শিক্ষক আন্দোলন এবং অর্জনের প্রত্যাশা by অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলনে আছেন। দীর্ঘদিন ধরে এমপিও বঞ্চিত শিক্ষকরাও সরকারী কোষাগার থেকে প্রতিমাসে বেতন ভাতা (এমপিও) প্রাপ্তির দাবিতে এখন আন্দোলনে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনও ইতোমধ্যে আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করেছেন।


সেপ্টেম্বর জুড়ে তা অব্যাহত থাকবে মনে করার কারণ রয়েছে। অবশ্য সরকার যদি শিক্ষকদের প্রত্যাশা পূরণে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় তাহলে ভিন্ন কথা। কিন্তু সিদ্ধান্তহীনতা ও সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিতে অক্ষমতা কম বেশি সব সরকারের আমলের সাধারণ বৈশিষ্ট্য বিবেচনা করলে, সরকারের দিক থেকে এ ধরনের কোন কার্যক্রম হবে ব্যতিক্রমী ঘটনা। যতদূর মনে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনের শুরু বুয়েট থেকে। তারপর জাহাঙ্গীরনগর ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে। সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন প্রশমিত করতে উদ্যোগ নিলেও মাধ্যমিক ও কলেজ শিক্ষকদের আন্দোলন এখন পর্যন্ত মনে হয় তাদের পর্যবেক্ষণে আছে। তার বেশি কিছু নয়। এ কথা যথার্থ যে, প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষকরা আন্দোলনে থাকলেও সকলের অবস্থান ও লক্ষ্য এক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলনে আদর্শিক অথবা রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য মুখ্য। শিক্ষার্থীদের পাঠদান উন্নয়ন, নিজেদের গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এমনকি আবাসন সুবিধার অপর্যাপ্ততার বিষয় সেখানে অন্তর্ভুক্ত নয়। হয়তো এ মুহূর্তের অগ্রাধিকার বিবেচনায় তাদের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক ও প্রাথমিক পরবর্তী শিক্ষকদের আন্দোলনের চরিত্র ভিন্ন। যার প্রায় শতভাগ জুড়ে আছে পেশাগত দাবি। একেক স্তরের শিক্ষকদের এক এক ধরনের দাবি। ক্ষেত্র বিশেষে যেখানে স্তর এক হলেও সংগঠন একাধিক, সেখানে দাবির সংখ্যা, বিষয় ও অগ্রাধিকারে পার্থক্য রয়েছে। তবে বৈশিষ্ট্যগতভাবে সবার প্রত্যাশা পেশাকে ঘিরে। আন্তর্জাতিক শিক্ষক আন্দোলনে শিক্ষা উন্নয়নের বিষয়টি প্রায় আবশ্যিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হলেও, বাংলাদেশের শিক্ষক আন্দোলনে তা এখন পর্যন্ত একটি ক্ষীণ ধারা। এই লেখায় চলমান শিক্ষক আন্দোলনে বিশেষ করে এমপিওভুক্ত ও এমপিও’র জন্য অপেক্ষমাণ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের প্রত্যাশার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত শিক্ষক আন্দোলনের সীমিত পরিধি বা বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার দিকটিও তুলে ধরতে চেষ্টা করা হয়েছে। চার দশকের বেশি শিক্ষক আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার পর সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন থেকে এখন আমার বিদায় নেয়ার সময়। তাই বিনীতভাবে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শিক্ষক নেতৃত্বের ভাবনা ও বিবেচনার জন্য কিছু বিষয় উপস্থাপন সঙ্গত মনে করছি।

