নিরাপত্তার পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন মনমোহন

ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। রাজধানী নয়াদিলি্লতে জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের সমাবেশে তিনি বলেন, 'দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দিন দিন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।' এর আগের দিনই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে (আইএম) আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সংগঠনটি সম্প্রতি মুম্বাই ও দিলি্লতে বোমা হামলার দায় স্বীকার করে। পাকিস্তান-সংশ্লিষ্ট আইএম আগেও ভারতের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে বলে অতীতে দাবি করেছে।
মনমোহন সিং বলেছেন, দিলি্ল ও মুম্বাইয়ে সাম্প্রতিক হামলাকে 'সন্ত্রাসের ভয়াবহ হুমকির সতর্ক সংকেত হিসেবে' দেখতে হবে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ওপরও জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের তথ্য ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থা পুলিশের কাজেরই একটি অংশ। তবে এটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঢিলেঢালাভাবে সারা হচ্ছে অথবা একেবারেই হচ্ছে না।

ভারতের মাওবাদী আন্দোলনও একটি হুমকি হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন মনমোহন। তিনি সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্য পর্যায়ে ব্যাপক আকারের সমন্বিত প্রচেষ্টা হাতে নেওয়ার তাগিদ দেন। অতীতে মনমোহন মাওবাদী সংকটকে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক নম্বর সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে কালো তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয় জানায়, আইএমের সঙ্গে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি), জয়েশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) ও হরকাতুল জিহাদ-ই-ইসলামির (হুজি) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামী শাসন চালুই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এ লক্ষ্যেই তারা অমুসলিমদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলাতেও তাদের সহযোগিতা ছিল। এলইটি পরিচালিত ওই হামলায় ছয় মার্কিনীসহ ১৬৩ জন নিহত হয়। অর্থাৎ পশ্চিমা স্বার্থের পাশাপাশি ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও আইএম হুমকিস্বরূপ। বিবৃতিতে ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসরোধবিষয়ক সমন্বয়কারী কর্মকর্তা ডেনিয়েল বেঞ্জামিন বলেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া সন্ত্রাসী তৎপরতায় সহায়তা বন্ধ ও সংগঠনগুলোকে সন্ত্রাস ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারেও চাপের মধ্যে রাখবে। এ তালিকাভুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে আইএমের সব সম্পদও জব্দ করা হয়েছে। বিচার ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শক্রমেই এ পদক্ষেপ নিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

No comments

Powered by Blogger.