আশরাফুলদের সঙ্গী অন্ধকার

বলটি সম্পর্কে তেমন পরিষ্কার ধারণা নেই কারও, ধারণা নেই চীনের কন্ডিশন সম্পর্কে, ধারণা নেই প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সম্পর্কে। এসব ধারণা দূরে থাক, নিজেরাই সবাই এক হয়ে এখন পর্যন্ত ভালো করে একটু অনুশীলন করতে পারেননি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, এক ধরনের অন্ধকার সামনে নিয়েই এশিয়ান গেমস খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ভরসা, শুরুতেই অন্তত শক্তিশালী কোনো দলের মুখোমুখি হতে হবে না। সেই ভরসাতেই হয়তো আগামীকাল গুয়াংজু এশিয়ান গেমসে রওনা দিতে যাওয়া বাংলাদেশ দলের সংবাদ সম্মেলনে দলনেতা জালাল ইউনুস বললেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য পদক-তালিকায় নাম ওঠানো। আর মূল লক্ষ্য ফাইনাল খেলা।’
কাজটা সহজ হবে না। এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের খেলা শুরু হবে ২৩ নভেম্বর, সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ চীন বা মালয়েশিয়া। কিন্তু ঝামেলাটা হলো, ফাইনালে উঠতে হলে সেমিফাইনালে সম্ভবত শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে আসতে হবে।
অবশ্য অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নন, ‘খেলাটা টি-টোয়েন্টি। তাই এখানে ওই সময়টা ভালো খেললেই ম্যাচ জেতা সম্ভব। আমাদের দলের খেলোয়াড়েরা টি-টোয়েন্টির জন্য খুবই মানানসই। তাই আমি আশাবাদী।’
সে অধিনায়ক আশাবাদী হতে পারেন। কিন্তু হতাশারও অনেক পথ থাকছে। অন্তত অনুশীলন নিয়ে বাংলাদেশ দলকে হতাশা পেয়ে বসতে পারে। একটা অনুশীলন ম্যাচ খেলা তো দূরে থাক, একসঙ্গে এই দলটা তো তেমন অনুশীলনই করতে পারল না।
এ নিয়ে দলের কোচ সারওয়ার ইমরানের আফসোস আছে। আফসোস আছে আশরাফুলেরও। তবে এর মধ্যেও খুঁজে পাওয়ার মতো সান্ত্বনাও আছে, ‘আফসোস তো আছেই। কিন্তু কিছু করার ছিল না। জাতীয় দলের অনুশীলন ছিল, জাতীয় লিগের খেলা ছিল। তবে একটা ইতিবাচক দিক হলো, সবাই খেলার মধ্যে ছিলাম।’
ওই খেলা ৫০ ওভারের; আর এখানে ২০ ওভারের ক্রিকেট! মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে না? আশরাফুল বলছেন, খুব সমস্যা হবে না, ‘এটা ঠিক, আমাদের জাতীয় দলেরও টি-টোয়েন্টি রেকর্ড খুব ভালো না। তার ওপর ওখানে দ্রুত কন্ডিশন ও ফরম্যাটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুত মানিয়ে নেওয়াটাই আমাদের কাজ।’
শুধু ৫০ থেকে ২০ ওভারের ম্যাচে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ নয়; চ্যালেঞ্জ আছে নতুন বলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ারও। এসজি, কোকাবুরা বা ডিউক নয়, এখানে খেলা হবে ‘প্লাটিপ্লাস’ নামে নতুন এক বলে।
মানিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ একটু সহযোগিতা পাচ্ছে সাবেক বাংলাদেশ অধিনায়ক আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে। কিছু তথ্য জানিয়ে উপকার করছেন বর্তমানে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের এই কর্মকর্তা। যেটা বললেন জালাল ইউনুস, ‘বুলবুল (আমিনুল) অনেক দিন ধরে চীনের ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত। সেই অভিজ্ঞতা থেকে ও বলেছে, ওখানে উইকেট হয়তো একটু স্লো হবে। আর আমাদের বলেছে, খুব ভালো অনুশীলন সুবিধার আশা নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।’
বাংলাদেশ তাহলে কোন আশাটা নিয়ে যাবে?
বাংলাদেশ দল
মোহাম্মদ আশরাফুল (অধিনায়ক), শামসুর রহমান (সহ-অধিনায়ক), নাঈম ইসলাম, ফয়সাল হোসেন, শাহাদাত হোসেন, মাহবুবুল আলম, নাজমুল হোসেন, নাজিমউদ্দিন, মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী, ডলার মাহমুদ, রনি তালুকদার, নাসির হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান, শুভাগত হোম চৌধুরী। কোচ: সারওয়ার ইমরান। দলনেতা: জালাল ইউনুস।

No comments

Powered by Blogger.