অবশেষে আফগানদের ক্রিকেট মাঠ

শরণার্থী শিবিরে বসে ক্রিকেট খেলার সেই দিন আফগানিস্তান পার করে এসেছে। বুলেট, বোমা দূরে সরিয়ে আফগানিস্তান এখন ক্রিকেট গ্রহের ‘ছোটদের রাজা’ হতে চলেছে। তাতে অবশ্য যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির ক্রিকেট-বিষয়ক সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে, তা নয়।
এখনো তাদের অনুশীলনের মাঠ খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। এখনো তারা প্রতিবেশী পাকিস্তানে জাতীয় দলের ক্যাম্প করে। এখনো দেশটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন এক স্বপ্নের নাম।
সেই স্বপ্নপূরণের পথে পা বাড়াল আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (এসিবি)। কাবুলের পশ্চিমে, পাকিস্তান সীমান্তের কাছের প্রদেশ নানগারহারে শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির কাজ। গাজী আমানুল্লাহ খান শহরতলিতে নির্মিতব্য এই স্টেডিয়ামের জন্য ৩০ একর জায়গা দিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী হাজি নাজিব জারাব।
এসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মাস পাঁচেকের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। আগামী রমজান মাসে অনুষ্ঠেয় রমজান কাপ ক্রিকেট এই স্টেডিয়ামেই আয়োজনের পরিকল্পনা।
আপাতত স্টেডিয়ামটির দর্শক ধারণক্ষমতা ৭ হাজার; তবে বাড়িয়ে পরে ৬০ হাজারেরও বেশি করা সম্ভব হবে। আপাতত এই ধারণক্ষমতা নিয়েই দেশে দু-একটি বিদেশি দলকে আমন্ত্রণ জানাতে চায় এসিবি। এসিবির প্রধান নির্বাহী হামিদ শিনওয়ারি বলছিলেন, স্টেডিয়ামে থাকবে চারটি উইকেট, একটি ক্রিকেট একাডেমি এবং একাডেমি ক্রিকেটারদের জন্য হোস্টেল।
স্টেডিয়ামটি নানগারহারে করার একটি ভালো যুক্তিও আছে। এই প্রদেশটিকে বলা যায় আফগানিস্তানের ক্রিকেট রাজধানী। এই প্রদেশেই দেশের সর্বাধিক ১০ থেকে ১৫ হাজার তরুণ ক্রিকেটার সার্বক্ষণিক খেলার সঙ্গে যুক্ত আছেন। কারণ এই প্রদেশটিতেই ক্রিকেটাররা বারো মাস খেলার সুযোগ পান। বাকি প্রদেশগুলোয় বরফ আর ঠান্ডার জন্য গ্রীষ্মে ছাড়া ক্রিকেট খেলা সম্ভব হয় না।
আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের ২৮টি দল নিয়ে এই মাসেই কাবুলে শেষ হলো জাতীয় আন্তপ্রদেশ টুর্নামেন্ট। সে টুর্নামেন্টও জিতেছে নানগারহার। ফলে এই প্রদেশেই দেশের প্রথম বড় স্টেডিয়াম হবে, এটাই স্বাভাবিক। অবশ্য এসিবি বলছে, ৩৪ প্রদেশেই তারা পর্যায়ক্রমে এই মানের স্টেডিয়াম গড়ে তুলবেন।
আফগান ক্রিকেটারদের এটা কিন্তু প্রাপ্যই।

No comments

Powered by Blogger.