হামলাকারীকে জঙ্গি বানিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী?

সুইডেনের আত্মঘাতী হামলাকারী তৈমুর আবদুল ওয়াহাব আল আবদালির স্ত্রী মোনা থওনিই তাঁকে উগ্রপন্থী বানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মোনার নানি মারিয়া নেদেলকোভিচি এ অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে সুইডেনের গোয়েন্দা সংস্থা সায়েপো সে দেশে উগ্রপন্থীদের তৎপরতা নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করেছে। গতকাল বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করার কথা ছিল।
দক্ষিণ রোমানিয়ায় বসবাসরত মারিয়া নেদেলকোভিচি বলেছেন, তাঁর নাতি মোনা থওনি তৈমুরের জীবনাচরণ পাল্টে দিয়েছিলেন। তিনি জানান, পশ্চিমা ধারায় শিক্ষিত তৈমুর ধর্ম নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতেন না। তিনি বিয়ার খেতেন। জিনসের প্যান্ট পরতেন। তিনি সুইডেনের একটি রেডিওতে রক এন রোল ডিজে (ডিস্ক জকি) হিসেবে কাজও করেছেন।
২০০১ সালের টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার পর মোনার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। ওই সময় মোনা কট্টর ইসলামপন্থী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হন এবং পরবর্তী সময়ে তিনি স্বামীকেও সেই পথে নিয়ে যান।
নেদেলকোভিচি বলেন, তিনি এবং তাঁর পরিবার মোনাকে অনেকবার সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তিনি তাঁদের কথা শোনেননি।
ব্রিটেন ও সুইডেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তৈমুর আবদুল ওয়াহাবের ইরাকি বংশোদ্ভূত পরিবার সুইডেনে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। সেখানে মোনার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। মোনার বাবা আবদুলও একজন ইরাকি।
নেদেলকোভিচি জানান, বাবার চাকরির সুবাদে মোনা বহু দেশে গেছেন। উত্তর আফ্রিকায় বাবার সঙ্গে তিনি প্রায় ১০ বছর ছিলেন। ৯/১১ হামলার ঘটনার পর তিনি পুরোপুরি পর্দানশিন হয়ে যান।
১৯৯৬ সালে বিয়ের পর তৈমুর ও মোনা লুটনে বসবাস শুরু করেন। তাঁদের দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে হয়।
নেদেলকোভিচি বলেন, মোনা এতটাই কট্টরপন্থী হয়ে উঠেছিলেন যে ওসামা বিন লাদেনের নামানুসারে তিনি তাঁর ছেলের নাম নাম রেখেছেন ‘ওসামা’। তাঁর অভিযোগ, মোনাই তৈমুরকে ওই হামলা চালানোর জন্য প্ররোচনা দিয়েছিলেন।
এদিকে, সুইডেনের গোয়েন্দারা বলেছেন, হামলা চালানোর আগে তৈমুর যে অডিও টেপ সংবাদমাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন, তাতে তাঁর ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি আলাদা একটি কণ্ঠের কাশির শব্দ শোনা গেছে। এতে বোঝা যায়, তৈমুর একা নন, এ হামলায় তাঁকে আরও কেউ সহযোগিতা করেছিল। সুইডেনের গোয়েন্দা সংস্থা সায়েপো বলেছে, তারা সুইডেনের জঙ্গি তৎপরতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তাতে সুইডেনে বসবাসকারী প্রায় ২০০ উগ্রপন্থীর নাম রয়েছে। প্রতিবেদনটি গতকালই প্রকাশ করার কথা।

No comments

Powered by Blogger.