বিতর্কিত সমুদ্রসীমায় গোলা নিক্ষেপ করেছে দুই কোরিয়া

উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বিতর্কিত সমুদ্রসীমায় দুই দেশের সেনারা গতকাল বুধবার গোলা নিক্ষপ করেছে। উত্তর কোরিয়া প্রথমে গোলা নিক্ষেপ করলে দক্ষিণ কোরিয়াও পাল্টা জবাব দেয়। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। সিউল এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এটাকে পিয়ংইয়ংয়ের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে। তবে পিয়ংইয়ং বলেছে, নিয়মিত সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে তারা গোলা নিক্ষেপ করেছে। খবর এপি ও এএফপির।
সিউলে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া গতকাল স্থানীয় সময় সকাল নয়টায় নিজ ভূখণ্ড থেকে ৩০টির মতো গোলা নিক্ষেপ করে। দক্ষিণ কোরিয়া তাত্ক্ষণিকভাবে সমুদ্রসীমার পার্শ্ববর্তী একটি দ্বীপের নৌ-ঘাঁটি থেকে ১০০ গোলা নিক্ষেপ করে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি অথবা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার নিক্ষেপ করা গোলা সে দেশেরই সমুদ্রসীমায় পড়েছে। আর দক্ষিণ কোরীয় সেনারা শূন্যে গোলা নিক্ষেপ করেছে।
উত্তর কোরিয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, বার্ষিক নিয়মিত সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে উপকূলীয় এলাকায় তারা গোলা নিক্ষেপ করেছে। সে দেশের কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থা সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফের বরাত দিয়ে বলেছে, ভবিষ্যতে একই সমুদ্রসীমায় সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে আরও গোলা নিক্ষেপ করা হবে।
দক্ষিণ কোরীয় বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, গতকাল বিকেলের দিকেও গোলা নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরীয় সেনাবাহিনীর তরফ থেকে নিশ্চিত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
উত্তর কোরিয়া বিতর্কিত সমুদ্রসীমা অঞ্চলে নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ (নো সেইল জোন) ঘোষণার দুই দিনের মাথায় এ গোলা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটল।
বিতর্কিত সমুদ্রসীমায় গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তর কোরীয় সেনাবাহিনীকে বার্তা পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে সিউল বলেছে, গোলা নিক্ষেপ করে শুধু শুধু উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নৌযান চলাচল নিষিদ্ধসংক্রান্ত ঘোষণা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, এটা কোরীয় যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের শীর্ষস্থানীয় মুখপাত্র চাং চাং-কিল প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং-বাকের পক্ষে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন। প্রেসিডেন্ট লি বর্তমানে ভারত সফর করছেন। গোলা নিক্ষেপের ঘটনা তাঁকে অবহিত করা হয়েছে।
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে জাতিসংঘ দুই দেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে উত্তর কোরিয়া তার সমুদ্রসীমা আরও দক্ষিণে সম্প্রসারণের ব্যাপারে জোর দেয়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলে আসছে।

No comments

Powered by Blogger.