অর্থ কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত ফিলিপাইনের সাবেক মেয়র ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেপ্তার

অর্থ কেলেঙ্কারি এবং চীনা অপরাধী সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ফিলিপাইনের সাবেক মেয়র অ্যালিস গুওকে গ্রেপ্তার করেছে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তাকে মেয়র পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছিল। এরপর তিনি নিজের পরিচয় গোপন করে দেশ থেকে পালিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় পালিয়ে যান। অ্যালিসের চীনা নাগরিকত্ব রয়েছে বলেও প্রমাণ পেয়েছে ফিলিপাইনের গোয়েন্দারা। চীনা পরিচয় পত্রে তিনি গুও হুয়া পিং নামে পরিচিত। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, অ্যালিসের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। ফিলিপাইন তার অপরাধের বিচার করতে ইন্দোনেশিয়ার কাছে তাকে ফেরত চেয়েছে। অ্যালিসের দাবি তিনি জন্মসূত্রে ফিলিপাইনের নাগরিক। তিনি তার বিরুদ্ধে তোলা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্টো তিনি অভিযোগকারীদের ‘দূষিত’ বলে উল্লেখ করেছেন। ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে, ইন্দোনেশিয়া তাদেরকে নিশ্চিত করেছে যে অ্যালিস গুও বর্তমানে দেশটির পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এ মামলাটি সামনে এল। এ অঞ্চল নিয়ে চীনের সঙ্গেও ফিলিপাইনের সম্পর্ক বেশ উত্তপ্ত। অ্যালিসকে বুধবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার টাঙ্গেরং শহর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দেশটির একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বলেছেন, ‘আইনের হাত লম্বা এবং তা অপরাধীর কাছে পৌঁছাবেই। ন্যায়বিচার থেকে পালানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে বলে অ্যালিসকে সতর্ক করেছেন তিনি। এক বিবৃতিতে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমাদের দুই সরকারের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা এই গ্রেপ্তারকে সম্ভব করেছে। আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই অ্যালিস গুওকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা চূড়ান্ত করবো। ফিলিপাইনের জাতীয় তদন্ত ব্যুরোর পরিচালক জেইম সান্তিয়াগো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাকে (অ্যালিস গুও) ফিরিয়ে আনার পর প্রথমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরে তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে। তবে এ বিষয়ে এখনও অ্যালিসের আইনজীবী স্টিফেন ডেভিড কোনো মন্তব্য করেননি। ফিলিপাইনের অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) এবং দেশটির আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গত মাসে যৌথভাবে অ্যালিস এবং অন্য ৩৫ জনের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগে একাধিক অর্থ পাচারের অভিযোগ দায়ের করে। ওই অভিযোগ পত্রে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ১০০ মিলিয়ন পেসোর বেশি অর্থ পাচারের অভিযোগ করা হয়েছে। অ্যালিস নিজেকে ফিলিপাইনের নাগরিক বলে দাবি করেছিলেন। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, তার আঙ্গুলের ছাপের সাথে চীনা নাগরিক গুও হুয়া পিংয়ের আঙ্গুলের ছাপের হুবহু মিল রয়েছে। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে অ্যালিস এবং গুও হুয়া পিং একই ব্যক্তি। তিনি ফিলিপাইনের টারলাক প্রদেশের বামবান শহরের মেয়র পদে ছিলেন। অর্থ পাচারের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পদ থেকে অ্যালিসকে অপসারণ করা হয়। পরে গত জুলাই মাসে তিনি পরিচয় গোপন করে দেশ থেকে পালিয়ে যান। আগস্টে জাকার্তায় পৌঁছানোর আগে তিনি প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করেছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.