এনামুল বাদ, ফিরলেন কাঞ্চন

সাফ ফুটবলে খেলা জাতীয় ফুটবল দলের ১০ জন খেলোয়াড়ই নেই কাল ঘোষিত এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের দলে। দক্ষিণ এশীয় গেমসে (এসএ গেমস) সোনাজয়ী দলের ৫ জনকেও আপাতত বিদায় নিতে হয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল দলে আসা-যাওয়ার মিছিল চলছেই।
এসএ গেমসের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের স্ট্রাইকার এনামুল, ইউসুফ, ডিফেন্ডার আরিফ, মিডফিল্ডার জাহেদ পারভেজ ও গোলরক্ষক হিমেল জায়গা পাননি চ্যালেঞ্জ কাপের জাতীয় দলে। গেমস দলের বাকি ১৫ জনের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ৫ জনকে—গোলরক্ষক বিপ্লব, স্ট্রাইকার রোকনুজ্জামান কাঞ্চন, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, মোবারক হোসেন ও মিডফিল্ডার শেখ আলমগীর কবির ওরফে রানা।
কাঞ্চন সর্বশেষ ২০০৬ সালে আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির সময় জাতীয় দলে খেলেছেন। প্রায় চার বছর পর দলে ফিরে আসতে পারলেন তিনি। জোরান জর্জেভিচ কোচ হয়ে আসার পর কাঞ্চনকে একটা ম্যাচে দেখেই প্রাথমিক দলে ডেকেছেন। তার পর অনুশীলনে দেখে তাঁর মনে ধরে গেছে। এ বছর কাঞ্চন মুক্তিযোদ্ধার হয়ে খেলছেন এবং দলটির অধিনায়কও তিনি। হারিয়ে যেতে বসা এই স্ট্রাইকার এ মৌসুমে বাংলাদেশ লিগে ৪ ম্যাচে গোল করেছেন একটি।
‘মুক্তিযোদ্ধায় ছিলাম কয়েক বছর। সবকিছু মিলিয়েই হয়তো এত দিন ডাক পাইনি। আবার ফিরে আসতে পেরে জায়গা ধরে রাখতে চাইব’—বলছিলেন কাঞ্চন।
সাফ ফুটবলে দুই বিদেশির সঙ্গে ৪ গোল করে যৌথভাবে গোলদাতার শীর্ষে। ওই টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হলেও এনামুল ছাড়া বাংলাদেশ দল ভাবাই যেত না তখন। আমিনুল আর ওয়ালি ফয়সালের সঙ্গে এসএ গেমসের দলে তৃতীয় সিনিয়র হিসেবে তাঁকে জায়গা দেওয়া হলো। গেমস ফুটবলে এমিলি গোল পাননি, বাংলাদেশের ১৩ গোলের দুটি এনামুলের।
বাদ পড়ার খবরে কিছুটা হতাশ এনামুল। ‘চ্যালেঞ্জ কাপ, সাফ ফুটবল, লিগ, এসএ গেমসে ধারাবাহিকভাবে গোল করেছি। কোচ কী কারণে বাদ দিয়েছেন সেটা বুঝতে পারছি না’—এই হলো এনামুলের প্রতিক্রিয়া।
নাসিরউদ্দিন নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন। একসময় সেনাবাহিনীতে খেলতেন, এবার এসেছেন ঢাকা মোহামেডানে। সাইড লাইনে কাটছিল সময়। নাইজেরীয় স্ট্রাইকার বুকোলা ওলালেকান জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় এক ম্যাচ মাঠের বাইরে, একাদশে সুযোগ পাওয়া নাসির গোল করলেন ওই ম্যাচে। ঘটনাক্রমে জর্জেভিচের সহকারীরা তাঁকে দেখেছেন এবং পছন্দ করে ফেলেছেন।
শেখ রাসেলের মোবারক, ইমতিয়াজ সুলতান ওরফে জিতু, মোহামেডানের আলমগীর কবির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বড় একটা সুযোগই পেয়ে গেলেন জাতীয় দলে ঠাঁই পেয়ে। সাফ, এসএ গেমস দলে ছিলেন না তাঁরা। ছিলেন না এসএস গেমসের দলেও। আবার এসএ গেমসে জায়গা পাওয়ার পর এবারই প্রথম জাতীয় দলের স্কোয়াডে এলেন ডিফেন্ডার মিন্টু শেখ, রেজাউল, স্ট্রাইকার তৌহিদুল আলম ওরফে সবুজ। এসএ গেমসে ভালো খেলারই পুরস্কার এল তাঁদের হাতে।
দুর্ভাগ্য স্ট্রাইকার ইউসুফের। এসএ গেমসে মোটামুটি ভালো খেললেও কাঁধের ইনজুরির কারণে জাতীয় দলের স্কোয়াডে সুযোগ পেলেন না। জাহিদ পারভেজও কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় বিবেচনায় আসেননি বলে জানানো হয়েছে। ইনজুরি কাটিয়ে ফিট হলেও তাঁকে আরও সময় দেওয়া হচ্ছে। তাই চ্যালেঞ্জ কাপের দলে নেই আরিফ। গোলরক্ষক হিমেল মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলেছেন, সিনিয়র দলে বিপ্লবকেই আমিনুলের সঙ্গে রাখায় হিমেলের জায়গা মেলে জাতীয় দলে।
কলম্বোয় ১৬, ১৮ ও ২০ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে তাজিকিস্তান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গ্রুপ ম্যাচ বাংলাদেশের। আজ বেলা ১১টায় বাফুফে ভবনে খেলোয়াড়দের রিপোর্টিং। কলম্বো যাওয়ার আগে দুই-তিন দিন ঢাকাতেই অনুশীলন চলবে।

No comments

Powered by Blogger.