রাসিক কর্মচারী ডালিমের এত সম্পদের উৎস কি?

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের উচ্চমান সহকারী আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ওরফে ডালিম। বর্তমানে তিনি রাসিকের ভারপ্রাপ্ত স্টেট অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বেতন ছাড়াও উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহী নগরীতে কিনেছেন একাধিক ফ্ল্যাট ও জমি। ফ্ল্যাটগুলোতে ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন করেছেন লাখ লাখ টাকায়। উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি করে এমন বিলাসী জীবনযাপন করেন তিনি। এ নিয়ে চলতি বছরের ১৮ই সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালকের কাছে আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ওরফে ডালিমের সম্পদের উৎসের সন্ধান ও তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন মনিরুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। রাসিকের প্রশাসক বরাবর একই অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি উপশহর এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগের অনুলিপি রাসিকের প্রশাসক, রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, দুদকের চেয়ারম্যান, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টা বরাবর দেয়া হয়েছে। দুদকে দেয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের স্টেট অফিসার পদে (ভারপ্রাপ্ত) কর্মরত আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ওরফে ডালিম আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে করপোরেশনের বেতন ছাড়াও উৎকোচ গ্রহণ করে অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। সিটি করপোরেশনে স্টেট অফিসার পদে চাকরির সুবাদে তিনি নগরের বিভিন্ন স্থানের জায়গা-জমি দখল ও সুযোগ বুঝে বিক্রেতাকে জিম্মি করে কম দামে কিনে নেন। নিজের নাম ছাড়াও স্বজনদের নামে অর্থ-সম্পদ গড়েছেন বলে শোনা যায়। আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ওরফে ডালিমের উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগরের শাহমখদুম থানার মোড়ে মেট্রোপলিটন কলেজের সামনে ৪০ কাঠা জমি। ওই জমির আনুমানিক মূল্য ৪০ কোটি টাকা। জমি কেনার সময় রাজস্ব ফাঁকি দিতে নামমাত্র মূল্যে জমিটি রেজিস্ট্রি করেছেন। তবে ওই জমিতে আঞ্জুমান নেসা নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এটি আঞ্জুমানের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া উল্লেখ করা হয়েছে। জমিটি আঞ্জুমানের সন্তানেরা দাবি করছেন। আবার একই জমিতে স্টেট অফিসার আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ওরফে ডালিম নিজ নামে সাইনবোর্ড লাগিয়েছিলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাসিকের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে যোগসাজোশ করে বিভিন্ন জমি হাতিয়েছেন। সেগুলো নামমাত্র মূল্য দিয়ে কেনার নামে দখল করেছেন। স্টেট অফিসার হিসেবে তার বেতন দিয়ে এত টাকার মালিক হওয়া সম্ভব নয়। বনলতা আবাসিকে তার ৪ কাঠা জমি রয়েছে। রাজশাহীর উপশহরে আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ও তার স্ত্রীর নামে কোটি টাকার উপরে মূল্যমানের ৩টি ফ্ল্যাটের বায়নামা করা হয়েছে। যদিও সেই ফ্ল্যাটের টাকা পরিশোধ না করেই দখলের চেষ্টা করেছিলেন। ১টিতে তিনি ইতিমধ্যেই বসবাস করেন। শহরে আরও কয়েকটি দামি ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে লোকমুখে শোনা যায়। উচ্চমান সহকারী পদে চাকরি করে সেই অর্থ দিয়ে এত অর্থ-সম্পদের মালিক হওয়া সম্ভব নয়। ডালিমের বিষয়ে তদন্ত করলে সত্যতা বের হয়ে আসবে বলে অভিযোগে দাবি করা হয়। এ বিষয়ে রাসিকের উচ্চমান সহকারী আবু নূর মোহাম্মদ মতিউর রহমান ওরফে ডালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম শরীফ উদ্দিন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
mzamin

No comments

Powered by Blogger.