উত্তর কোরিয়ার আবার গোলা নিক্ষেপ, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

উত্তর কোরিয়া দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বিতর্কিত সমুদ্রসীমায় গোলা নিক্ষেপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধের আহ্বান জানালেও পিয়ংইয়ং তা গ্রাহ্য করেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ বলেছেন, উত্তর কোরিয়া গতকাল স্থানীয় সময় সকাল আটটা ১৫ মিনিটে উপকূলবর্তী ঘাঁটি থেকে গোলা ছুড়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়নপিয়ংয়ের দ্বীপের কাছে এগুলো পড়লেও সে দেশের সমুদ্রসীমায় পড়েনি।
এর আগে গত বুধবার উত্তর কোরিয়া দুই দেশের বিতর্কিত সমুদ্রসীমা অঞ্চলে ৮০টিরও বেশি গোলা নিক্ষেপ করে। জবাবে দক্ষিণ কোরিয়াও ১০০টি গোলা নিক্ষেপ করে। এসব গোলায় ক্ষয়ক্ষতি অথবা হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে কোরীয় উপদ্বীপে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
সিউল গোলা নিক্ষেপের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ঘটনাকে পিয়ংইয়ংয়ের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে। তবে পিয়ংইয়ং বলছে, নিয়মিত সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে তারা গোলা নিক্ষেপ করেছে।
উত্তর কোরিয়া বিতর্কিত সমুদ্রসীমা অঞ্চলে নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ (নো সেইল জোন) ঘোষণার দুই দিনের মাথায় গত বুধবার গোলা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। গতকালও এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে পিয়ংইয়ং।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফিলিপ ক্রাউলি উত্তর কোরিয়ার নো সেইল জোন ঘোষণা এবং গোলা নিক্ষেপের ঘটনাকে উসকানিমূলক তত্পরতা বলে অভিহিত করেছেন।
১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর জাতিসংঘ দুই দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে উত্তর কোরিয়া জাতিসংঘের এই সমুদ্রসীমা নির্ধারণ অস্বীকার করে আরও দক্ষিণে তার সীমা সম্প্রসারণের দাবি জানায়। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহুদিন ধরে উত্তেজনা চলে আসছে।
২০০৯ সালের নভেম্বরে দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ হয়। এতে উত্তর কোরিয়ার একজন নাবিক নিহত এবং আরও তিনজন আহত হন। এ ছাড়া ১৯৯৯ ও ২০০২ সালেও দুই দেশের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁদের কাছে তথ্য আছে, উত্তর কোরিয়ার সামরিক মহড়া আজ শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া এ অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এটাই বোঝাতে চাইছে যে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তিচুক্তি জরুরি হয়ে পড়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার পত্রিকা কোসুন ইলবো বলেছে, উত্তর কোরিয়া নর্দার্ন লিমিট লাইনে (এনএলএল) গোলা নিক্ষেপ করলে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবে না বলে সিউল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণেরও চিন্তাভাবনা করছে বলে পত্রিকাটি জানায়।

No comments

Powered by Blogger.