সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির বিরোধিতায় গ্রিসে ধর্মঘট

বিপুল বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় গ্রিস সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার বিরোধিতা করে সে দেশের সরকারি খাতের কর্মীরা গতকাল বুধবার ধর্মঘট করেন। আর এতে বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে, অনেক স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। আর হাসপাতালগুলো শুধু জরুরি সেবা চালু রেখেছে। সরকারি কর্মীদের বেতন স্থগিত করা, অবসরভাতার কাঠামো সংস্কার ও কর আদায় আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা ঘোষণার পর ওই ধর্মঘট শুরু করেন কর্মীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে একটি সম্মেলনে গ্রিসের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা। গ্রিসের পরিস্থিতি ইউরোর গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপানড্রেউসের সরকার গত মঙ্গলবার ঘোষণা করে, অবসরভাতার ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে কর্মীদের অবসরের গড় বয়সসীমা বাড়ানো হবে। এ ছাড়া সরকারি কর্মীদের বেতন স্থগিত করার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া গত সপ্তাহে জ্বালানি তেলের (পেট্রল) দামও বাড়িয়েছে সরকার।
প্রচণ্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করেছেন ধর্মঘটী কর্মী ও অবসরভাতাভোগীরা। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েক শ সরকারি কর্মী ও অবসরভাতাভোগী রাজধানী এথেন্সের কেন্দ্রস্থলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জড়ো হন।
বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, একটি স্থানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের দমাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এ সময় কয়েকজন বিক্ষোভকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। তবে এই বিশৃঙ্খলা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। গ্রিসের শ্রমিক সংঘগুলো দাবি করেছে, সরকারের এই কৃচ্ছ্রসাধনের পরিকল্পনা শ্রমিক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।
এথেন্সের সমাবেশে গ্রিসের কমিউনিস্ট পার্টির সহযোগী শ্রমিক সংঘের সদস্য ক্রিস্তোস কািসওতিস বলেন, ‘এটা শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। আমরাও যুদ্ধের মাধ্যমে এর জবাব দেব। সরকার এই নীতি পরিবর্তন না করা পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’
তবে এথেন্সের অনেকেই মনে করেন, সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। তাঁদের মতে, সরকারি কর্মীদের ধর্মঘট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী কাতেরিনা বলেন, ‘আমাদের কৃচ্ছ্রসাধনের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে, তা না হলে দেশ সংকট থেকে বের হয়ে আসতে পারবে না। অতীতের ভুলের জন্য আমাদের মাশুল দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.