বগুড়ার ঘটনায় আইএস-এর দায় স্বীকার, মোটরসাইকেলে এসেছিল ৩ হামলাকারী by জিয়া শাহীন ও এম ছামছুল হক

হরিপুরের শিয়া মসজিদে হামলাকারী এসেছিল নিখুঁত নিশানা নিয়ে। হামলার বেশ কিছুক্ষণ আগেই তিন যুবক একটি মোটরসাইকেলে করে ওই এলাকায় যায়। তারা মসজিদ থেকে কিছু দূরে একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। সুযোগ বুঝে হামলা চালায় নামাজরত মুসল্লিদের ওপর। ঝটিকা হামলার পর তারা খোলা মাঠ দিয়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। ঘটনার আগে ও পরে ওই এলাকায় অবস্থান করা একাধিক ব্যক্তি মানবজমিনকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল ওই এলাকায় সরজমিন পরিদর্শনের সময় তারা জানিয়েছেন, হামলার পর মনে হয়েছে হামলাকারীরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। এ কারণে তারা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পেরেছে। মসজিদ থেকে অল্প একটু দূূরেই সাবিনা বেগমের বাড়ি। তিনি জানান, আসরের নামাজ পর মসজিদ থেকে একটু দূরে পরিত্যক্ত ইটভাটার পাশেই সবজি তুলতে যাই। সেখানে দেখতে পাই একটি মোটরসাইকেলে করে ৩ যুবক আসে। প্রত্যেকের পরনে প্যান্ট ও শার্ট পরা। তারা মোটরসাইকেল রেখে ইটভাটায় ঘোরাফেরা করতে থাকে। তাদের এক জনের পিছনে ব্যাগ ঝুলানো ছিল।
ওই তিন জন মসজিদের দিকে আসে সন্ধ্যায়। সন্ধ্যার পর ওই তিন যুবক মসজিদের দিক থেকে মাঠের মধ্যে দিয়ে যখন যাচ্ছিল, তখন তাদের দুইজনকে মুখোশ পরা দেখেছেন বলে জানান সাবিনা। তারা ইটভাটার দিকে চলে যায়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছে বগুড়ার শিবগঞ্জের হরিপুরের শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। শোকের ছায়া নেমেছে শিয়া-সুন্নিসহ সব মহলেই। হঠাৎ কেনইবা গুলির ঘটনা ঘটল। কি কারণে গুলি করে নামাজরত মানুষকে  হত্যা  করা হলো তা ভেবে কূল-কিনারা পাচ্ছে না এলাকার লোকজন। গুলির ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতেই শিবগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। এদিকে ওই  ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করেছে। তারা হলেন, শিবগঞ্জের মাঝি হট্ট ইউনিয়নের সৈয়দ দামগড়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন ও  কিচক ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে জুয়েল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৮টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। অন্য দিকে, নিহত মোয়াজ্জেম হোসেনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে বাড়ি আনা হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। সমবেদনা জানাতে মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়িতে শত শত মানুষ সকাল থেকেই ভিড় জমান। আহত আফতাব হোসেন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও ইমাম শাহীনুর ও আবু তাহের শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সরজমিন দেখা গেছে, মসজিদের পশ্চিম দিকে ফাঁকা মাঠ। সেখানে কোন জনবসতি নেই। একটু অদূরেই পরিত্যক্ত একটি ইটভাটা। মাত্র অল্প দূরে উত্তর পাশে বগুড়া-জয়পুরহাট সড়ক। মসজিদের দক্ষিণ পাশ দিয়ে একটি পাকা রাস্তা বেয়ে গেছে। মসজিদের দুপাশেই শিয়া-সুন্নি মতাদর্শের লোকের বসবাস। শুক্রবার ভোর থেকেই এলাকার লোকজন ঘটনাস্থল আল-ই-মোস্তফা মসজিদে ভিড় জমান। মসজিদের ভেতরে রক্তের ছোপ ছোপ চি?হ্ন দেখা যায় গতকালও। মসজিদের স্তম্ভে গুলির দাগ এখনও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। চারদিকে পুলিশ-র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য অবস্থান করছেন।
