ম্যানইউর বারবেতভ-ভাগ্য

২০০৭-০৮ মৌসুমে যেমন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছিলেন, গত মৌসুমে ছিলেন ওয়েইন রুনি; এবার তেমন দিমিতার বারবেতভ। এ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জয় আর বারবেতভ যেন সমার্থক হয়ে উঠেছেন। ম্যাচের পর ম্যাচ গোল করে যাচ্ছেন, ম্যানইউকে এনে দিচ্ছেন মূল্যবান সব জয়। পরশু ব্ল্যাকপুলের বিপক্ষে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়েও ম্যানইউ যে ৩-২ গোলে জিতে ফিরল, তা এ মৌসুমে গোল-রাজা হয়ে ওঠা বারবেতভের কল্যাণেই।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানইউ সর্বশেষ হেরেছে গত বছরের এপ্রিলে। চেলসির কাছে ১-২ গোলে হারের ক্ষত মুছে টানা ২৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার কীর্তি নিয়ে ব্ল্যাকপুলের মাঠে গিয়েছিল ম্যানইউ। কিন্তু সবাইকে বিস্মিত করে ম্যাচের ১৫ মিনিটেই ক্যাচকার্টের গোলে এগিয়ে যায় ব্ল্যাকপুল। ৪৩ মিনিটে ব্যবধান ২-০ হয় ক্যাম্পবেলের গোলে।
প্রথমার্ধে ম্যানইউর এমন অবস্থা কেন হলো? ‘হয়তো মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই এর কারণ’—ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করেছেন কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসন। বারবেতভের ব্যাখ্যা আবার অন্য রকম, ‘প্রথমার্ধটা আমাদের জন্য কঠিন হয়ের ওঠার কারণ মাঠ খুব একটা ভালো ছিল না। বল বেশি লাফিয়েছে এবং ব্ল্যাকপুলও ভালো খেলেছে।’
এসব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ম্যানইউ যে আরেকটা দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন কাহিনি লিখতে পারল তা বারবেতভের জন্যই। লিগে নিজের ১৮তম গোলটি করে ব্যবধান কমান তিনি ৭২ মিনিটে। দুই মিনিট পর সমতা ফেরান রুনির বদলি হিসেবে নামা হাভিয়ের হার্নান্দেজ। ৮৮ মিনিটে দলের জয় নিশ্চিত করতে মৌসুমে নিজের ২০তম (লিগে ১৯তম) গোলটি করেন বারবেতভ।
ম্যাচ শেষে ম্যানইউর ফিরে আসার মহিমা কীর্তন করেছেন বারবেতভ ও ফার্গুসন। বারবেতভের কথা, ‘১-০ বা ২-০-তে পিছিয়ে পড়ার পরও আমরা ম্যাচে ফিরতে পারি। আমাদের এই আত্মবিশ্বাসটা আছে, যদি একটা গোল করতে পারি তাহলে আরও করতে পারব।’ ‘আমার খেলোয়াড়েরা কখনো হাল ছেড়ে দেয় না’—বলেছেন ফার্গুসন।
এভাবে ম্যাচে ফিরতে পারার আসল রহস্যটা কী? ফার্গুসন আর বারবেতভ দুজনেই বলেছেন খেলোয়াড় বদলির কথা। বিশেষ করে বদলি হিসেবে রায়ান গিগসের মাঠে নামাটাই কাজে লেগেছে বেশি। ‘দ্বিতীয়ার্ধে আমরা পরিবর্তন করেছি। রায়ান গিগস সবচেয়ে বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে’—বলেছেন ফার্গুসন। তবে সর্বশেষ ১০ ম্যাচে ১৩ গোল করা বারবেতভের প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ ফার্গুসন, ‘দুর্দান্ত একটা মৌসুম যাচ্ছে ওর (বারবেতভ)। দারুণ এক প্রতিভা ও।’
প্রথম লেগে ইপসউইচের কাছে ১-০ গোলে হারের পর ‘গানার’ শিবিরে ‘গেল গেল’ রব উঠে গিয়েছিল। সেই ইপসউইচকেই ৩-০ গোলে হারিয়ে স্বরূপটা দেখাল পরশু আর্সেনাল, উঠে গেল ইংলিশ লিগ কাপের ফাইনালে।

No comments

Powered by Blogger.