শ্রীলঙ্কাকে অস্ট্রেলিয়ার উপহার

শিরোনামটা উল্টোও হতে পারত। টস জয়ের পর তিলকারত্নে দিলশানের ফিল্ডিং নেওয়াটাকে যে তেমনই মনে হয়েছিল। ব্যাটিং-স্বর্গ হিসেবে পরিচিত সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতলে ব্যাটিং নেওয়া নিয়মই বলা যায়। অথচ দিলশান নিস্পৃহ কণ্ঠে জানালেন, ‘আমরা ফিল্ডিং করব!’ দিলশানের যুক্তি, আগের কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উইকেটে আর্দ্রতা ছিল। আসলেই ছিল কি না, শ্রীলঙ্কান পেসাররা তা বোঝার কোনো উপায় রাখেননি।
জায়গামতো বল রাখতে না পারলে উইকেটে আর্দ্রতা থাকলেই কি আর না থাকলেই বা কি! তার পরও প্রথম দুই সেশনে দুটি করে উইকেট এল, শেষ সেশনে একটি। কীভাবে? দিলশানের ‘উপহার’ পেয়ে কৃতজ্ঞতায় কিছু একটা ফেরত দেওয়াও যেন দায়িত্ব মনে করলেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা। অফ স্টাম্পের বাইরের নিরীহ বলে উইকেট উপহার দিয়ে এলেন প্রথম চারজনই।

সতীর্থদের অনুসরণ না করে বাধার দেয়াল হয়ে দাঁড়ালেন যিনি, সেই শন মার্শের জন্য যেন দিনের সেরা বলটি রেখে দিয়েছিলেন রঙ্গনা হেরাথ। ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রথম দুই টেস্টে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে মার্শ আউট হন ৮১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে অবশ্য সেই সুযোগ থাকছে। প্রথম দুই টেস্টের ম্যান অব দ্য ম্যাচ মাইক হাসি অবশ্য দাঁড়িয়ে গেছেন। ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত ব্র্যাড হাডিনের ব্যাটেও। আলোকস্বল্পতায় ৮.৪ ওভার আগেই যখন শেষ হলো প্রথম দিনের খেলা, শ্রীলঙ্কাই একটু এগিয়ে। আর একটি উইকেট নিলেই শুরু হয়ে যাবে ক্যাঙ্গারুদের লেজ। টসের মতো চমক ছিল শ্রীলঙ্কার দলেও। আগের দুই টেস্টের ব্যর্থতায় বাদ পড়েছেন ৫২.৬১ টেস্ট গড়ের থিলান সামারাবীরা। অথচ সাউদাম্পটনে ঠিক এর আগের টেস্টেই তিনি খেলেছিলেন ম্যাচ বাঁচানো অপরাজিত ৮৭ রানের ইনিংস। সামারাবীরার জায়গায় আসা লাহিরু থিরিমান্নেকে ওপেনিংয়ে জায়গা দিতে মিডল-অর্ডারে খেলবেন অধিনায়ক দিলশান। দেশের মাটিতে মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে খেলছে শ্রীলঙ্কা, সর্বশেষ এ ঘটনা কবে ঘটেছে মনে করতে পারলেন না ধারাভাষ্যকারেরাও।

বড় রানের খোঁজে থাকা ফিলিপ হিউজ কাল রানের খাতাই খুলতে পারেননি, বাইরের বল টেনে এনেছেন স্টাম্পে। ইরাঙ্গাকে প্রথম বলেই উইকেটের স্বাদ দিয়েছেন ওয়াটসন। পন্টিং আউট হয়েছেন ফিফটির দোরগোড়ায়, ক্লার্ক থিতু হওয়ার আগেই। কিন্তু দুজনই আউট হয়েছেন একই ভাবে, অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে। অভিষেকে সেঞ্চুরির পর তিন নম্বর জায়গাটা দাবি করতেই পারতেন মার্শ, সেই সুযোগ পেয়ে কাজেও লাগিয়েছেন। নিজের জায়গা ছেড়ে চারে নেমেছেন পন্টিং, বর্ণাঢ্য এক যুগ অবসানের ইঙ্গিতও যেন তাতে!

No comments

Powered by Blogger.