রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তাই ১০ গুপ্তচরকে ধরিয়ে দিয়েছেন

রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্বৈত ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে। সে দেশের একটি প্রভাবশালী পত্রিকা দাবি করেছে, ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা রাশিয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের হয়েও গুপ্তচরবৃত্তি করেন। তাঁর কারণেই গত জুনে যুক্তরাষ্ট্রে ১০ জন রুশ গুপ্তচরের একটি চক্র ধরা পড়ে।
কোমারসান্ত নামের ওই পত্রিকাটি বলেছে, রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের (এসভিআর) সাবেক প্রধান কর্নেল এসচারবাকভ দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে কাজ করছেন। খবরে বলা হয়, রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ গত জুনে ওয়াশিংটন সফরের মাত্র তিন দিন আগে কর্নেল এসচারবাকভ যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যান। আর সফর শেষে মেদভেদেভ দেশে ফিরে আসার পরই ১০ রুশ গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কার করা হয়। গত শতকের নব্বই দশকের শুরুতে স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা বিনিময়ের ঘটনা।
কোমারসান্ত বলেছে, গ্রেপ্তারের পর কারাগারে হুয়ান ল্যাজারো নামের একজন গুপ্তচরের সঙ্গেও দেখা করেন কর্নেল এসচারবাকভ। ল্যাজারোর কাছ থেকে তিনি স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন। ল্যাজারোর প্রকৃত নাম মিখাইল ভাসেনকভ। তবে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি রাশিয়ার নাগরিক নন বলে দাবি করেন ল্যাজারো। এরপর তাঁর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য মার্কিন সরকারের কাছে হস্তান্তর করেন এসচারবাকভ।
রুশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নিরাপত্তাবিষয়ক পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান গেন্নাদি গুদকভ গোয়েন্দা কর্মকর্তার দ্বৈত ভূমিকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রুশ গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা এ ঘটনাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ অভিহিত করে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
গেন্নাদি গুদকভ বলেন, তাঁর সঙ্গে বিদেশ শাখার অন্যান্য গোয়েন্দা কর্মকর্তারও কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাঁদের গুপ্তচরবৃত্তির কোনো অভিযান ব্যর্থ হয়নি।
গুদকভ বলেন, কয়েক দশক ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে এসব গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে গড়ে তোলা হয়েছিল। এ ঘটনায় রাশিয়ার গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডের ভাবমূর্তির বিরাট ক্ষতি হলো।
এদিকে কোমারসান্ত-এ প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু ও খবরটি প্রকাশের বিচক্ষণতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সোভিয়েত আমলের প্রবীণ গোয়েন্দা কর্মকর্তা আইগর প্রেলিন বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে বলেছেন, নাম-পরিচয় প্রকাশ করে এভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করাটা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ এ প্রতিবেদনের ফলে কর্নেল এসচারবাকভকে এখন দেশে ফিরিয়ে আনাটাই অসম্ভব ব্যাপার হয়ে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.