শিক্ষকদের মূল দাবি ও অন্তর্বর্তী প্রত্যাশা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের নীতিমালা চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকায় বেসরকারী প্রাথমিক শিক্ষকরা এখন মোটামুটি স্বস্তিতে আছেন। তবে প্রাথমিক পরবর্তী বেসরকারী স্কুল, কলেজ, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের মাত্রা বেশি। তিন দশকের বেশি সময় ধরে বেসরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের মূল দাবি শিক্ষা জাতীয়করণ। শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক পরিবর্তনের সঙ্গে এ দাবিটি সাযুজ্যপূর্ণ। কিন্তু অধিকাংশ সময় আংশিক দাবিগুলো বাস্তব কারণে প্রাধান্য পেয়েছে। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থায় এটা স্বাভাবিক। এ পরিস্থিতিতে কেউ কেউ চাকরি জাতীয়করণের দাবির কথাও বলছেন। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারী রেখে শিক্ষকের চাকরি সরকারী করা কতটা বাস্তবসম্মত তা নিয়ে অনেকের সংশয় আছে। কর্মচারীদের কি হবে তারও কোন ব্যাখ্যা নেই। আমি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের পক্ষে। ইউনেস্কো-আইএলও সুপারিশকৃত শিক্ষকদের মর্যাদা সনদেও শিক্ষাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। আসলে রাষ্ট্র যে জনগণকে নিয়ে গঠিত, সে জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের ন্যায্য শিক্ষা-স্বার্থের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থেকে শুরু করে প্রাপ্য অধিকারগুলো নিশ্চিত করা দরকার। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টোটা হয়ে আসছে। চাকরি জাতীয়করণ, শিক্ষা জাতীয়করণ, শিক্ষা নিয়ে দলীয় রাজনীতি এ দেশে দীর্ঘদিনের একটি অনভিপ্রেত প্রবণতা। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকারের আমলে ঘোষণা ছিল, ১৯৮৫ সালের মধ্যে কলেজ শিক্ষা জাতীয়করণ হয়ে যাবে। বেগম খালেদা জিয়াও ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। কিন্তু নির্বাচন পরবর্তীতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে তার সরকার সে জন্য কিছু করেননি। এবারও তিনি ক্ষমতায় যেতে পারলে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস নয় তার বাস্তবায়নই যে আসল কথা, যুগযুগ ধরে বঞ্চিত শিক্ষক সমাজ তা জীবন দিয়ে অনুভব করলেও আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনেকের ধারণায় তা স্পষ্ট নয়। সে জন্য প্রতিশ্রুতি প্রদানকারী কে কোন দলের বা কে কোন মতের, একজন পেশাজীবী শিক্ষকের কাছে তা বিবেচ্য নয়। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী সে যে দলেরই হোক শিক্ষক সমাজের কাছে আদৃত হতে পারে না।
প্রাথমিক পরবর্তী শিক্ষকদের দুটি প্রধান জোট, জাতীয় শিক্ষক কর্মচারী ফ্রন্ট ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। তাদের প্রতিনিধিরা ১০ জুন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিন্ন প্রত্যাশা তুলে ধরেন। তার মধ্যে ছিল : শিক্ষানীতি ২০১০-এর আলোকে স্থায়ী শিক্ষা কমিশন ও বেসরকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্বতন্ত্র কমিশন গঠন এবং সর্বস্তরের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তন। ১৯৯১-এর পরিবর্তে বর্তমান জাতীয় স্কেলে এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতা, বার্ষিক প্রবৃদ্ধি প্রদান। ১০০ টাকা বাড়ি ভাড়ার পরিবর্তে সরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুরূপ বাড়ি ভাড়া অথবা আবাসন সুবিধা প্রবর্তন। প্রচলিত খণ্ডিতের পরিবর্তে সরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের অনুরূপ পূর্ণ উৎসব ভাতা ও পূর্ণ পেনশন, পদোন্নতি, টাইম স্কেল চালু। যোগ্যতার সকল শর্ত পূরণ করেও বছরের পর বছর এমপিও বঞ্চিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের নতুন এমপিও, অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানকারী বেসরকারী কলেজের শিক্ষক ও ডিগ্রী কলেজে তৃতীয় শিক্ষকদের জন্য এমপিও। প্রতিষ্ঠানের স্তর পরিবর্তন সংক্রান্ত কোড সংশোধন না হওয়ার অজুহাতে শিক্ষক-কর্মচারীদের বন্ধকৃত বেতন অবিলম্বে চালু। মাধ্যমিক স্তরে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ ও বেসরকারী প্রধান শিক্ষকদের জন্য সরকারী প্রধান শিক্ষকদের অনুরূপ বেতন স্কেল প্রবর্তন। পার্বত্য এলাকায় কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ৩০% পাহাড়ী ভাতা চালু। বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরের বয়স ৬৫ বছরে উন্নীতকরণ, শিক্ষকদের চাকরিবিধি সংশোধন ও কর্মচারীদের চাকরিবিধি প্রবর্তন। শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট বৈঠকে শিক্ষার উন্নয়নেও প্রস্তাব রাখে। যেমন প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, মূলধারার পাঠ্যপুস্তকগুলোকে ব্রেইলে রূপান্তর, শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম ও শিক্ষকদের শিক্ষণক্রম প্রণয়ন, প্রাক-পেশা ও পেশাকালীন অব্যাহত প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পর্যায়ক্রমে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা কমিটির নারী সদস্যের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুর বেলা রান্না করা গরম খাবারের ব্যবস্থা, শিক্ষা খাতে অভিভাবকদের ব্যয় কমাতে খাতা, পেন্সিল, শিক্ষা উপকরণ বাবদ ব্যয় হ্রাসের প্রস্তাব। ওই বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী সামর্থ্য অনুযায়ী যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণের সদিচ্ছা ব্যক্ত করলেও শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে কোন অগ্রগতি হয়নি। এটাই বেসরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনের প্রধান কারণ। যেসব দাবির পেছনে কোন আর্থিক সংশ্লেষ নেই তা পূরণ না করাতেও সমস্যা আরও জটিল ও দাবির তালিকা দীর্ঘতর হয়। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মীদের চাকরিবিধি প্রদানে সরকারের একটি পয়সাও ব্যয় হওয়ার কথা নয়। তারপরও ১৯৯৪ সন থেকে আজ পর্যন্ত তা ঝুলে আছে। বেসরকারী ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষগণ সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ/অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপকের স্কেলে মূল বেতন পেয়ে থাকেন। বেসরকারী কলেজে সহকারী অধ্যাপকের উপরে কোন পদ নেই। অথচ এসব কলেজের এমপিওভুক্ত অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষদের পদ অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলে তাতে সরকারের কোন অর্থ ব্যয়ের প্রশ্ন নেই।

