গাদ্দাফির ঘাঁটিতে বিদ্রোহীদের হামলা

লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বনি ওয়ালিদ ও সিরত শহরে হামলা চালিয়েছে বিদ্রোহী বাহিনী। গতকাল শুক্রবার রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিদ্রোহীরা বনি ওয়ালিদে প্রবেশ করেছে। এদিকে মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে গতকাল লিবিয়া পৌঁছেছেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তাইয়িপ এরদোগান। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজির পর লিবিয়া গেলেন তিনি। বিদ্রোহীদের জাতীয় অন্তর্বর্তী সরকারের (এনটিসি) প্রতি সমর্থন জানানোই তাঁর এ সফরের লক্ষ্য।
'লিবিয়াকে পশ্চিমা বিশ্বের উপনিবেশে পরিণত করার জন্যই' ক্যামেরন ও সারকোজি সফরে এসেছেন বলে অভিযোগ করেছেন মুয়াম্মার গাদ্দাফির মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম। গত বৃহস্পতিবার এক দিনের সফরে লিবিয়া যান তাঁরা। বন্দরনগরী মিসরাতা থেকে গত বৃহস্পতিবার সিরতের দিকে রওনা হয় বিদ্রোহী বাহিনী। গতকাল ভোরে শহরে হামলা চালায় তারা। আগের দিন গুপ্ত হামলাকারীদের আক্রমণে পিছু হটতে বাধ্য হয় বিদ্রোহীরা। এনটিসি এক বিবৃতিতে জানায়, বৃহস্পতিবার গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীর হামলায় তাদের ১১ যোদ্ধা মারা গেছেন এবং ৩৪ জন আহত হয়েছেন। গাদ্দাফির অনুগত ৪০ ব্যক্তিকে পাকড়াওয়ের কথাও জানায় তারা। বিদ্রোহীরা সিরতের কেন্দ্রস্থলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এদিকে গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ত্রিপোলির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বনি ওয়ালিদ শহরে প্রবেশের খবর জানায় বিদ্রোহীরা।

বৃহস্পতিবার ত্রিপোলি থেকে বিদ্রোহীদের মূল ঘাঁটি বেনগাজিতে যান ক্যামেরন ও সারকোজি। স্থানীয় জনগণ তাঁদের বিজয়ীর সম্মান জানায়। উৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে ক্যামেরন বলেন, 'স্বাধীন বেনগাজি এবং স্বাধীন লিবিয়ায় এসে দারুণ লাগছে। ব্রিটেনের জনগণ আপনাদের সাহসকে সালাম জানায়। এই শহর বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। কর্নেল গাদ্দাফি আপনাদের ইঁদুরের মতো মারতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আপনারা সিংহের সাহস দেখিয়েছেন।' সারকোজি বলেন, 'আপনারা শান্তি, স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক প্রগতি চান। ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন এবং ইউরোপ আপনাদের সঙ্গে আছে। বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কাজ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ন্যাটোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।'

এদিকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তাইয়িপ এরদোগান মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে গতকাল লিবিয়ায় পৌঁছান। এর আগে মিসর ও তিউনিসিয়া সফর করেন তিনি। বিদ্রোহী নেতা মুস্তাফা আবদেল জলিল তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। গাদ্দাফির মুখপাত্র মুসা ইব্রাহিম ক্যামেরন ও সারকোজির লিবিয়া সফরের সমালোচনা করেছেন। লিবিয়ার সম্পদ লুট করার জন্যই তাঁরা এসেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। সিরিয়াভিত্তিক আররাই টেলিভিশনকে টেলিফোনে তিনি জানান, 'ত্রিপোলির পতনের ফল সংগ্রহের জন্যই তাঁরা তাড়াহুড়ো করছেন। আমেরিকা ও অন্যান্য দেশও এ সম্পদের ভাগ চাইতে পারে বলে আতঙ্কে আছেন তাঁরা। লিবিয়া পুনর্গঠনের নাম করে তাঁরা বিশ্বাসঘাতকদের সঙ্গে গোপন চুক্তি করতে এবং তেলসহ অন্যান্য ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নিতে এসেছেন।'

No comments

Powered by Blogger.