৮৮ রানে গুটিয়ে গেল ভারত

টেস্ট সিরিজ আর ওয়ানডে টুর্নামেন্টের মাঝে মাত্র দুদিন বিরতি। ডাম্বুলায় কোনো বিমানবন্দর নেই, বাসই একমাত্র ভরসা। কলম্বো থেকে পাঁচ ঘণ্টার সেই ভ্রমণ-ক্লান্তি এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থায় হেলিকপ্টারে করে ডাম্বুলায় এসেছিল ভারতীয় দল। তার পরও বোলিং-ফিল্ডিংয়ে ব্যর্থতার জন্য ক্লান্তিকে দায় দেওয়া যায়। কিন্তু ব্যাটিং?
টেন্ডুলকার-গম্ভীরকে ছাড়াও ভারতের ব্যাটিং লাইনআপকে টুর্নামেন্টের সেরা বলা যায়। কাল কিউই পেসারদের সামনে সেই ব্যাটিং লাইনআপই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল। ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর দল গুটিয়ে গেল মাত্র ৮৮ রানে, হারল ২০০ রানে। ফেবারিটদের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে উড়ন্ত সূচনা করল টুর্নামেন্টের আন্ডারডগ নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই প্রথম একশর নিচে অলআউট হলো ভারত। ডাম্বুলার রনগিরি স্টেডিয়ামের সর্বনিম্ন স্কোর এটি, অবশ্য এখানে একবার ৮৮ রান করেছিল ইংল্যান্ডও।
নিউজিল্যান্ড ২৮৮ রান করার পরই তাই ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা। ডাম্বুলার ফ্লাডলাইট ক্রিকেট উপযোগী কি না এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। কৃত্রিম আলোয় বোলাররা এখানে একটু বেশিই সাহায্য পায়। খেলা শুরুর আগে টেন স্পোর্টসে রাসেল আরনল্ড বলেছিলেন প্রথমে ব্যাট করে ২৪০ করতে পারলেই নিশ্চিন্ত। টস জেতার পর ২৫০-২৬০ কেই নিরাপদ বলেছিলেন রস টেলর। ভারতের ব্যাটিং লাইনআপের কথা ভেবে তবু ‘ম্যাচ শেষ’ বলা যাচ্ছিল না। টেন্ডুলকারকে ছাড়াই গত জুনের এশিয়া কাপে এই উইকেটে পাকিস্তানের ২৭১ রান তাড়া করেছে ভারত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সত্যি হলো বিশেষজ্ঞদের কথাই।
ভারতের শুরুটা খারাপ হয়নি। ঝোড়ো সূচনা না হলেও প্রথম উইকেটে ৩৯ রান তুলেছিলেন বীরেন্দর শেবাগ ও দিনেশ কার্তিক। সপ্তম ওভারের শেষ বলে শেবাগের আউট দিয়ে মহামারির শুরু। কিউই পেসারদের সুইং আর বাউন্সে নাকাল হয়ে আত্মসমর্পণ একের পর এক ভারতীয় ব্যাটসম্যানের। দুই ওপেনার ছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন আর কেবল রবীন্দ্র জাদেজা।
নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ছিল ভারতের ঠিক উল্টো। নেহরা-প্রাভিনের সুইংয়ে ২৮ রানেই নেই ৩ উইকেট। কিউই অধিনায়ক রস টেলর আর দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ তারকা স্কট স্টাইরিস মিলে শুরু করলেন ইনিংস মেরামতের কাজ। আক্রমণাত্মক দুই ব্যাটসম্যান শুরুতে খেলেছেন দেখেশুনে, বিপর্যয় সামলে ওঠার পর হাত খুলেছেন দুজনই। চতুর্থ উইকেটে গড়েছেন ১৯০ রানের রেকর্ড জুটি। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে ৭০ করেছিলেন টেলর, দ্বিতীয় ম্যাচে কাল করলেন ৯৫। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি চারটি ক্যাচ নিয়ে ম্যাচ-সেরাও হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। স্টাইরিস ওয়ানডেতে ফিফটি পেলেন ২৫ মাস পর। ডাম্বুলায় খেলা সর্বশেষ ম্যাচে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন নেহরা, পেলেন কালও। দারুণ বোলিং করেছেন প্রাভিন কুমারও। তবে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার আড়ালে চাপা পড়ে গেছে তাঁদের কীর্তি।

No comments

Powered by Blogger.