রামগঞ্জে ৪ কিলোমিটার যানজট

জেলার রামগঞ্জ উপজেলার খলিফা দরজার রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহা-সড়কের বিকল্প সড়ক বন্ধ করে দিয়ে ব্রীজের নির্মান কাজ অব্যাহত রাখায় বিকল্প সড়ক হিসাবে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরুত্বের কাটাখালি-চৌধুরী বাজারের গ্রামীন সরু সড়ক ব্যবহার করায় সড়কের দুই পাশে প্রায় ৪ কিলোমিটার জানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তার উভয় পাশে গাড়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উক্ত সড়কে চলাচলরত মানুষদের পড়তে হয়েছে মারাত্মক দূর্ভোগে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছরের শেষ নাগাদ রামগঞ্জ উপজেলার রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জÑঢাকার আঞ্চলিক সড়কের (১নম্বর কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের) খলিফা দরজা নামক স্থানে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগ (রোডস এন্ড হাইওয়ে) থেকে প্রায় ৪ কোটি ৩৮লক্ষ টাকার টেন্ডার পেয়ে ব্রীজ নির্মানের কাজ পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়াহিদুল করীম ফার্ম। টেন্ডার হওয়ার পর বিভিন্ন অজুহাতে কালক্ষেপন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়াহিদুল করীম ফার্ম চলতি বছরের রমজান মাসে অত্যান্ত ধীর গতিতে কাজ শুরু করে। নির্মানাধীন ব্রীজ সংলগ্ন পূর্বের তৈরি বেইলী ব্রীজটি দিয়ে উক্ত সড়কে প্রতিদিন শত শত গাড়ী যাতায়াত অব্যাহত থাকলেও হটাৎ করে গত মঙ্গলবার বিকালে বেইলী ব্রীজটি বন্ধ করে দিয়ে রামগঞ্জ উপজেলাব্যপি মাইকিং করে আগামী ১৮ আগষ্ট পর্যন্ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। এদিকে ব্রীজের নির্মান কাজ অব্যাহত থাকায় এবং যানবাহন ও স্থানীয় জনসাধারনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা না করে পাশ্ববর্তি বেইলী ব্রীজটি বন্ধ রাখায় প্রায় দুই কিলোমিটার দুুরুত্বের কাটাখালি সড়কের চৌধুরী বাজার হয়ে ওয়াপদা বেড়ি বাঁধের উপর দিয়ে বড় বড় ট্রাক-বাস, সিএনজি অটোরিক্সা যাতায়াত করতে গিয়ে মারাত্মক দূর্ভোগে পতিত হয়েছে। আজ সকাল ১১টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে সড়কের উভয় পাশে প্রায় ৪ কিলোমিটার জানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়কটি অত্যান্ত সরু হওয়ার কারনে কোন গাড়ীই যাতায়াত করতে পারছে না। স্থানীয় এলাকাবাসী আবুল কাশেম, মোঃ সুমনসহ বেশ কয়েকজন জানান, কাজের ধীরগতির কারনে খালটিতে এখন পানিতে টইটুম্বুর। খালের দুই পাশে বাঁধ দেয়া ছাড়া ব্রীজটি নির্মান সম্ভব হবে না। ভরা বর্ষায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কিভাবে কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করবে আল্লাই ভালো জানেন। বেশ কয়েকজন ট্রাক-বাস ও পিকআপ চালক জানান, আন্তজেলার গাড়ীগুলোতো আর রাস্তার বন্ধের কথা জানে না। রামগঞ্জ শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার এসে এখন ফিরে যেতে হবে প্রায় ৮০ কিলোমিটার। লাকসাম-সোনাইমুড়ি সড়ক দিয়ে এখন আবার ঘুরে যেতে হবে। অথছ কর্তৃপক্ষ যদি ব্রীজের নির্মান কাজের জন্য রাস্তা বন্ধ একটা সাইনবোর্ড টানাতো এমন দূর্ভোগে পড়তে হতো না। এব্যপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ ওয়াহীদুল করীম জানান, মাত্র এক সপ্তাহ কষ্ট করলেই হবে। বড় বড় গাড়ী চলাচলের কারনে যে কোন মুহুর্তে বেইলী ব্রীজটি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কায় শহরব্যপি প্রচারনা চালানো হয়েছে। আমরা আজই পাশ্ববর্তি হাজীগঞ্জ বা কাটাখালিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিবো। রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু ইউসূফ জানান, আমি কথা বলছি এবং দ্রুত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। বেইলী ব্রীজ দিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করতে পারি কি না দেখি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের রামগঞ্জ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুর রহিম জানান, বেইলী ব্রিজটি দিয়ে ৫টনের অতিরিক্ত গাড়ী চলাচলের কারনে যে কোন সময়ে বিপদ হতে পারে। তাছাড়া বিকল্প হিসাবে আমরা পাশ্ববর্তি কাটাখালি-কাঞ্চনপুর-চৌধুরী বাজার (ওয়াপদা বেড়ি বাঁধ) সড়ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে স্থানীয়দের। নির্মানাধীন ব্রীজের নিছের অংশে ঢালাই হয়ে গেলেই বেইলী ব্রীজটি খুলে দেয়া হবে সে সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.