পুনঃতদন্তে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উন্মোচিত হবে

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পুনঃতদন্তে আসল রহস্য উন্মোচিত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা হৃদয়বিদারক, এ ঘটনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ঘটেছে। পুনঃতদন্তে এই ঘটনার  রহস্য উন্মোচিত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। গতকাল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের কয়েকজন অফিসার মিলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছিলাম, আমাদের সৃষ্ট এই সেনাবাহিনী জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেছিলো, প্রত্যেকটি আন্দোলনে-সংগ্রামে জনগণের সাথী হয়ে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়েছিলো। কিন্তু সেই সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করার জন্যই প্রাথমিক পদক্ষেপ হলো এই বিডিআর হত্যাকাণ্ড। আমরা আশা করবো, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্মোহভাবে নিরপেক্ষভাবে এই ঘটনার তদন্ত করবেন এবং বিচারের কাজ দ্রুত শুরু করবেন।

তিনি বলেন, ওই বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনেক নিরীহ ব্যক্তিকে দণ্ডিত করা হয়েছে, অনেক দোষী ব্যক্তি শাস্তির আওতার বাইরে চলে গিয়েছে। তবুও আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি তারা বিএনপি’র অনুরোধে এই ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার রহস্য উন্মোচনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এবং এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পথপরিক্রমার জন্য অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যে সকল দেশ এবং প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দালাল হিসেবে অপকর্মে লিপ্ত ছিল তাদের সকলের চেহারা উন্মোচিত হোক জনগণের স্বার্থে। আমরা একটা নতুন যাত্রা শুরু করতে চাই। আমাদের দল থেকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সর্বধরনের সাহায্য-সহযোগিতা করবো।
মেজর হাফিজ বলেন, আমরা অতিঅল্প সময়ের মধ্যে এই নারকীয় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের একটা সুষ্ঠু পরিণতি দেখতে চাই, বিচার চাই যাতে করে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসমূহ তাদের যাতে অন্তর শান্ত হয়।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেভাবে পুনঃতদন্ত ও পুনঃবিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে- এটি যাতে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে আমরা বিএনপি’র তরফ থেকে তাদেরকে সর্বতোভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করবো।

সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে এবং সাধারণ নাগরিকরাও বর্তমান সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ড ক্লোজড মনিটরিং করছি। এখন পর্যন্ত যে সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে শেষ মুহূর্তে দ্রুত সরকার থেকে বাইরে নিক্ষেপ করার জন্য এবং ছাত্র-জনতার বিপ্লবে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান এবং সেনাবাহিনী এবং সামরিক বাহিনীর সকল সদস্যদের আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) একেএম শামসুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.