‘জলবায়ু সংক্রান্ত নীতি ও পরিকল্পনার সংস্কার প্রয়োজন’

বিগত সরকারের করা বেশ কয়েকটি জলবায়ু সংক্রান্ত জাতীয় নীতি ও পরিকল্পনা অগণতান্ত্রিকভাবে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিদেশি পরামর্শকদের দিয়ে করা হয়েছে বলে দাবি করেছে নাগরিক সংগঠন ও উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের জোট ‘জলবায়ু ন্যায্যতা জোট-বাংলাদেশ’। তারা বলছে, এসব জলবায়ু নীতি ও পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কার প্রয়োজন।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিপিআরডি) নেতৃত্বাধীন ৩৯টি নাগরিক সংগঠন ও উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনের জোট ‘জলবায়ু ন্যায্যতা জোট-বাংলাদেশ’-এর পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে কয়েকটি জাতীয় নীতি ও পরিকল্পনার প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য বিভিন্ন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী ও ‘জলবায়ু ন্যায্যতা জোট- বাংলাদেশ’- এর সমন্বয়কারী মো. শামছুদ্দোহা বলেন, ‘‘জলবায়ু অর্থায়নের জাতীয় তহবিল ‘বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ)’ ও এর আইনি কাঠামো ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট অ্যাক্ট’-এ দলীয় সরকার, আমলাতন্ত্র ও পেশাজীবীদের আধিপত্য সর্বোতভাবে নিশ্চিত হয়েছে এবং এতে অবাধ দুর্নীতির সুযোগ তৈরি করেছে। বিসিসিটিএফ পরিচালনার জন্য ১৭ সদস্য বিশিষ্ট ট্রাস্টি বোর্ডের ১৪ জনই মন্ত্রী ও একজন সচিব। এছাড়া দুইজন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি রয়েছেন সরকার দলীয় মন্ত্রী বা ফান্ড বোর্ডের আমন্ত্রণে বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন, যারা প্রকারান্তরে দলীয় সরকারেরই অংশ।”
‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাতিলের দাবি জানিয়ে শামছুদ্দোহা বলেন, বিগত সরকারের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়কারীর একক তত্ত্বাবধানে কোনো ধরনের অংশীজন আলোচনা ছাড়াই বিদেশি পরামর্শকদের দ্বারা এ পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয়।
এটি দেশের অন্যান্য পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন এবং বিদেশি ঋণনির্ভর। এছাড়া জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার স্থানীয়করণের এবং অঞ্চলভিত্তিক জলবায়ু ঝুঁকিগ্রস্ততা নিরূপণের মাধ্যমে স্থানীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়নের দাবিও জানান তিনি।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও এর জাতীয় নীতি-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় এখনো গণতন্ত্র এবং স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দুর্যোগের আধিক্য ও তীব্রতা পূর্বানুমিত হলেও আমাদের প্রস্তুতি এখনও কাগুজে পরিকল্পনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন সুশীলনের উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন ফারুক, নাগরিক উদ্যোগের গবেষক ফারহান হোসেন জয়, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের উপ-ব্যবস্থাপক জনাব আহসানুল ওয়াহেদসহ জোটের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা।

No comments

Powered by Blogger.