মোহামেডানের পাহাড় টপকাল গাজী

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন শ রান তাড়া করে এখন হরহামেশাই জিতে যাচ্ছে দলগুলো। কিন্তু বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনো তিন শ মানে নিশ্চিত জয়। ৩৩৯ করার পর তাই নিশ্চিন্তই থাকার কথা ছিল মোহাডোনের। অথচ এই রানও কত অনায়াসে টপকে গেল গাজী ট্যাংক ক্রিকেটার্স! টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শাহরিয়ার নাফীসের অপরাজিত ১১৪, শ্রীধরন শ্রীরামের ৭৩ ও অলক কাপালির ৩৫ বলে ৬৩ রানের ঝড়ে বগুড়ায় গাজী ট্যাংক জিতেছে ৭ উইকেটে। মোহামেডানের আবারও পয়েন্ট হারানোর দিনে টানা পঞ্চম জয় পেয়েছে আবাহনী। ওল্ড ডিওএইচএসকে আবারও জিতিয়েছেন মেহরাব জুনিয়র।
বগুড়ায় চতুর্থ ওভারে তামিম ইকবাল (১২) ও ১৬তম ওভারে মঈন আলীকে (২৮ বলে ৩২) আউট করার পর আরেকটি উইকেটের জন্য গাজীকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৪ ওভার! শামসুর রহমানকে নিয়ে নাজিমউদ্দিন গড়েন ১৬৬ রানের জুটি। ৫৬ বলে ফিফটি করা নাজিমউদ্দিনের পরের ফিফটি করতে লেগেছে ৪১ বল। অলক কপালির বলে স্টাম্পড হওয়ার আগে ১৩ চার ও ২ দুই ছয়ে করেছেন ১১৫। অলক পরের ওভারে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ ইউসুফকেও (৫)। তবে ফয়সাল হোসেনের ‘ক্যামিও’তে শেষ ৫ ওভারে মোহামেডান তোলে ৬০। শামসুর অপরাজিত থেকে যান ১১১ বলে ১০৮ করে।
মিঠুনের ২৪ বলে ২৪ ও সাব্বিরের ২৬ বলে ৩৮ রান গাজীকে এনে দেয় কাঙ্ক্ষিত ঝোড়ো সূচনা। পরে রান এসেছে শাহরিয়ার-শ্রীরাম জুটিতে। ১৫১ রানের জুটির পর যখন শ্রীরাম বিদায় নেন, তখনো গাজীর প্রয়োজন ৭০ বলে ১১৮। শেষ ৫ ওভারে ৫৬। অলকের ৬ চার ও ৪ ছয়ের ইনিংস গাজীকে জয় এনে দেয় ৮ বল আগেই। শাহরিয়ার অপরাজিত থেকে যান ১৩১ বলে ১১৪ করে।
প্রথম ম্যাচেই ভারতীয় ব্যাটসম্যান মিঠুন মানহাসের ৮০ বলে ৮৯, বহিষ্কারাদেশ কাটিয়ে ফেরা মাহমুদউল্লাহর ফিফটি (৬৬), যশপাল শর্মার ৩১ বলে ৪২ বিকেএসপিতে আবাহনীকে এনে দেয় ২৭৪ রান। শাহবাজ বাট ও অমিত মজুমদারের ১০১ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আবাহনীকে চাপে রেখেছিল সিসিএস। এই জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে সিসিএস। নাজমুল হোসেনের ৪২ বলে ৫৩ শুধু ব্যবধানই কমিয়েছে।
টানা চার ম্যাচ ফিফটি করা মুশফিকুর করেছেন ৩৭, রাজশাহীতে বিমানও তাই করতে পারে মাত্র ১৮২। ২৬ রানে ৩ উইকেট হারানো ডিওএইচএস আবারও পথ খুঁজে পায় মেহরাবের ব্যাটে। পঞ্চম উইকেটে রাশেদ হানিফের সঙ্গে ৭৬ রানের জুটি গড়া মেহরাব ফিরেছেন দলকে জিতিয়েই।
সং ক্ষি প্ত স্কো র
আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৭৪/৭ (মানহাস ৮৯, মাহমুদউল্লাহ ৬৬, যশপাল ৪২, রনি ২৪, সগীর ২৩; বিশ্বনাথ ৩/৫১, ওয়াকাস ২/৫০, রিফাতুজ্জামান ১/২৯, সৈকত ১/৩৭)। সিসিএস: ৪৮.১ ওভারে ২৩৯ (শাহবাজ ৭২, নাজমুল ৫৩, অমিত ৪৮, শুভাগত ২০, সাকলাইন ৩/৩২, ফরহাদ ৩/৪৫, তাপস ২/৫০, মাহমুদউল্লাহ ১/২৯, আবুল হাসান ১/৫৩)। ফল: আবাহনী ৩৫ রানে জয়ী।

মোহামেডান: ৫০ ওভারে ৩৩৯/৫ (নাজিমউদ্দিন ১১৫, শামসুর ১০৮*, ফয়সাল ৩৪* মঈন ৩২; অলক ২/১০, নাসির ১/২২, ভুবনেশ্বর ১/৪৯, রাসেল ১/৮৭)। গাজী: ৪৮.৪ ওভারে ৩৪০/৩ (শাহরিয়ার ১১৪*, শ্রীরাম ৭৩, অলক ৬৩*; সাকিব ২/৬৩, এনামুল ১/৩৬)। ফল: গাজী ট্যাংক ৭ উইকেটে জয়ী।

বিমান: ৪৯.৩ ওভারে ১৮২ (জিসান ৩৮, মুশফিকুর ৩৭, পেরেরা ৩৭, মোশারফ ২১; ফরহাদ রেজা ৪/৩১, নাবিল ২/১৯, তাসকিন ১/৩৪, শফিউল ১/৩৪, রাশেদ ১/৪৩)। ডিওএইচএস: ৪৬.৪ ওভারে ১৮৫/৬ (মেহরাব ৭৩*, রাশেদ ৪৫; ইলিয়াস ৩/৪০, শফিউল ২/২৪, মনোয়ার ১/২১)। ফল: ডিওএইচএস ৪ উইকেটে জয়ী।

No comments

Powered by Blogger.