সমুদ্রপথে ফ্রান্স থেকে বৃটেন যাওয়ার পথে ১২ অভিবাসীর মৃত্যু

ফ্রান্স থেকে সমুদ্রপথে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে বৃটেনে যাওয়ার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তারা উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে এ বছরের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা এটি। এ দুর্ঘটনায় এখনও দুজন অভিবাসী নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল ডারমানি। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ফরাসি উপকূলের বুলন-সুর-মে শহর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে উইমেরু শহরে কয়েক ডজন যাত্রী নিয়ে তাদের নৌকাটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। দেশটির সামুদ্রিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা জরুরি পরিষেবা চালু করেছে এবং আহতদের জরুরি চিকিৎসা সহায়তা সরবরাহ করা হয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নিহতদের মধ্যে তিনজন নাবালকও রয়েছে। এটি এ বছরের সবচেয়ে মারাত্মক বিপর্যয় যেখানে ইতিমধ্যে ২৫ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত বছর ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

ফরাসি ও বৃটিশ সরকার বছরের পর বছর ধরে অভিবাসীদের অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করার চেষ্টা করছে। অভিবাসীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট নৌকায় করে ফ্রান্স থেকে ইংল্যান্ডে যাওয়ার জন্য দালালদের জনপ্রতি হাজার হাজার ইউরো প্রদান করে। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার মঙ্গলবারের মৃত্যুকে ভয়ংকর ও গভীর দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মানুষের জীবন নিয়ে এই ভয়াবহ এবং নির্দয় বাণিজ্যের পেছনে জড়িত চক্রগুলোর সমালোচনা করে বলেছেন, তারা তাদের মুনাফা ছাড়া অন্য কিছুর পরোয়া করে না। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন এই গ্রীষ্মের শুরুতে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, শুধু সোমবারই ৩৫১ জন অভিবাসী ছোট ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। এ বছর ২১ হাজার ৬১৫ জন অভিবাসী এভাবে যাত্রা করেছেন। এভাবে ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পার হওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এর আগে ২০২১ সালের নভেম্বরে ২৭ জন অভিবাসী মারা গিয়েছিলেন। তাদের নৌকাটি মারাত্মকভাবে ডুবে যায়। ফরাসি কর্তৃপক্ষ অভিবাসীদের পানিতে নামতে বাধা দিতে চায়, কিন্তু তারা সমুদ্রপথে যাত্রা শুরু করার পর কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে উদ্ধার করা ছাড়া অন্যকোনো হস্তক্ষেপ করে না।
সূত্র- ভয়েস অব আমেরিকা।


No comments

Powered by Blogger.