আলমডাঙ্গায় মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার অভিযোগে মা ও মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ঘণ্টাব্যাপী নির্যাতন করা হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। অবশেষে স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ নির্যাতিত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করেছে। আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোষবিলা গ্রামে শুক্রবার বিকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। মা-মেয়েকে বেঁধে রাখার ছবি ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। আসামিরা শিগগিরই গ্রেফতার হবে। নির্যাতনকারীদের শাস্তির দাবি জানায় এলাকাবাসী। জানা গেছে, আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নের ঘোষবিলা গ্রামের মৃত আমজাদ আলীর ছেলে মিস্টার আলীর টিনের চালে প্রায়ই ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। নিশ্চিত করে না জানতে পারলেও একেক দিন একেকজনকে দোষারোপ করেন তিনি ও তার পরিবার। শুক্রবার বেলা সাড়ে ৪টার দিকে কে বা কারা মিস্টার আলীর টিনের ঘরে ইটের খোয়া ছুড়ে মারে। তিনি সন্দেহ করেন প্রতিবেশী হানেফ আলীর পরিবারকে। মিস্টার আলী তার লোকজন নিয়ে হানা দেন তার বাড়িতে। এসময় তার স্ত্রী রিনা বেগম ও মেয়ে ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী ইয়াসমিন আতঙ্কিত হয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর তাদেরকে টেনেহিঁচড়ে ধরে নিয়ে আসেন মিস্টার আলী ও তাদের লোকজন। এরপর মা-মেয়েকে ঘরের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে তাদের ওপর নির্যাতন চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিস্টার আলী, তার মা ফাতেমা খাতুন ফাতু ও তাদের আত্মীয় হংগার আলী লাঠিসোটা দিয়ে মা-মেয়েকে বেদম পেটান।
এ ছাড়া চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারা হয় শরীরের যেখানে সেখানে। তারা কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাইলেও বেঁধে রাখা হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেয়। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে মা-মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয় জামজামি ফাঁড়ি পুলিশ। এলাকাবাসী জানায়, নির্যাতিত পরিবার খুবই দরিদ্র। তারা কখনও হাতপাখা তৈরি করে, কখনও খালে-বিলে মাছ শিকার আবার কখনও মৌচাক ভেঙে তাদের সংসার চলে। তারা কারোর ঘরে ইটপাটকেল ছুড়তে পারে এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। নির্দোষ মা-মেয়েকে অন্যায়ভাবে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করেছে মিস্টার আলী ও তাদের লোকজন। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল তরিকুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, ‘বিষয়টি জানার পর আজ (শনিবার) দুপুরে একজন পুলিশ অফিসারকে পাঠানো হয়েছিল তদন্তের জন্য। তদন্তে মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন প্রমাণিত হয়েছে। আলমডাঙ্গা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। শিগগিরই অভিযুক্ত নির্যাতনকারীদেরকে গ্রেফতার করা হবে। এ ঘটনায় কেউ ছাড় পাবে না।’

No comments

Powered by Blogger.