আফগানিস্তানে সামরিক ঘাঁটি গড়ছে চীন

যুদ্ধকবলিত আফগানিস্তানের বিদ্রোহীরা চীনে অনুপ্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে চীন। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আফগানিস্তানে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলতে কাবুলের সাথে আলোচনা করছে বেইজিং। আফগান কর্মকর্তারা এ খবর জানিয়েছেন। আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত ও পাহাড়ি অঞ্চল ওয়াখান করিডোরে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলতে আগ্রহী চীন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে সেখানে চীন ও আফগান সেনারা যৌথ টহল দিচ্ছে। চীনের জিনজিয়াং সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত এই অঞ্চলটি আফগানিস্তানের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। চলমান সঙ্ঘাত ও সংঘর্ষ এখানে খুব বেশি প্রভাব ফেলেনি। এখানকার বাসিন্দারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। অঞ্চলটির বাসিন্দারা জানান, স্থানীয়দের মধ্যে চীনা ভ্রমণকারীদের নিয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে। চীনের সামরিক ঘাঁটি গড়ে তোলার এই পরিকল্পনার সাথে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অংশ।
দক্ষিণ এশিয়ায় চীন অবকাঠামো খাতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। আফগানিস্তানের অস্থিতিশীলতা পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। বেইজিংয়ের আশঙ্কা, পূর্ব তুর্কিস্তান ইসলামি আন্দোলনের নির্বাসিত উইঘুর সম্প্রদায়ের সদস্যরা আফগানিস্তানের ওয়াখান অঞ্চল ব্যবহার করে জিনজিয়াং প্রদেশে হামলা চালাচ্ছে। এ ছাড়া ইরাক ও সিরিয়া থেকে পলাতক আইএস সদস্যরা মধ্য এশিয়া ও জিনজিয়াং পৌঁছানোর জন্য আফগানিস্তান বা ওয়াখান অঞ্চল ব্যবহার করতে পারে। এমনকি তারা চীনেও প্রবেশ করতে পারে বলে জানান বিশ্লেষকরা। গত বছর ডিসেম্বরে বেইজিংয়ে আফগান ও চীনা কর্মকর্তারা সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করেন। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র মোহাম্মদ রাদমানেশ জানান, এখনো বিস্তারিত কিছুই নির্দিষ্ট হয়নি। তিনি বলেন, আমরা সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করতে যাচ্ছি। চীনা সরকার আর্থিকভাবে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা আফগান সেনাদের সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণ দেবে। কাবুলের চীনা দূতাবাসের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, আফগানিস্তানে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে শুধু বেইজিং জড়িত হবে। আফগানিস্তানে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো মিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। তবে অতীতে মার্কিন কর্মকর্তারা আফগানিস্তানে চীনের ভূমিকা রাখার পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, উভয় দেশের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ একই ধরনের।

No comments

Powered by Blogger.