জাসাস(মহানগর দক্ষিণ) সহ-সভাপতির পদ ছাড়লেন ন্যান্সি by ফয়সাল রাব্বিকীন

দেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনির ন্যান্সি জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এর সহ-সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। বিষয়টি প্রথমে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসের মধ্যে দিয়ে সবাইকে জানান। এদিকে পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও বিএনপি রাজনীতি থেকে সরে দাড়াননি বলে মানবজমিনকে জানান তিনি। পদের বাইরে থেকে বিএনপির সঙ্গে সব সময় যুক্ত থাকবেন ন্যান্সি। এর আগে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখ তিনি জাসাস (মহানগর দক্ষিন) এর সহ-সভাপতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন। আজ নিজের ফেসবুক পেজে পদ থেকে সরে এসে বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে সব সময় থাকার কারণ ব্যাখ্যা করেন ন্যান্সি। তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন-

একজন মানুষের জ্ঞান মাপার জন্য যেমন তার সার্টিফিকেট জরুরি নয়, ঠিক তেমনি মন থেকে একনিষ্ঠভাবে রাজনীতি করার জন্যও পদ কোনো জরুরী বিষয় নয়৷
আজ বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে শুধু পদের ধ্বনি শুনা যাচ্ছে!!
কেমন??!!
তা আমাকে হয়তো আর বিস্তারিত বলতে হবেনা৷ কারণ পত্র পত্রিকা আর সোস্যাল মিডিয়ার কল্যানে সবাই তা দেখতে পাচ্ছেন৷ আর এটিও হয়তো দেখতে পেয়েছেন যে যারা পদ পদ করে রাস্তায় হাত উচু করে চিৎকার করছে তারা কারা?
দুদিন আগেই ফেসবুকে দেখলাম একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিএনপির আন্দোলনের ভেতর আওয়ামীলীগের কর্মী!! তাহলে বুঝুন অবস্থা আসলে কারা করছে পদের জন্য আন্দোলন?? হ্যাঁ আমি বলছিনা যে সেখানে বিএনপির কর্মী নেই বা পদের জন্য আন্দোলন করছে না৷ আন্দোলন হচ্ছে, তবে তা প্রকৃতপক্ষে দলকে সমালোচিত করার জন্য একটি মহলের উস্কানিতে হচ্ছে বলেই আমি মনে করি৷
পদের জন্য আন্দোলন আর লেজে ধরার ঘটনা আজ নতুন নয়৷ আর শুধু যে বিএনপিতেই পদ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে তা কিন্তু নয়৷ মনে আছে, ৭৫ এ ট্যাংকের উপর উঠে যারা নেচেছিল আর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল তারা কিভাবে পরবর্তিতে শুধু পদ নয় মন্ত্রিত্বও পেয়েছে৷
৮১ তে নেত্রীর হাতে পায়ে তৈল মালিশ করে কিভাবে দলে জায়গা করে নিয়েছিলো আজকের তথাকথিত জনৈক মন্ত্রী৷ আবার কোন দলের নেতা ২০০১ এ নিজের দল থেকে নমিনেশন না পেয়ে দুঃখে কষ্টে দল ত্যাগ করে বেগম জিয়ার হাতে পায়ে ধরেছিলো বিএনপিতে জায়গা করে নেওয়ার জন্য৷ আর পদ/মন্ত্রিত্ব পাবার জন্য কে কার হাতে পায়ে ধরেছে সেটিও মানুষ ভুলে যায়নি৷ সুতরাং এটি নিয়ে এত আহামরি করার কিছুই নেই৷
ভাবছেন পদ নিয়ে হঠাৎ কেন আমি এত কথা বলছি??
আপনারা জানেন গত ১১/০৯/২০১৪ আমি জাসাস মহানগর দক্ষিন এর সহ সভাপতি হবার মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে  যোগ দেই৷ তারপর থেকেই একটি মহল এই ব্যাপারটি নিয়ে অনেক উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন৷ অনেক আওয়ামী নেতা কর্মীকে দেখেছি তারা বলেছে আমি পদের জন্যই বিএনপিতে যোগ দিয়েছি৷ অনেক আপত্তিকর মন্তব্যও করেছে অনেকে৷
আবার কিছু কিছু অনলাইন হলুদ মিডিয়াকে দেখেছি আমার পদ পাওয়া এবং রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে এমন অনেক ভিত্তিহীন খবর তারা রসালো হেডলাইন দিয়ে প্রচার করেছে৷ যার কোনো সঠিক তথ্য আদৌ তাদের কাছে নেই এবং তারা দিতে পারবে না৷ তাদের উদ্দেশ্য হলো আমার নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে আমাকে এবং তার সাথে দলকে সমালোচনায় জড়ানো৷ এটি ছাড়া আর কিছুই নয়৷
তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই- রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান হবার পর থেকেই আমি বিএনপির রাজনীতি করি৷ বাংলাদেশে ধানের শীষে ভোট  দেওয়া যত ভোটার আছে তারাও আমার মতই বিএনপি করে৷ তাদের  যেমন রাজনীতি করার ক্ষেত্রে বা ধানের শীষে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে  কোনো ধরনের সাংগঠনিক পদের দরকার হয়নি/নেই, ঠিক তেমনি আমিও মনে করি আমারও রাজনীতি করার জন্য কোনো ধরনের পদের দরকার নেই৷
আমার যে পদের লোভ বা প্রয়োজনন নেই তার একটি প্রমান হলো, আজ (২১/১০/২০১৪) আমি আমার যে বর্তমান পদটি ছিলো সেটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছি৷ অর্থাৎ এই মুহুর্তে আমি আর জাসাসের ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সহ সভাপতি পদে নেই৷
কিন্তু হ্যাঁ.....পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছি তাই বলে এটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই যে আমি রাজনীতি বা বিএনপি থেকে সরে দাঁড়িয়েছি৷ আমি বিএনপির রাজনীতি অতীতে করে এসেছি, এখনো মনে প্রাণে করি এবং আমি ব্যাক্তি ন্যান্সিকে আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখবে ততদিন-ই আমি বিএনপির রাজনীতি করবো৷
যারা বলেন বিএনপিতে কর্মীরা পদের জন্য রাজনীতি করে তাদের বলছি, চিলে কান নিয়ে গেছে টাইপের মিথ্যা সমালোচনায় অযথা সময় নষ্ট না করে দেশ এবং দশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন৷ এতে নিজের যেমন ভালো হবে তেমনি দেশের কিছুটা হলেও মঙ্গল হবে৷
সবাইকে ধন্যবাদ।
এদিকে মুঠোফোনে মানবজমিনকে ন্যান্সি জানান, আমি আসলে কখনই পদ পাবার জন্য বিএনপি করিনি। কিন্তু এখন অনেকেই সেরকম কথা বলে বেড়াচ্ছে। দলের পদে না থেকেও কিভাবে সাপোর্ট দেয়া যায় সেটাই আমি প্রমাণ করতে চাই। বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে সব সময় ছিলাম, এখনও আছি। সারাজীবন থাকবো।

No comments

Powered by Blogger.