে এবং ৪টি ট্রলি দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। অগ্নিসংযোগে ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ফেনী প্রতিনিধি জানান, ফেনীতে পুলিশের পিকআপ ভ্যানসহ কমপক্ষে ৪০টি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহিপাল হাইওয়ে থানার পাশে প্রায় ৩০-৩৫ জনের অবরোধকারীরা হঠাৎ সড়কে ইটের টুকরো ফেলে অবরোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে তারা পেট্রোল ঢেলে একটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় ২০টি গাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় অবরোধকারীদের ধাওয়ায় দু’টি কাভার্ডভ্যান মুখোমুখি সংঘর্ষে অন্তত ৪জন আহত হয়। এর আগে সকালের দিকে অবরোধ সমর্থনে যাত্রীবাহী বাসসহ অন্তত ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে অবরোধকারীরা। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামপুর এলাকার নাসির মেমোরিয়াল কলেজের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসসহ কয়েকটি গাড়ি এবং শহরের সেন্ট্রাল হাইস্কুল মোড়ে ১০/১২টি সিএনজি অটোরিকশাসহ অন্তত ১৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এদিকে ফেনীতে অবরোধে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেটের গাড়িতে বোমা হামলা-ভাঙচুর, ম্যাজিস্ট্রেট আহত ও বিচারপতির বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৪৭ জনকে আটক করেছে। ফেনী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জিয়াউল হক জানান, অবরোধকারীরা শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেটের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করলে ম্যাজিস্ট্র্রেট আবদুল কাদির মিয়া ও ম্যাজিস্ট্র্রেট রাশেদুর রহমানের স্ত্রী সাঈদা আফরীন মুস্তারি আহত হয়। এ ঘটনায় গাড়ি চালক রিয়াদ বাদী হয়ে শনিবার দুপুরে ফেনী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অসংখ্য জনকে আসামি করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে বেশ কয়েকটি গাড়ির টায়ারে আগুন দিয়েছে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এতে ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে প্রায় একঘণ্টা যাত্রীবাহী বাসসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। গতকাল সকাল ৬ টার দিকে ৩টি টায়ারে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অবরোধ সমর্থনকারীরা।
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান, ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের ৪দিন পর পুলিশ ও বিজিবি পাহারায় কুড়িগ্রাম থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে কোচগুলোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। কুড়িগ্রাম-ঢাকাগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে শুক্রবার রাত ১০টায় কোচ ও মালবাহী ট্রাকসহ প্রায় শতাধিক গাড়ি প্রশাসনের উদ্যোগে বিশেষ পাহারায় কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে যায়। শনিবার সকালেও একইভাবে কুড়িগ্রাম থেকে দূরপাল্লার বেশ কয়েকটি যানবাহন  ছেড়ে যায় ঢাকার পথে।
স্টাফ রিপোর্টার, জামালপুর থেকে জানান, অবরোধের কারণে দূরপাল্লার কোন যানবাহন চলাচল করছে না। বিএনপি’র নেতাকর্মীরা অবরোধ চলাকালে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে মিছিল সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।
স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, অনির্দিষ্টকালের অবরোধে অচল মহানগরী খুলনা। অবরোধের কারণে খুলনা থেকে দূরপাল্লার কোন যানবাহন ছেড়ে যায়নি। তবে লঞ্চ ও ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে।  জোটের শ’ শ’ নেতাকর্মী সকাল থেকে রাজপথে সক্রিয় থেকে অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেছে। সকাল ১০টায় নগরীর কেডি ঘোষ রোডে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।  এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ সমর্থকদের নাশকতার প্রেক্ষিতে খুলনা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জিআরপি পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী এবং কর্মচারীরা দিনে ও রাতে রেললাইন পাহারা দিচ্ছেন। খুলনা স্টেশন থেকে যশোর ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে ৬৪ কিলোমিটারের। দুই সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের আওতায় রেলপথ পাহারার দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র ১১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কের ঢুলিপাড়া নামক স্থানে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ ২ শিবিরকর্মীকে আটক করেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। কুলাউড়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।
স্টাফ রিপোর্টার, হবিগঞ্জ থেকে জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে রাতের আঁধারে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে ২০ থেকে ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়াও শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় একটি বাসে করা হয়েছে অগ্নিসংযোগ। শুক্রবার রাত ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। সূত্র জানায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবল উপজেলার দিগাম্বর, পুঁটিজুরী, ডুবাঐ, চলিতাতলা, বাহুবল, দৌলতপুর, তগলী, বসিনা ও হাফিজপুর এলাকায় এসব গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। গাড়িগুলোর মধ্যে রয়েছে দূরপাল্লার বাস, মাইক্রোবাস ও মালবাহী ট্রাক। এদিকে, একই সময়ে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় একটি ওয়ার্কশপে দাঁড়ানো অবস্থায় একটি লোকাল বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এব্যাপারে হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার আফছার উদ্দিন বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও তার ধারণা এটি একটি দুর্ঘটনা। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, দুই/একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিওড়া এলাকায় শুক্রবার রাতে পণ্যবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতের ৬৭ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই শঙ্কর বাদী হয়ে গতকাল সকালে মামলাটি দায়ের করেন।