গুলিতে আহত আফতাব হোসেন বলেন, প্রায় ১৫-১৬  জন নামাজ আদায় করছিলাম। নামাজ আদায় শেষে  দোয়া পড়ছিলাম, এসময় হঠাৎ করে পর পর গুলির শব্দে দিশাহারা হয়ে মসজিদের মধ্যে এদিক ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকি। গুলিতে কয়েক জন মসজিদের মধ্যে লুটিয়ে পড়লে অনেকেই মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ভয়ে ও আতঙ্কে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লি পাশের চল্লিশছত্র গ্রামের আবদুল মজিদ বলেন, মসজিদের দরজা দিয়ে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করে পেছন থেকে গুলি চালায়। পর পর গুলি করে তারা মসজিদের নির্মাণাধীন প্রাচীর টপকে মাঠের মধ্যে দিয়ে পশ্চিম দিকে দিয়ে পালিয়ে যায়। দৌড়ে বের হয়ে এসে বুঝতে পারি দুর্বৃত্তরা মসজিদের ভিতরে এসে  মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়। (হরিপুর) বাংলাদেশ ইমামীয়া জনকল্যাণ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি মো. মোজাফ্‌ফর হোসেন জানান, তিনি ইরানের আল মোস্তফা ইউনিভার্সিটিতে কোরআনিক সায়েন্স বিভাগে আট বছর পড়াশোনা করেছেন। ইরান বিপ্লবের পরেই এই এলাকায় শিয়া মতাদর্শের দিকে লোকজন ঝুঁকতে থাকে। এলাকায় শিয়া -সুন্নি কোন দ্বন্দ্ব নেই। শিয়া সম্প্রদায় মসজিদটি নির্মাণ করলেও ওই মসজিদে শিয়া-সুন্নি দুই মতাদর্শের লোকজন নামাজ আদায় করে। কখনও কোন বিরোধ দেখা দেয়নি।
হরিপুর গ্রামের শিয়া মতাদর্শের আবদুর রশিদ জানান, হরিপুর চল্লিশছত্র, আলাদিপুর, গোপিনাথপুর, রামকান্দি ও বেলাইল এ গ্রামগুলোতে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনের বাস। এই আল মোস্তফা মসজিদে তারা নামাজ আদায় করে।  এ ছাড়াও পাশের গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পানিতলা, কানদিয়া, বড়িপাড়া, খড়পা এলাকায়  শিয়া সম্প্রদায় রয়েছে। তারা জিয়ারতের সময় এখানে আসে। তিনি আরও জানান, আমার আপন জ্যাঠাতো ভাই ইদ্রিস আলী সুন্নি আর আমি শিয়া। পাশাপাশি ঘর। কখনও ধর্মীয় বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় না। আমরা মিলে মিশে থাকি। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার মসজিদে গুলির ঘটনার পর শুক্রবার সকালে আতঙ্কে নামাজ পড়তে এসেছিল মাত্র ২/৩ জন।
হরিপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ আবু জাফর বলেন, ’৮২ সালে ঢাকায় ইরানি দূতাবাসে গিয়ে তাদের  কিছু বই নেই। আমি কমিউনিজমে বিশ্বাসী ছিলাম। ওই সব বই নিয়ে পড়ে রুশ ফরাসি বিপ্লবের সঙ্গে ইরানের বিপ্লব মিলানোর চেষ্টা করি। আমিই প্রথম এলাকায় শিয়া মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হই। পরে এলাকায় ইসলামীয়া স্টাডি সার্কেল নামে একটি পাঠাগার গঠন করি।  সেখানে নারী-পুরুষদের মধ্যে বই বিতরণ এবং আলোচনা শুরু করি। আস্তে  আস্তে লোকজন শিয়া মতাদর্শের দিকে আসতে শুরু করে। মসজিদের মুয়াজ্জিনকে প্রতিমাসে যে এক হাজার টাকা দেয়া হতো সে টাকা প্রদান করতেন ইরানে বসবাসকারী আমার পীর সাহেব আয়াতুল্লা শাহ রফি। এ ছাড়াও আমরা নিজেরা কিছু টাকা দিতাম।  ওই এলাকার সুন্নি মতাদর্শের হায়দার আলীসহ অনেকেই জানান, এলাকায় কখনও শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব, বিবাদ ছিল না। ওই মসজিদে শিয়া-সুন্নি দুই মতাদর্শের মানুষই নামাজ পড়তো। আমাদের মধ্যে খুবই সম্পর্ক ভাল।
