মস্কোর আত্মঘাতীরা পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল

মস্কোর বিমানবন্দরে হামলার সন্দেহভাজন দুই আত্মঘাতী পাকিস্তানে আল-কায়েদার ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবির ঘনিষ্ঠ একটি পত্রিকা এ কথা জানিয়েছে। পত্রিকাটি দাবি করেছে, সম্ভাব্য এ হামলার বিষয়ে গত ডিসেম্বরেই নিরাপত্তা বাহিনীকে সতর্ক করা হয়েছে।
এদিকে, বোমা হামলার পর মস্কোতে গতকাল বুধবার এক দিনের শোক পালিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, এই মুহূর্তে সন্ত্রাসবাদই রাশিয়ার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। রাশিয়ার বিমানবন্দরগুলোতে ইসরায়েলের বিমানবন্দরের মতো নিরাপত্তাব্যবস্থা আরোপ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
বিভিন্ন সূত্র ও পত্রপত্রিকা দাবি করছে, মস্কোতে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে এক-দুই সপ্তাহ আগে সতর্ক করার পরও হামলার ঘটনা ঘটল। এতে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।
রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবির ঘনিষ্ঠ একটি পত্রিকা জানিয়েছে, বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা সূত্রের মাধ্যমে মস্কো পুলিশকে গত ডিসেম্বরেই সতর্ক করা হয়েছিল যে তিন নারী এবং একজন পুরুষের একটি আত্মঘাতী দল চেচনিয়া থেকে মস্কোর দিকে এগোচ্ছে।
ওই সতর্কবার্তায় বলা হয়, আত্মঘাতী ওই দলটি পাকিস্তান ও ইরানে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ওই দলের এক নারী সদস্যের এক আত্মীয় থাকেন মস্কোর একটি ফ্ল্যাটে। ওই ফ্ল্যাটটি সম্ভবত বোমা তৈরির জন্য ব্যবহূত হচ্ছে। এ ছাড়া পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ নেওয়া আরও পাঁচ ইসলামি জঙ্গির একটি দল শিগগির মস্কোতে ঢুকতে যাচ্ছে।
আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট একটি ওয়েবসাইট জানিয়েছে, দোকু উমারভের নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ককেশাস ইমিরেট মস্কো হামলা চালানোর দাবি করেছে। সংগঠনটি বলেছে, ককেশাস অঞ্চলে স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাতেই তারা এ হামলা চালিয়েছে।
দৈনিক কোমারসান্ত পত্রিকা জানিয়েছে, নববর্ষের অনুষ্ঠানের সময় মস্কোতে এক নারী আত্মঘাতী দুর্ঘটনাক্রমে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলার পর এ ধরনের আরও হামলার বিষয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। পরে দেখা গেছে, একটি ইসলামি জঙ্গি গ্রুপে যোগ দেওয়ার দায়ে ওই আত্মঘাতী নারীর স্বামী জেল খাটছেন এবং এ জন্যই আরও এক নারীসহ ওই নারী দাগেস্তান থেকে মস্কোতে এসেছেন হামলার জন্য।
অপর একটি পত্রিকা জানিয়েছে, আত্মঘাতী ওই দলটি মূলত নববর্ষের অনুষ্ঠানেই বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু ওই সময় এক নারী আত্মঘাতী দুর্ঘটনাক্রমে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেলায় সে সময় পরিকল্পনা সফল হয়নি।
হামলার পর গতকাল এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছে মস্কো। হামলায় আহত ১১৬ জন এখনো হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.