রূপচর্চায় হলুদ

প্রাচীনকাল থেকে হলুদ আমাদের সৌন্দর্য চর্চায় অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় আমাদের দেশে বর-কনের গায়ে হলুদের একটি রীতি যুগ যুগ ধরে প্রচলিত আছে। প্রবাদ আছে হলুদের ছোঁয়ায় বিয়ের কনের রূপ-লাবণ্য ফুটে ওঠে। সৌন্দর্য চর্চায় এখন নানা রকম উপাদান ব্যবহৃত হয়; কিন্তু হলুদের ব্যবহারের উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা চিরকালই অপরিবর্তনীয়। ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার সব সময়ই একটি মূল উপাদান। সৌন্দর্য চর্চায় নানাভাবে আমরা হলুদের ব্যবহার করে থাকি। হলুদের জাদুকরী ছোঁয়ায় ত্বকের আভা ও কোমলতা ফুটে ওঠে রূপলাবণ্যে।
ফেসপ্যাক হিসেবে হলুদের ব্যবহার
রোদে পোড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে হলুদের তৈরি ফেসপ্যাকগুলো দ্রুত কাজ করে। কাঁচা হলুদ বাটা, কাঁচা দুধ অথবা টকদই একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে এবং ১৫ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেললে ত্বকের কালচে ভাব দূর হয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসে। ত্বকের মেচতা ও বলিরেখা সারাতে হলুদ বাটা, বেসন, কাঁচা দুধ একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের বলিরেখা ও মেচতার সমস্যার চমকপ্রদ সমাধান হয়। কাঁচা হলুদ অ্যান্টিওক্সিডেন্ট হিসেবেও বেশ কার্যকরী। ত্বকে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে কাঁচা হলুদ বাটা, লেবুর রস, কেশর একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিনের ব্যবহারে ত্বকের দাগ ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যাবে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে ১ চা চামচ হলুদ বাটা, ১ চা চামচ মধু, ১ চা চামচ দুধ,
২চা চামচ বেসন মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকে মেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুইবার এ প্যাকটি ব্যবহার করলে ত্বকের আভা লাবণ্য, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। শুষ্ক, স্বাভাবিক, তৈলাক্ত ও মিশ্র ত্বকের জন্য হলুদের ব্যবহার সব ফেসপ্যাকেই হয়ে থাকে। কাঁচা হলুদ বাটা, কমলার খোসা বাটা, মুলতানি মাটি, মধু একসাথে মিশিয়ে হাত, মুখ, পায়ে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল, কোমল, মসৃণ। মানবদেহ থেকে টক্সিন বের করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে আধা কাপ হলুদের রস ও আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে হবে। নারিকেল তেলের সাথে হলুদ বাটা মিশিয়ে পায়ের গোড়ালিতে কিংবা পায়ের তলার ফাটা অংশে মেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিলে পায়ের ত্বক কোমল-মসৃণ হবে এবং পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্ত হবেন।

No comments

Powered by Blogger.