প্রযুক্তি ফুটবলকে ‘প্লে স্টেশন গেমে’ পরিণত করবে: প্লাতিনি

প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার এই যুগে নির্ভুলভাবে খেলা পরিচালনার জন্য টেনিস ও ক্রিকেটের মতো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবলেও কেন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে না, তা নিয়ে বিতর্ক চলেছে বহু দিন ধরেই। গত বিশ্বকাপ এই বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে। বিশেষত কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের শট গোললাইন অতিক্রম করলেও রেফারি সেটাকে গোলের স্বীকৃতি না দেওয়ায় ফুটবলে গোললাইন প্রযুক্তি চালু করার জোর দাবি উঠেছিল।
বরাবরই বিরোধিতা করে এলেও ব্যাপক সমালোচনার মুখে গোললাইন প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়েছিল ফিফা। কিন্তু নিজের জায়গায় এখনো অনড় আছেন উয়েফা সভাপতি মিশেল প্লাতিনি। ফুটবলে প্রযুক্তি নিয়ে এলে এটা যে আর মানবীয় থাকবে না, তা খুব জোরের সঙ্গেই বলেছেন তিনি। প্লাতিনির ভাষায়, ফুটবল একটি মানবীয় খেলা, এখানে প্রযুক্তির ব্যবহার, এটিকে ‘প্লে স্টেশন গেমে’ পরিণত করবে।
গত সপ্তাহে ফিফার নীতিনির্ধারণী কমিটি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে গোললাইন প্রযুক্তির রূপরেখা তৈরি করতে বলেছে। এগুলো আগামী মার্চে ফিফার পরবর্তী বৈঠকের আগেই মাঠে পরীক্ষা করে দেখা হবে। কিন্তু ফিফার এই পরিকল্পনার সঙ্গে কোনোভাবেই একমত নন প্লাতিনি। প্রযুক্তি ব্যবহারের বদলে গোলবারের পেছনে দুজন অতিরিক্ত রেফারি রাখাকেই অনেক যুক্তিসঙ্গত সমাধান বলে মনে করেন তিনি।
‘একজন রেফারির পক্ষে পুরো খেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়’—এমনটি স্বীকার করলেও ফরাসি এই ফুটবল কিংবদন্তির মতে, বর্তমান সময়ে ফুটবল খেলা সম্প্রচারের জন্য মাঠে ২০টি ক্যামেরা থাকে, এই ক্যামেরাগুলো দিয়ে খেলার অনেক খুঁটিনাটিই ধরা পড়ে, কিন্তু রেফারির তো চোখ দুটি। তাঁর পক্ষে সব ব্যাপারে নজর রাখা স্বাভাবিক কারণেই সম্ভব হয় না। কিন্তু রেফারি কোনো ভুল করলে ক্যামেরাগুলো বারবার শুধু সে দিকেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে থাকে। এটা খুবই অন্যায়। ক্যামেরার মতো মাঠে যদি রেফারির সংখ্যাও বাড়ানো যায়, তাহলে খেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সুযোগ আরও বাড়বে।’
চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলাগুলোর জন্য এই মৌসুম থেকে গোলবারের পেছনে আরও দুজন অতিরিক্ত রেফারি যুক্ত করেছেন প্লাতিনি।

No comments

Powered by Blogger.