স্ববিরোধিতা ও সীমাবদ্ধতার প্রসঙ্গ
কেউ কেউ শিক্ষকদের আন্দোলনে স্ববিরোধিতার প্রশ্ন তুলে থাকেন। যেমন শিক্ষকরা যতটা অধিকার সচেতন ততটা সংগঠন সচেতন নন। আবার নেতৃত্বের কোন কোন অংশের মধ্যে দাবি আদায় নিশ্চিত করতে জোট বাঁধার প্রবণতা যেমন আছে, নেতা হওয়ার সুযোগ সন্ধানে একাধিক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে, ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধারের অভিযোগও আছে। অন্যদিকে সব প্রাপ্তি যে এক সঙ্গে সম্ভব নয় তৃণমূলের শিক্ষক-কর্মচারীদের এ উপলব্ধি থাকলেও আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের একটি অংশ এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকেন বলেও অভিমত রয়েছে। সরকারের সঙ্গে বৈঠকে যথাযথ তথ্য পরিসংখ্যান উপস্থাপনে ব্যর্থতা অথবা অসক্ষমতার কথাও বলা হয়ে থাকে। নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ ও নেতৃত্বদানে একাডেমিক ও সংগঠনিক যোগ্যতার প্রশ্নও তোলা হয়। বলা হয়, সে জন্য গৎবাঁধা ছকে শিক্ষক আন্দোলন কয়েক দশক ধরে একইভাবে ঘুরে-ফিরে আসছে। এর বিপরীতে পেশাগত প্রত্যাশা পূরণকে রাজনৈতিক বিবেচনার উর্ধে স্থান দেয়া ও আন্দোলনের কর্মসূচীতে সৃজনশীলতা সংযোজন, সেই সঙ্গে শিক্ষানুরাগী সম্প্রদায় ও অভিভাবকদের আনুকূল্য অর্জনের লক্ষ্যে আন্দোলনের কর্মসূচীতে শিক্ষার্থীর স্বার্থ ও শিক্ষার উন্নয়নকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হলেও এখন পর্যন্ত এ ধারাটি ক্ষীণ ও স্বল্প সংখ্যকের ধারণার মধ্যে সীমিত মনে করা হয়।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রত্যাশা
আন্দোলনরত শিক্ষকদের অধিকাংশের ধারণা, আন্দোলন যথাযথভাবে পরিচালনা করা গেলে উল্লেখযোগ্য অর্জন সম্ভব হবে। অতীতের চেয়ে বর্তমান সরকারের শিক্ষার প্রতি বেশি সংবেদনশীলতা, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনোভাব ও আন্তরিকতা এক্ষেত্রে একটি ফ্যাক্টর বলে অনেকে মনে করেন। তারা উল্লেখ করেন, এমনকি বিএনপি আমলের শিক্ষামন্ত্রী ওসমান ফারুক খবরের কাগজে প্রবন্ধ লিখে এবং ড. মনিরুজ্জামান মিয়া টেলিভিশনের টকশোতে শিক্ষানীতির ইতিবাচক দিকগুলো মেনে নিয়েছেন। যদিও বর্তমান সরকারের বাস্তবায়ন সক্ষমতা নিয়ে তাদের প্রশ্ন আছে। তবে এ প্রশ্ন শুধু তাদের নয়। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের ধীরগতি নিয়ে অনেকেরই ক্ষোভ আছে। চলমান শিক্ষক আন্দোলনেরও দাবি, শিক্ষানীতির দ্রুত বাস্তবায়ন। কারণ, শিক্ষানীতি ২০১০-এ সর্বস্তর ও পর্যায়ের শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের লালিত অনেক প্রত্যাশাই অন্তর্ভুক্ত। এ প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা বলা হলেও বাংলাদেশের শিক্ষক আন্দোলন নতুন ভাবনা ও বিশ্বজনীনতাকে ধারণ করে কাক্সিক্ষত পথ রচনায় সক্ষম হবেÑএ বিশ্বাস আমার রয়েছে। কারণ স্থবিরতা নয়, অগ্রসরমানতাই সমাজ প্রগতির চালিকাশক্তি। প্রতিক্রিয়া, রক্ষণশীলতা ও প্রতিবন্ধকতার ব্যূহ ভেদ করে আন্দোলনের গতিধারা যুক্তিসঙ্গত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবেÑএ দৃঢ় প্রত্যয় আমার রয়েছে। তারপরও বলব, সরকারের দিক থেকে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের ন্যায্য দাবিগুলো পর্যায়ক্রমিকতা অতিক্রম করে আন্দোলন প্রচলিত শব্দ চয়নে, তুঙ্গে পৌঁছানোর পূর্বেই মেনে নেয়া হলে তা হবে সবচেয়ে কাক্সিক্ষত।
লেখক : শিক্ষক নেতা

No comments

Powered by Blogger.