শিশুদের মুটিয়ে যাওয়া ঠেকাতে মিশেল ওবামার প্রচারণা

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি তিনজন শিশুর একজন শৈশবেই মোটা হওয়ার প্রবণতায় আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের মোটা হওয়ার প্রবণতা এখন একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই মহামারি থেকে মার্কিন শিশুদের রক্ষার জন্য প্রচারে নেমেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। গত মঙ্গলবার এ ব্যাপারে আয়োজিত প্রচারণা কর্মসূচি ‘লেটস মুভ’-এর মধ্যাহ্নভোজ সভায় মিশেল বলেন, ‘শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য অন্যতম বড় ঝুঁকি শৈশবে মোটা হওয়ার মহামারি ঠেকাতে আমরা বদ্ধপরিকর।’
খেলোয়াড়, কৃষক, চিকিত্সক, খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারক, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এ প্রচারণা কর্মসূচি শুরু করেছেন এই ফার্স্ট লেডি। সভায় তিনি বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে শৈশবে মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যা সমাধান করতে পরিবার, স্কুল, সম্প্রদায়, নগর পরিকল্পনাবিদ ও রাজনীতিকদের সমবেত করা হবে, যাতে জনগণ এ সম্পর্কে সচেতন হয় এবং আজকের জন্ম নেওয়া শিশুটি পরিণত বয়সে একজন স্বাস্থ্যবান মানুষ হিসেবে জীবন যাপন করতে পারে।
মিশেল ওবামা বলেন, ৩০ বছর আগের তুলনায় এখন যুক্তরাষ্ট্রে তিন গুণ বেশি শিশু শৈশবেই মোটা হওয়ার সমস্যায় আক্রান্ত। মার্কিনদের প্রতি তিনি এখনই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
সাবেক মার্কিন ফুটবল তারকা ও টেলিভিশনব্যক্তিত্ব টিকি বারবার বলেন, মোটা হওয়ার কারণে অনেক রোগের সংক্রমণ ও স্থায়িত্ব বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, মার্কিন শিশুদের এই প্রজন্মটিই সম্ভবত প্রথম প্রজন্ম হতে যাচ্ছে, যাদের আয়ুষ্কাল বাবা-মায়ের চেয়ে কম হবে।
আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকসের প্রেসিডেন্ট জুডিথ পালফ্রে এই মুটিয়ে যাওয়ার জন্য শরীরচর্চা কমিয়ে দেওয়া এবং খাদ্যতালিকায় অনেক বেশি চর্বি ও শর্করাজাতীয় খাবারের অন্তর্ভুক্তিকে দায়ী করেন। তিনি জানান, উন্নত বিশ্বে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মোটা শিশু রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সংখ্যা অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। ছয় থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন মুটিয়ে যাওয়ার প্রবণতায় আক্রান্ত।
মিশেল ওবামা বলেন, ‘আমাদের সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীতে চাকরির ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে সাধারণ অযোগ্যতাটি হচ্ছে মোটা হওয়া।’
শৈশবে মোটা হওয়া থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ জরুরি। এ ব্যাপারে নিজেই উদাহরণ তৈরি করেছেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি। স্থানীয় স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সহায়তায় তিনি হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে একটি সবজিবাগান করেছেন।

No comments

Powered by Blogger.