আশার ফুল দেখছেন ফ্লাওয়ার

গত কিছুদিন ধরে নিজের রক্তচাপ হয়তো নিয়মিতই মেপেছেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। রক্তচাপ কমাতে ওষুধ-টষুধও খেয়ে থাকতে পারেন। হূৎপিণ্ডের ওপর দিয়ে কম ঝড় তো আর যায়নি। অনেক দিন পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পেরেছেন। আর এ জন্য ইংল্যান্ডের কোচ কৃতজ্ঞ থাকবেন বাংলাদেশের কাছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারতে হারতে বেঁচে যাওয়া ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে টিকে ছিল বিশ্বকাপে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত ছিল না। বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিলে আবারও হিসাবের মারপ্যাঁচে পড়ে যেত ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ অনায়াসে সেই লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করায়ই স্বস্তি ফ্লাওয়ারের, ‘দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পেরে ভালো লাগছে। এটা আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল। যদিও সেই লক্ষ্য পূরণ হলো অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে।’
ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলের সঙ্গে রোমাঞ্চকর শব্দটা কখনোই সেভাবে যায়নি। কিন্তু এই বিশ্বকাপে তারা যেন প্রতিজ্ঞা করেই নেমেছিল নিজেদের নতুন পরিচয়ে পরিচিত করাতে। গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডের ছয়টি ম্যাচের দিকে ফিরে তাকান। যেটিতে নাটক সেভাবে জমেনি, সেই ম্যাচও শেষ হয়েছে ৮ বল বাকি থাকতে!
কোচ ফ্লাওয়ারও বলছেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিশ্বকাপ হয়েছে উদ্বেগপূর্ণ ও রোমাঞ্চকর। ম্যাচগুলো খুবই ক্লোজ হয়েছে। ড্রেসিংরুমের সবাই অনেকবারই আবেগে ভেসে গেছে। তবে আমি মনে করি, চাপের মধ্যে আমাদের খেলোয়াড়েরা খুবই ভালো করেছে। সবচেয়ে ভালো করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত ম্যাচটায়। আমরা বাদ পড়ার মুখে দাঁড়িয়েও লড়াই করেছি। হ্যাঁ, কেউ হয়তো বলতে পারেন, আমাদের হয়তো আরও দাপট দেখিয়েই জেতা উচিত ছিল। যা-ই হোক, এখন আমরা সামনে তাকিয়ে আছি।’
এই বিশ্বকাপে দুটো বড় অঘটনেরই শিকার ইংল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের পর হেরেছে বাংলাদেশের কাছেও। এই দুটি যদি বিস্মরণযোগ্য ম্যাচ হয়, দুটি মনে রাখার মতো ম্যাচও খুঁজে পাচ্ছেন ফ্লাওয়ার, ‘বিশ্বকাপের অন্যতম দুই ফেবারিট দক্ষিণ আফ্রিকা আর ভারতের বিপক্ষে আমরা দারুণ খেলেছি। যদিও আমরা ধারাবাহিক ছিলাম না। আমাদের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। না হলে আর এগোতে পারব না।’
কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ঠিক ছিল না। তবে রণকৌশল এরই মধ্যে ঠিক করতে শুরু করেছেন অ্যাশেজজয়ী এই কোচ, ‘আমাদের সম্ভবত ম্যাচটা কলম্বোয় গিয়ে খেলতে হবে। এ ভেন্যুর অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচটি দেখছিলাম। উইকেটটা তো খুবই ভালো মনে হলো। সেখানে আমরা আগেও খেলেছি। অবশ্য ভেন্যু নিয়ে আমাদের কোনো বাতিক নেই। যে কোনো জায়গায়ই খেলতে আমরা প্রস্তুত। শুধু প্রতিপক্ষ আর ভেন্যুটা চূড়ান্ত হয়ে গেলে পুরোদমে প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।’
ইংল্যান্ড দলেই চোটের কারণে সবচেয়ে বেশি ওলটপালট হয়েছে। এউইন মরগানের জায়গায় রবি বোপারা, কেভিন পিটারসেনের জায়গায় মরগান, স্টুয়ার্ট ব্রডের জায়গায় ক্রিস ট্রেমলেট...সর্বশেষ আজমল শেহজাদের জায়গায় জেড ডার্নবাখ। ডার্নবাখকে নিয়ে ইংল্যান্ড দলে যোগ হলো আরেক দক্ষিণ আফ্রিকান। আগামী মাসে ২৫ পূর্ণ করতে চলা এই পেসারের ব্যাপারে ফ্লাওয়ারকে উচ্ছ্বসিতই মনে হচ্ছে।
কিন্তু একইভাবে জেমস অ্যান্ডারসনের ফর্মহীনতাও কি তাঁকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করছে না? তবে ফ্লাওয়ার সমস্যাটা ধরতে পেরেছেন, তা নিরাময়ের উপায়ও, ‘গত শীতে (অস্ট্রেলিয়া সফরে) ওর ওপর দিয়ে অনেক চাপ গেছে। ওর ওপর থেকে আমাদের চাপ সরাতে হবে।’

No comments

Powered by Blogger.