শেষ বিকেলে ভারতের অস্বস্তি

‘নড়বড়ে নব্বইয়ে’ গিয়ে নড়বড়ে হয়ে পড়া বীরেন্দর শেবাগের ধাতে নেই। বরং চার-ছয় দিয়ে তিন অঙ্ক ছোঁয়াটা তাঁর অভ্যাস। কালও গিয়েছিলেন সেই পথে। ৯২ থেকে ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে চার মেরে ৯৬, এক বল পরেই ভেট্টোরির ঝুলিয়ে দেওয়া বলে সুইপ করলেন তেড়েফুঁড়ে, ফ্লাইট মিস করে বোল্ড। দীর্ঘক্ষণের সঙ্গীকে হারিয়ে একটু যেন আনমনা হয়ে গেলেন গৌতম গম্ভীর। টিম সাউদির করা পরের ওভারে লেগ স্টাম্পের বল ফ্লিক করতে গিয়ে ধরা পড়লেন উইকেটকিপারের হাতে।
এই দুটো উইকেট হারানোতেই ভারতের জন্য দারুণ একটি দিনের শেষটা হলো একটু অস্বস্তিতে। প্রথম দিনের ধাক্কা সামলে ম্যাচে ভালোভাবেই ফিরে এসেছে স্বাগতিকেরা। তবে লাগামটা পুরোপুরি নিতে পারেনি। ক্ষেত্র অবশ্য প্রস্তুত, নিউজিল্যান্ডকে ৩৫০ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর শেবাগ-দ্রাবিড়কে হারিয়ে ভারতের রান ১৭৮। আজ লাগাম নেওয়ার লড়াইয়ে নামবেন বহু যুদ্ধের অভিজ্ঞ দুই সেনানী শচীন টেন্ডুলকার ও রাহুল দ্রাবিড়।
আগের দিন শেষ বিকেলে নেওয়া নতুন বলটা চকচকেই ছিল। সেই বলেই কাল সকালে জ্বলে উঠলেন জহির খান। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ভেতরে ঢোকা দুটো অসাধারণ ডেলিভারিতে কাল সাতসকালেই ফিরিয়েছেন নাইটওয়াচম্যান গ্যারেথ হপকিন্স ও কেন উইলিয়ামসনকে। বাইরে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন হপকিন্স, উইলিয়ামসন মিস করেছেন লাইন, এলবিডব্লু দুজনই। অভিজ্ঞ জহিরের রুদ্রমূর্তি হয়তো জাগিয়ে দিয়েছিল হরভজনকেও। টানা চারটি উইকেট নিয়ে ছেঁটে দিয়েছেন কিউইদের লেজ। সবচেয়ে বড় বাধা জেসি রাইডারকে আউট করেছেন সম্ভবত দিনের সেরা বলটিতে। গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়ার পর এই প্রথম ইনিংসে তিনটির বেশি উইকেট পেলেন ‘ভাজ্জি’। আগের দিন শেষ বিকেলে টিম ম্যাকিন্টশের উইকেটটিসহ শেষ ৭ উইকেট হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড ৯৭ রানে।
গম্ভীর না হয় ফর্মের সঙ্গে লড়ছেন, কিন্তু কাল শেবাগের শুরুটাও শেবাগের মতো হয়নি। আসলে হতে দেননি মার্টিন-সাউদি। নিউজিল্যান্ডের নতুন বলের দুই বোলার দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ভারতের দুই স্ট্রোকপ্রিয় ওপেনারকে পাখা মেলতে দেননি। প্রথম ২৩ বলে বিধ্বংসী শেবাগের রান ছিল ২! নড়বড়ে লাগছিল গম্ভীরকেও। তবে দুজনেরই সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব, ওই সময়টা দাঁতে দাঁত চেপে উইকেটে পড়ে থেকেছেন দুজন। উইকেট ছুড়ে আসেননি। সময়মতো ছুটিয়েছেন স্ট্রোকের ফুলঝুরি।
পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছিলেন শেবাগ, সময়ের সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন গম্ভীরও। আর এতেই ভারত পেয়েছে ১৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি। উদ্বোধনী জুটিতে এটি শেবাগ-গম্ভীরের অষ্টম শতরানের জুটি। ৭০ বলে ফিফটি পাওয়া শেবাগ পরের ৪৬ করেছেন ৫০ বলে। তবে মুহূর্তের অমনযোগিতায় ২৩তম সেঞ্চুরি নয়, ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মতো শিকার হয়েছে নড়বড়ে নব্বইয়ের। গত কিছুদিনের বাজে ফর্মে গড়টা পঞ্চাশের নিচে নেমে গিয়েছিল গম্ভীরের। ১০ মাস পর পাওয়া ফিফটিতে গড়া আবার হয়েছে ঠিক ৫০।

No comments

Powered by Blogger.