চট্টগ্রামে নাশকতার আশঙ্কায় রাতের ট্রেনের গতি কম

দেশব্যাপী হরতাল, অবরোধে রেলপথে নাশকতার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাতের ট্রেনের গতি কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে দিনের বেলায় ট্রেনের গতি স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে রেলপথে জরুরি টহল দেয়ার জন্য যুক্ত করা হয়েছে অ্যাডভান্স পাইলট ট্রেন (এপিটি)। অতীতের নথি ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৩ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের দুই সপ্তাহের টানা অবরোধে ৩১৮টি নাশকতার ঘটনা ঘটে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত চলাচলকারী সব ক’টি ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার। তবে দিনে স্বাভাবিক গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭২ কিলোমিটার বহাল থাকছে। রাতের তূর্ণা নিশীথা চলাচলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৭২ কিলোমিটার। তবে নির্ধারিত গতির সময়সীমা হচ্ছে ৭০ কিলোমিটার। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে পাওয়া গেছে এমনি তথ্য। এদিকে রেললাইন কেটে ফেলার ঘটনায় চট্টগ্রাম স্টেশনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে হাজার হাজার যাত্রীকে। এ সময় তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। রেল চলাচল স্বাভাবিক হলেও যাত্রীদের মনে কাটেনি শঙ্কা। গতকাল সকালে সরজমিনে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল স্টেশনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। এ সময় বাড়ি ফিরতে না পেরে অনেকে হতাশা ব্যক্ত করেন। রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার অবরোধে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে আউটার রেললাইন কেটে ফেলে কে বা কারা। এতে বিপাকে পড়ে যান ঢাকামুখী শ’ শ’ যাত্রী। বিপর্যয় দেখা দেয় ট্রেনের শিডিউলেও। পেছানো হয় দুটি ট্রেনের যাত্রা।
গতকাল ভোর পৌনে ৫টায় নাঙ্গলকোট রেলস্টেশনের পাশে ঘটনাটি ঘটে। সেখানে তিন ফুটের মতো আউটার রেললাইন কেটে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এতে মুহূর্তেই বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম-সিলেটের সব রেল যোগাযোগ। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে মহানগর প্রভাতীর যাত্রা বাতিল করে। সকাল ৭টায় প্রভাতী এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। অন্যদিকে চট্টলা এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে। দুটি ট্রেনেরই যাত্রীরা নির্দিষ্ট সময়ে যেতে না পেরে হতাশা প্রকাশ করেছেন। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ মানবজমিনকে বলেন, রেললাইন কেটে ফেলায় আসলে এমনটি হয়েছে। তবে আমরা রেল চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। ঘটনার পরপরই ঢাকা থেকে আসা গোধূলির ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। ফলে চট্টগ্রামের শিডিউল বিপর্যয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের একটি সূত্র জানায়, গতকাল সকাল ১০টায় দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে চট্টলা এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম ছেড়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে সকালে ঢাকাগামী ‘মহানগর প্রভাতী’ স্টেশন ছেড়ে যায়। যা পরে ঢাকায় গিয়ে বিকালে ‘মহানগর গোধূলি’ হয়ে আবার চট্টগ্রামে ফেরে। দুর্ঘটনার কারণে ঢাকাগামী ‘মহানগর প্রভাতী’ ট্রেনের যাত্রা বাতিল হওয়ায় চট্টগ্রামগামী ‘মহানগর গোধূলি’ ট্রেনের যাত্রাও বাতিল হয়। রেললাইন মেরামত ও উদ্ধারকাজ শেষে বেলা পৌনে ১১টায় রেল চলাচল আবার শুরু হয় বলে মানবজমিনকে জানান স্টেশন ম্যানেজার।

No comments

Powered by Blogger.