বিনিয়োগে প্রধান বাধা দুর্নীতি: বার্নিকাট

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, দুর্নীতি ও অবকাঠামো দুর্বলতা বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) প্রধান প্রতিবন্ধকতা। এ কারণেই এফডিআই খুব বেশি বাড়ছে না। ব্যবসা পরিচালনা প্রক্রিয়া সহজ করা নিয়ে সরকারের অনেক উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে উন্নয়ন তেমন একটা দৃশ্যমান নয়। ঢাকায় মার্কিন পণ্য ও সেবা প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে এ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন তিনি। প্রদর্শনীর যৌথ আয়োজক মার্কিন দূতাবাস ও আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে তিন দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হবে বৃহস্পতিবার। তবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেছেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের উন্নতি অসাধারণ। একই সময়ে অন্য যে কোন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশেষভাবে লক্ষণীয়। হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কমার্স অ্যাডভোকেসি সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ম্যালকম বার্ক, অ্যামচেমের সাবেক সভাপতি আফতাব-উল ইসলাম, সংগঠনের সহ-সভাপতি শাদাব আহম্মেদ খান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
গণতন্ত্র না উন্নয়ন—সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'দু'টোই প্রয়োজন। এর একটি অন্যটি হাত ধরে এগিয়ে যায়। দেশ উন্নত হলে জনগণকে প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। আবার আন্দোলন ও কথা বলার স্বাধীনতাও থাকতে হয়।' তবে এ বিষয়ে কোন দেশের নাম উল্লেখ করেননি বার্নিকাট। মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা (জিএসপি) ফিরিয়ে দেওয়া সম্পর্কিত অপর প্রশ্নের জবাবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, 'এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসন থেকে যে কর্মপরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে তা এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। তৈরি পোশাক খাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন হয়েছে সত্য। তবে শ্রমঅধিকার প্রশ্নে উন্নয়ন এখনও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়নি। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থার (আইএলও) এ বিষয়ক চার অনুচ্ছেদের অগ্রগতি সন্তোষজনক মানের নয়।' প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসের পর কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা না থাকার অভিযোগ এনে একই বছরের সেপ্টেম্বরে জিএসপি স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রসঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, 'স্থগিত হওয়ার আগেও খুব কম পণ্যই জিএসপি সুবিধা পেত। প্রধান পণ্য তৈরি পোশাক এ সুবিধার আওতায় ছিল না। তবে এ পণ্যের রফতানি এখন বরং বাড়ছে।' দু'দেশের মধ্যকার বাণিজ্য অগ্রগতি সম্পর্কে বার্নিকাট বলেন, 'গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য বেড়েছে ৭ গুণ। ১০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য এখন ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।' এ হার তারা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছেন উল্লেখ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, তার দেশের উদ্যোক্তারা এদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে চান।

No comments

Powered by Blogger.