মাটিতে ম্যানইউ-সিটি

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ—ঘরোয়া লিগে উড়ছে চারটি দলই। পরশু চ্যাম্পিয়নস লিগে মাটিতে নেমে এসেছে এর দুটি—ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দুই প্রতিবেশী ম্যানইউ ও ম্যান সিটি। ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। তবে নয়বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল ও চারবারের শিরোপাজয়ী বায়ার্ন মাঠ ছেড়েছে জয় নিয়ে। অঘটনের শিকার ২০১০ সালের চ্যাম্পিয়ন ইন্টার মিলান। নিজেদের মাঠে ইন্টারকে ১-০ গোলে হারিয়েছে অখ্যাত ত্রাবজনস্পর।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে চার ম্যাচে চারটি জয়, প্রতিপক্ষের জালে ১৮ গোল দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। সমান ম্যাচে চারটি জয়ে ম্যানচেস্টার সিটি দ্বিতীয় স্থানে। চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে অবশ্য একবিন্দুতে মিলে গেছে ম্যানচেস্টার শহরের ‘বড় ও ছোট ভাই’। ঘরোয়া ফুটবলে উড়তে থাকা ম্যানইউ বেনফিকার মাঠ থেকে ১-১ গোলে ড্র করে ফিরেছে ভাগ্যগুণে। প্রথমার্ধে সামান্য কিছু সময় বাদ দিলে পুরো ম্যাচেই ছড়ি ঘুরিয়েছে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকা। অসাধারণ পাসিং ফুটবলে তারা দিশেহারা করে ছেড়েছিল ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের।
প্যারাগুয়ের স্ট্রাইকার অস্কার কার্ডোজোর গোলে ২৩ মিনিটে এগিয়ে যায় বেনফিকা। ২০১০ সালের মার্চের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এই প্রথম প্রতিপক্ষের মাঠে গোল খাওয়া ম্যানইউকে বাঁচিয়েছে ৪১ মিনিটে দেওয়া ‘বুড়ো’ সৈনিক রায়ান গিগসের গোল। শেষ ১৫ মিনিটে চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষিক্ত ম্যানইউর ২৭ বছর বয়সী গোলরক্ষক আন্দ্রেস লিন্ডেগার্ড করেছেন দুর্দান্ত কিছু সেভ।
ম্যাচ শেষে ম্যানইউ কোচ ফার্গুসন ফেলেছেন স্বস্তির নিঃশ্বাস, ‘শেষ ১৫ মিনিটে বেনফিকা অসাধারণ কিছু সুযোগ পেয়েছে। একটা তো গোল হওয়ার মতোই ছিল, আন্দ্রেস দারুণ সেভ করেছে।’ বেনফিকা কোচ হোর্হে জেসুসের মুখে গর্বের হাসি, ‘আমার মনে হয়, ফলটা ঠিকই আছে, তবে আমরাই ভালো খেলেছি।’
চ্যাম্পিয়নস লিগে দুই দলেরই অভিষেক ম্যাচে নাপোলির বিপক্ষে ম্যান সিটিই ছিল ফেবারিট। কিন্তু নিজেদের মাঠে ১-১ গোলে ড্রতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো সিটিকে। ঘরোয়া লিগে অসাধারণ খেলা ম্যারাডোনার জামাইয়ের দল হারতেও পারত! ৬৪ মিনিটে কাভানির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ম্যারাডোনার স্মৃতিধন্য নাপোলি। ৭৪ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে গোলটি শোধ করেন কোলারভ।
সিটির খেলায় লিগের ছন্দ কেন থাকল না? কোচ রবার্তো মানচিনির বিশ্লেষণ, ‘ম্যাচের আগে আমরা খুব নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। কারণ, এটা আমাদের প্রথম ম্যাচ। সবাই ভালো খেলতে চেয়েছে, চেয়েছে গোল করতে। সবাই সহজাত খেলাটা খেলতে পারলে আরও ভালো করতে পারতাম আমরা। যা-ই হোক, নাপোলির বিপক্ষে এটাও ভালো ফল।’
পরশু আট ম্যাচের খেলায় সবচেয়ে ভালো করেছে বায়ার্ন। সিটির পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়ালকে ‘জার্মান দৈত্যরা’ হারিয়েছে ২-০ গোলে। স্কোরলাইন এ ম্যাচের আসল ছবিটা বলতে পারে না। রক্ষণভাগ, মাঝমাঠ, আক্রমণভাগ—সব বিভাগেই ভিয়ারিয়ালের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল বায়ার্ন।
ছয় মিনিটে টনি ক্রুসের গোলে এগিয়ে যাওয়া বায়ার্ন পরে হয়ে ওঠে দুর্বার। যদিও বদলি খেলোয়াড় রাফিনহা তাদের দ্বিতীয় গোলটি এনে দেন শেষের ১৫ মিনিট আগে। এই দুই গোলের মাঝে কম করে হলেও গোটা দশেক গোলের সুযোগ পেয়েছে বায়ার্ন। তবে তা নিয়ে আক্ষেপ নেই কোচ ইয়াপ হেইঙ্কসের, ‘আমরা আনন্দই করতে পারি।’
ডি মারিয়ার ৫২ মিনিটের গোলে ডায়নামো জাগরেবকে হারিয়েও খুব আনন্দ করতে পারছে না রিয়াল মাদ্রিদ। ডি মারিয়ার গোলের জোগানদাতা মার্সেলোকে যে পরের ম্যাচে পাবেন না হোসে মরিনহো। তিন মিনিটের মধ্যে (৭০ ও ৭৩) দুই হলুদ কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ব্রাজিলিয়ান ফুলব্যাককে।
১৯৯৯ সালের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে আসা ডায়নামোর বিপক্ষে ছড়ি ঘোরাতে পারেনি রিয়াল! ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাছে অবশ্য জয়টাই বড়, ‘আমরা জয়েই খুশি।

No comments

Powered by Blogger.