স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী থেকে জানান, গতকাল সকাল ৯টার দিকে নোয়াখালী শহরে জেলা ছাত্রদলের ঝটিকা মিছিল বের করে ছাত্রদলের  নেতাকর্মীরা। এদিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মোবাশ্বের আলী নাসিম (৩৫) সহ  বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে উপজেলার ১১ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে  মোবাশ্বের আলী নাসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে গতকাল রাতে মাইজদী বাজারে অবরোধ সমর্থনকারীরা ৫টি বাস, নতুন বাসস্ট্যান্ডে একটি মাইক্রোবাস, একটি পিকআপ ও দত্তেরহাটে ৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। অবরোধের কারণে নোয়াখালী থেকে দূরপাল্লার বাসসহ সকল যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, গতকাল পুলিশের গাড়িসহ ২৬ যানবাহন ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। পুলিশের দাবি ছাত্রশিবির এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মিঠাপুকুর থানা অফিস ইনচার্জ রবিউল হোসেন জানান, রংপুরের পুলিশ কর্মকর্তা গাড়ি নিয়ে এক নিমন্ত্রণে এসে ফেরার পথে মিঠাপুকুর টিএন্ডটি অফিসের সামনে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা হামলা চালায়। এদিকে স্থবির হয়ে পড়েছে রংপুরের জনজীবন। দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় তেল-ডাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য হু হু করে বেড়ে চলেছে। পাশাপাশি রংপুরের বাইরে যেতে না পারায় কপি, টমেটো, শিম, কাঁচা শাক-সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। এদিকে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক ও শিবির নেতাসহ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হলেন- উপজেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহ হাফিজুর রহমান ও শিবির নেতা এমদাদ হোসেন। তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পিরোজপুর প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুর সদর উপজেলার ভাইজোড়া এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ গতকাল দুপুরে পেট্রল বোমাসহ হাছিব, রবিউল ও আলী হাসান নামে তিন শিবিরকর্মীকে আটক করেছে। আটককৃতরা পিরোজপুরে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ফাউন্ডেশন পরিচালিত টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র। পিরোজপুর ডিবি পুলিশের এসআই তৌহিদুল ইসলাম জানান, আটককৃতরা ভাইজোড়া এলাকায় গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পেট্রল বোমা ছুড়ে আগুন দেয়ার চেষ্টা করছিল। খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ ও পিরোজপুর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে রবিউল ও আলী হাসানকে বড় ভাইজোড়া এলাকা থেকে এবং দুপুর আড়াইটার দিকে হাসিবকে ছোট ভাইজোড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। তাদের সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ থেকে তিনটি পেট্রল বোমা উদ্ধার করা হয়।
বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি জানান: বিয়ানীবাজারে পুলিশ-বিএনপি-ছাত্রলীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পৌরশহরে অন্তত ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৭ রাউন্ড গুলিবর্ষণ এবং সাইফুর রহমান (৩৭) নামের এক যুবদল নেতাকে আটক করেছে। বিকালে সিলেট জেলায় হরতালের সমর্থনে পৌরশহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্থানীয় বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠন। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পোস্ট অফিস মোড়ে আসামাত্র পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলে পুলিশ প্রথমে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে পুলিশ পিছু হটে। তারা দক্ষিণ বাজার এবং কলেজ রোডের মোড়ে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুলিশের সঙ্গে একত্র হয়ে ধাওয়া দিলে মিছিলকারীরা পিছু হটে। পুলিশি হামলায় তাদের ১৮ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে বিএনপি দাবি করে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুবের আহমদ জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৭ রাউন্ড গুলি ও ১৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, রাজশাহী মহানগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের ৪০ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজশাহী জেলার পাঁচ উপজেলায় ২৬ জন ও মহানগরীর চার উপজেলায় ১৪ জনকে আটক করেছে। শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় পাঁচটি উপজেলা থেকে ২৬ জনকে আটক করা হয়। এরমধ্যে বাগমারা উপজেলায় ৮ জন, পুঠিয়ায় ১০ জন, গোদাগাড়ীতে ২ জন, চারঘাটে ২ জন ও মোহনপুরে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সুনামগঞ্জে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে এ পর্যন্ত পুলিশ বাদী হয়ে ৪টি এসল্ট মামলা দায়ের করেছে। ওই ৪টি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৭ শতাধিক নেতাকর্মীকে। গ্রেপ্তার এড়াতে ২০দলীয় জোটের নেতারা কার্যত আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে গেছে। বাড়ি ছাড়া অবস্থায় থাকলেও অজ্ঞাত স্থান থেকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে নেতাকর্মীরা। বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হঠাৎ করেই বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আবারও অজ্ঞাতস্থানে চলে যায় নেতাকর্মীরা। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় দু’টি ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় দু’টি মামলায় বিএনপির ১৭৪ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫১০ জনকে আসামি করে ওই ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম রাজুসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

No comments

Powered by Blogger.