‘চলে যাচ্ছি নেটওয়ার্কের বাইরে’ -আত্মহত্যার আগে তারেক

শমসেরনগর বিএএফ শাহীন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র তারেক হোসেন খানের আত্মহত্যার পর শিক্ষকদের এক মন্তব্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা গতকাল সকালে ক্লাস বর্জন করে কলেজের সামনে অবস্থান করেন। পরে কর্তৃপক্ষ তারেকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে দোয়া করার প্রতিশ্রুতি দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়। রোববার রাতে বিমানবাহিনীর শমসেরনগর ইউনিটের আবাসিক কোয়ার্টারে আত্মহত্যা করে কলেজছাত্র তারেক। পরদিন সকালে বিএএফ শাহীন কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের দাবি জানান। কিন্তু কলেজের শিক্ষকরা শোক প্রস্তাব না করে মাইকে ঘোষণা করেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। তারেক যেভাবে আত্মহত্যা করেছে তাতে তারা অনুতপ্ত নন। এ মৃত্যু কুকুরের মৃত্যুর সমান। এমন মন্তব্যে তারেকের সহপাঠীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল সকালে কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে। দীর্ঘ প্রায় এক ঘণ্টা কলেজের সামনে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেয়। কমলগঞ্জের শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পুলিশ পরিদর্শক মতিউর রহমান জানান, পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে লাশের ময়না তদন্ত না করেই লাশ দাফন করা হয়। তবে কি কারণে তারেক আত্মহত্যা করেছে তার কোন কারণ জানতে পারেনি পুলিশ। তবে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে শাহীন কলেজের টেস্ট পরীক্ষায় ডাবল জিরো পাওয়াকে দায়ী করা হচ্ছে। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে নানা কথাবার্তা বলার পাশাপাশি কলেজের শিক্ষকদের প্রচণ্ড চাপ ও ফেল করলে উত্তীর্ণ না করানোর মতো লিখিত নেয়া- সব মিলিয়ে তার আত্মহত্যার কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন তার সহপাঠীসহ অভিভাবকরা। তবে এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি বিএএফ শাহীন কলেজের দায়িত্বশীল কেউ। তারেকের পরিবারের কোন সদস্যও এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। আত্মহত্যার আগে তারেকের ফেসবুকে স্ট্যাটাসের এক স্থানে লিখেছিল, যে ফিলিংসে দিয়েছিল কনফিডেন্ট এবং শেষ বাক্যটা ছিল ‘খোদা হাফেজ’। একদম ‘চলে যাচ্ছি নেটওয়ার্কের বাইরে’। এ কথাগুলো জানায় তারেকের এক সহপাঠী।

No comments

Powered by Blogger.