রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে নিহত ৫১

ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে কমপক্ষে ৫১ জন নিহত এবং ২৭১ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ইউক্রেনের পোলতাভা অঞ্চলে এ ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে পোলতাভা অঞ্চলের একটি সামরিক একাডেমি এবং একটি হাসপাতালের ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ হামলায় বেশ কয়েকজন ইউক্রেনীয় সামরিক সেনাও নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনী। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, হামলা শুরুর পর সেখান থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার কোনো সময় তারা পায়নি। তারা সতর্ক সাইরেন বাজালেও ঘটনাস্থল থেকে লোকজন নিজেদের আত্মরক্ষার কোনো সময় পাইনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, মস্কোকে এর জন্য চড়ামূল্য দিতে হবে। পরবর্তীতে আকাশ পথে এমন হামলা হলে তা ইউক্রেন নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই প্রতিহত করবে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। তবে এখনও এই হামলার বিষয়ে মুখ খোলেনি মস্কো। স্থানীয় বাসিন্দারা গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর তাদের দালানের জানালাগুলো কেঁপে উঠেছিল।

বিবিসি নিকিতা পেট্রোভ নামের প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেছেন। তিনি একজন ক্যাডেট। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে তিনি পোলতাভা মিলিটারি কমিউনিকেশনস ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন। ২৬ বছর বয়সী এই ক্যাডেট বলেছেন, ‘মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে এই হামলা করা হয়েছে। প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের মাত্র তিন সেকেন্ডের মধ্যেই দ্বিতীয়টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। ভয়ার্ত ওই শব্দ শুনে আমি দৌড়ে বাহিরে বের হয়ে আসি। দেখলাম আমাদের ইনস্টিটিউটের চারপাশ কালো ধোঁয়ায় ঢেকে রয়েছে। অনেকেই সেখানে দাঁড়িয়ে ধূমপান করছিল এবং মুহূর্তের মধ্যেই কয়েকজন মারা গেল।’ অস্ত্রের এমন দুর্বিষহ হামলা স্বচক্ষে দেখে মানসিকভাবে অসুস্থবোধ করছেন বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শী এই ক্যাডেট। তিনি বলেছেন, সেখানে অনেক রক্ত আর অনেক মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, সকাল ৯টা ৮ মিনিটে সতর্ক সাইরেন বাজানো হয়। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে শুরু করে। কয়েকদিন আগে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন জেলেনস্কির পাঠানো একটি দল। তারা ওয়াশিংটনের বৈঠকে মার্কিন প্রশাসনের কাছে তাদের দেয়া সকল অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন চেয়েছিলেন। মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে এই বৈঠকের পরই ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এমন ভয়াবহ হামলা চালালো রাশিয়া। উল্লেখ্য, পশ্চিমা দেশগুলো কিয়েভকে ভারী অস্ত্র দিলেও সকল অস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন করেনি। এতে বেশ বিচলিত মনোভাব প্রকাশ করেছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।

No comments

Powered by Blogger.