রোনালদো-জিদানের অন্য যুদ্ধ

রোনালদো খেলেননি। গ্যালারি থেকে সাবেক সতীর্থ ও বন্ধু জিনেদিন জিদানকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। রোনালদোর উৎসাহদান বৃথা গেছে। জিদান দলকে জেতাতে পারেননি। জেতেনি অলিম্পিয়াকস অল স্টার একাদশও। জিদান-রোনালদো একাদশ আর অলিম্পিয়াকস অল স্টার দলের ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জিতেছে আসলে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) অংশ হিসেবে প্রতিবছরই আয়োজন করা হয় এমন একটি ম্যাচের। ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত জিদান-রোনালদো একাদশের সঙ্গে অন্য যেকোনো একটা দলের এই প্রদর্শনী ম্যাচ থেকে যা আয় হয়, তার সবটাই চলে যায় ইউএনডিপির দারিদ্র্য বিমোচন তহবিলে। পরশু অলিম্পিয়াকসের মাঠ কারাইসকাকিসে হয়ে গেল এ বছরের ম্যাচটি।
টিকিট, স্পনসর এবং টিভি স্বত্ব থেকে এবারের ম্যাচ থেকে আয় হয়েছে প্রায় ১০ লাখ ডলার। এবারের ম্যাচ থেকে আসা টাকাটা ব্যয় করা হবে হাইতির ভূমিকম্প আর পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে।
বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যের তুলনায় এই ১০ লাখ ডলার কিছুই নয়। তবে ধীরে ধীরে মানুষ দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবে এবং একদিন দারিদ্র্যকে জয়ও করা যাবে বলে আশা ফরাসি কিংবদন্তি জিদানের, ‘আমার আশা ম্যাচটি মানুষের মধ্যে এই বোধটা তৈরি করবে, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাইকে একত্র হতে হবে।’
বিশ্বকাপজয়ী আরেক সাবেক তারকা ব্রাজিলের রোনালদো নিজেকে এমন একটি মহৎ কাজে জড়াতে পেরে গর্বিত। আফসোস তাঁর একটাই, মাঠে নেমে খেলা হলো না। ‘আমি যদিও মাঠে নামতে পারিনি, কিন্তু অলিম্পিয়াকসকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই সব খেলোয়াড় এবং সমর্থককে, যারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এখানে এসেছে’—বলেছেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের মালিক।
এ রকম প্রীতি ম্যাচে ড্রটাই সবচেয়ে ভালো ফল হয়তো। তবে দুই দলই কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ফুটবলই খেলেছে। জিদান ৬ মিনিটে একটা গোল করেই ফেলেছিলেন প্রায়। কিন্তু বয়সের কারণেই কিনা গোলরক্ষককে একা পেয়েও ১২ গজ দূর থেকে গোল করতে পারেননি ১৯৯৮ বিশ্বকাপের নায়ক।
তবে ৩ মিনিট পরই জিদান-রোনালদো একাদশকে এগিয়ে দিয়েছিলেন পর্তুগালের রিকার্ডো সা পিন্টো। ১০ মিনিট পর এই পিন্টোই ব্যবধানটাও দ্বিগুণ করেন। তখন মনে হচ্ছিল জিদান-রোনালদো মাঠের লড়াইটাও জিততে যাচ্ছেন। কিন্তু ২৭ মিনিটে মিত্রোগলোর গোল স্কোরলাইন ২-১ করে। ৫০ মিনিটে এই মিত্রোগলোর গোলেই ফেরে সমতা।
এভাবে এগিয়ে গিয়েও জিততে না পারার হতাশা কিন্তু একদমই নেই জিদানের কণ্ঠে। ৭০ মিনিটে যখন মাঠ থেকে নেমে যান, গ্যালারিভর্তি দর্শক উঠে দাঁড়িয়ে রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এর প্রতিদান তিনি দিয়েছেন ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে, ‘আমি এখানে আসা সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’

No comments

Powered by Blogger.