২০ দিনেই ভেসে গেল ৫ কোটি টাকা

ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার খয়েরতলা বাকুলিয়া এলাকায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারের ১৫/২০ দিনেই সড়কের ওই অংশ যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্যস্ততম এই সড়কের কোল্ডস্টোর এলাকার রাস্তার দুই পাশ দেবে গেছে। তাই ফের ঝুঁকি নিয়ে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করছে। এ নিয়ে পথচারী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রিয়োডিক মেইনটেনেন্স প্রজেক্টের (পিএমপি মেজর) আতওতায় ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়কটির ওই অংশের সংস্কার কাজ করে। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রিয়োডিক মেইনটেনেন্স প্রজেক্টের (পিএমপি মেজর) আওতায় ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের চারটি স্থানের সংস্কার কাজের টেন্ডার পেয়ে ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম কাজ করেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সড়কের বিভিন্ন অংশে লেনথ ও খোয়ার থিকনেস কম দেয়ায় এমনটি হয়েছে। সূত্র জানায়, সড়কের সংস্কার কাজের তদন্ত ও ল্যাব টেস্ট করলেই সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাটের তথ্য পাওয়া যাবে। ৫ কোটিরও বেশি টাকায় সড়ক সংস্কারের মাত্র ২০ দিনের মাথায় সড়কের পিস-কংক্রিট উঠে যাওয়ায় এবং সড়কের প্রায় স্থান দেবে যাওয়ায় সমালেচনার মুখে পড়েছে সড়ক বিভাগ। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় হৈচৈ পড়ে গেছে। সূত্র জানায়, ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদকে এ বিষয়ে শোকজ করা হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট দফতরে তার জবাবও দাখিল করেছেন। কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম বলেন, আমি চারটি পয়েন্টে কাজ করেছি। কোন স্থানে কাজ খারাপ হয়নি। কিন্তু কালীগঞ্জের খয়েরতলা বাকুলিয়া অংশে রাস্তার মুল বেইজ খারাপ হওয়ার কারণ বর্ষার পানি পেয়ে নষ্ট হয়েছে। আমার পাথর দিয়ে ম্যাগাডামের পর কার্পেটিং করার কথা সেটি আমি করেছি। কাজে কোনো ত্রুটি ছিল না। তিনি নষ্ট হওয়া অংশটি নিজ উদ্যোগে মেরামত করবেন বলেও জানান। ঝিনাইদহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান বলেন, কাজটি এখনো শেষ হয়নি, চলমান রয়েছে। কিন্তু শেষ করা রাস্তা কেন এমন হলো আমি তদন্ত করে দেখছি। তিনি বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এমন হতে পারে। তিনি অনিয়ম দুর্নীতির কথা অস্বীকার করেন। সড়ক বিভাগের যশোর অফিসের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (এএসই) সুরুজ মিয়া জানান, রাস্তা যেভাবে করার কথা সে ভাবেই তো হয়েছে। কেন এমন হলো তা তদন্ত করে দেখা হবে। তিনি বলেন, এই রাস্তা পিএমপি মাইনর প্রজেক্টের কাজ। আমি যতদুর জানি এটা রিপিয়ার সিলকোটের কাজ ছিল। কালীগঞ্জ পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা চুন্নু মিয়া বলেন, এভাবে সরকারি টাকা শ্রাদ্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। মাত্র ১৫/২০ দিন আগে রাস্তাটি করা হয়। এখনো রোলারসহ সরঞ্জাম সাইডেই পড়ে আছে। একই ভাবে ক্ষোভের কথা জানান কালীগঞ্জের বাকুলিয়া গ্রামের মার্জেদ আলী, আবু জাফর, খয়েরতলা গ্রামের আবুল কাশেম, আজিজুল ইসলাম ও মহিউদ্দীন। তাদের ভাষ্য, কাজটি সঠিক ভাবে করা হলে মাত্র ১৫/২০ দিনে নষ্ট হওয়ার কথা নয়।

No comments

Powered by Blogger.