অস্ট্রেলিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, রোগব্যাধি ছড়ানোর আশঙ্কা

নদীর পানি বাড়তে থাকায় অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য কুইন্সল্যান্ডে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কয়েক দশকের মধ্যে এটাই ওই অঞ্চলে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা। কুইন্সল্যান্ডের গ্রামাঞ্চলের শত শত মানুষ এর মধ্যে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে।
এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছেন কর্মকর্তারা। বন্যার কারণে খাদ্যঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কয়েক দিনের টানা বর্ষণে নদীগুলোর কূল ছাপিয়ে পানি বেড়ে এই বন্যা দেখা দেয়। এতে ওই রাজ্যের অনেক এলাকার ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। এখন বৃষ্টি কমে এলেও কয়েকটি স্থানে পাহাড় থেকে ঢল আসা অব্যাহত রয়েছে। এতে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
কুইন্সল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনা ব্লাই হুঁশিয়ার করেছেন, আগামী দিনগুলোতে কয়েকটি এলাকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এর মধ্যে কুইন্সল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত এমারেল্ড শহর রয়েছে। শহরটির ৮০ শতাংশ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ১১ হাজার লোকের বাস ওই শহরে। আগাম সতর্কতা হিসেবে এমারেল্ডের প্রায় ৫০০ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আনা ব্লাই এর মধ্যে শহরটি পরিদর্শন করেছেন।
রাজ্যের বান্ডাবার্গ ও রকহ্যাম্পটন শহরেও বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল কন্দামাইন শহর থেকে প্রায় ১০০ জনকে হেলিকপ্টারে করে সরিয়ে নেওয়া হয়। থিওর শহরের সব বাসিন্দাকে এর মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। অস্থায়ী ত্রাণ শিবির, স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে সাময়িকভাবে আশ্রয় নিচ্ছে এসব মানুষ।
সাংবাদিকদের আনা ব্লাই বলেন, ‘কুইন্সল্যান্ড রাজ্য এখন কঠিনতম সময়ের মুখোমুখি। এই দুর্যোগের ঘটনা নজিরবিহীন। একসঙ্গে এত শহর ও এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঘটনা এর আগে আমরা দেখিনি। এটি এক হূদয়বিদারক ঘটনা।’
কুইন্সল্যান্ডের রিকভারি কো-অর্ডিনেটর ব্রুস গ্র্যাডি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে বেশি খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী প্রয়োজন, সেসব কেন্দ্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। নৌ ও আকাশপথে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর কথা ভাবতে হবে।’
কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, বন্যার পানিতে মৃত জীবজন্তুর গলিত শব মিশে যাওয়ায় মারাত্মক কিছু রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝুঁকি বাড়ছে মশার মাধ্যমে রোগ ছড়ানোর।

No comments

Powered by Blogger.