কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত নোংরা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আলোচনার উদ্যোগ বর্জন করার ডাক দিয়েছেন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হুররিয়াত কনফারেন্সের প্রধান সৈয়দ আলী শাহ গিলানি। তিনি বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে ভুল ধারণা দিতে আলোচনার নামে নোংরা কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে কাশ্মীর-সংকট নিরসনে আলোচক হিসেবে একটি প্রতিনিধিদল নিয়োগ করেছে। কিন্তু আলোচক হিসেবে কাজ করে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ভারতের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়তা করা ঠিক হবে না। গতকাল সোমবার শ্রীনগরে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় গিলানি এ কথা বলেন।
গিলানি বলেন, আগামী মাসে বারাক ওবামা ভারত সফরে আসছেন। ওবামার কাছে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ভারতের আন্তরিকতা জাহির করতেই ভারত তাদের আলোচক হিসেবে নিয়োগ করেছে। গিলানির অভিযোগ, মূলত কাশ্মীর সমস্যার সমাধান নয়, প্রকৃতপক্ষে ওবামাকে ভুল ধারণা দেওয়ার জন্যই এই আলোচনার নাটক সাজানো হয়েছে।
গত রোববার নয়াদিল্লি থেকে ফেরার পর গিলানিকে গৃহবন্দী করা হয়। এ ছাড়া দিল্লিতে জনসভায় ‘বিভাজনে ইন্ধন সৃষ্টিকারী বক্তব্য’ দেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়।
গিলানি তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে সরকার ৯০টি মামলা করেছে। এটা নিয়ে ৯১টি হলো।’ তিনি বলেন, গত ঈদের দিনই তাঁরা সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবিসংবলিত একটি প্রস্তাব দিয়েছেন এবং জম্মু ও কাশ্মীরবাসী সেই প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এ কারণে নতুন করে সরকারের সঙ্গে দরকষাকষির কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দিল্লি যদি সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আন্তরিক হয়ে থাকে, তাহলে তার ওই পাঁচ দফা দাবি বিবেচনায় আনা উচিত এবং কাশ্মীর থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সহিংসতার ব্যাপারে তদন্ত করতে সরকারের আলোচকদের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী কাশ্মীরিদের সঙ্গে কথা বলার কথা রয়েছে। গিলানি কারাগারে আটক ছাত্র, শিক্ষক, আইনজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওই আলোচকদের সঙ্গে কোনো কথা না বলার আহ্বান জানান।
গিলানি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এর আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ভারত সফর করার সময় সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কারসাজিতে কাশ্মীরের ছত্তিসিংপোড়ায় পরিকল্পিতভাবে ৩৫ জন শিখকে হত্যা করা হয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সামনে কাশ্মীরের আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রমাণ করতে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরের সময় আবার যাতে এমন কোনো ঘটনা না ঘটে, সে জন্য তিনি কাশ্মীরবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.