শিবগঞ্জ থানার ওসি আহসান হাবিব বলেন, গতকাল  ভোরে আনোয়ার হোসেন ও জুয়েল নামে দুজনকে  জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ঘটনার রাতেই মসজিদের কোষাধ্যক্ষ সোনা মিয়া বাদী হয়ে  অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছে। ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে আটটি গুলিল খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন মোতায়েন করা হয়েছে। বগুড়া পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, যারা শিয়া বিদ্বেষী তারা এ ঘটনা ঘটাতে পারে। তার পরেও এ বিষয়টির পাশাপাশি অন্যান্য বিষয় মাথায় রেখে আমরা তদন্ত করে দেখছি। সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু ঘটনার পর দেখা যায় আইএস দায় স্বীকার করে। কিন্তু প্রতিটি ঘটনাই উদঘাটিত হয়েছে। তার সঙ্গে আইএস’র কোন সম্পৃক্ততা নেই। এ ঘটনায় আইএস’র দায় স্বীকার করার কোন ভিত্তি খুঁজে পাই না। বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম ময়নাতদন্ত শেষে বলেন, মোয়াজ্জেরমর চোখে ও হাতে দুটি গুলির ক্ষত রয়েছে। বাম হাত থেকে একটি গুলি বের করা হয়েছে। এদিকে গতকাল নিহত মোয়াজ্জেম হোসেনের লাশ শিয়া মসজিদ সংলগ্ন স্থানে দাফন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজ পর মসজিদের ভিতরে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে মসজিদের ইমাম শাহীনুর রহমান, মুয়াজ্জিন  মোয়াজ্জেম হোসেন, মুসল্লি আবু তাহের ও আফতাব উদ্দিন আহত হন। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মসজিদের মুয়াজ্জিন মোয়াজ্জেম হোসেন মারা যান।
শিয়া মসজিদে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নিন্দা
বগুড়ায় শিয়া মসজিদে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট ও বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন মসজিদে হামলার তীব্র নিন্দা জানান। একইসঙ্গে তারা হামলার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত এক বিবৃতিতে বলেন, একটি শিয়া মসজিদে বাংলাদেশীরা নামাজ আদায় করার সময় হামলার ঘটনায় আমি অত্যন্ত হৃদয়ভারাক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সহিষ্ণুতার দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধার চোখে দেখে উল্লেখ করে বার্নিকাট বলেন, এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে আছে তার দেশ।
এদিকে, এক বিবৃতিতে বৃটিশ হাইকমিশনার গিবসন বলেন, বগুড়ার কাছে একটি মসজিদে নামাজের সময় ইবাদতকারীদের ওপর বর্বর হামলায় আমি মর্মাহত। নিজেদের ধর্মবিশ্বাস চর্চারত মানুষের ওপর এমন হামলার যথার্থতা কোন কিছুই দিতে পারে না। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান গিবসন। গিবসন আরও বলেন, বাংলাদেশে সহিংস সন্ত্রাসী সিরিজ হামলার সব থেকে সাম্প্রতিক হামলা এটি। প্যারিস, মালি ও বৈরুতসহ সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে, কোন দেশই এমন হামলা থেকে নিরাপদ নয়। আর এটা এসব সন্ত্রাসবাদের আসন্ন ঝুঁকি ও মূল কারণগুলো মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালোভাবে উপস্থাপন করে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার শিবগঞ্জ উপজেলার হরিপুর গ্রামে শিয়া মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলায় মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত হন। আহত হন তিন জন মুসল্লি।
শিয়া মসজিদে হামলার দায় স্বীকার আইএস-এর
বগুড়ায় শিয়া মুসলিমদের একটি মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, আইএস-এর সঙ্গে সমপর্কিত একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বৃহসপতিবারের হামলার দায় স্বীকার করে বলা হয়েছে, ‘খেলাফতের যোদ্ধারা’ প্রার্থনারতদের মেশিনগান দিয়ে হামলা চালিয়েছে। সাইট ইন্টিলিজেন্সের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই বিবৃতিতে আইএস শিয়া মুসলিমদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছে, ‘আল্লাহর অনুমতি নিয়ে, বাংলাদেশের রাফিধা ইরানিয়ান স্বার্থের ওপর অভিযান অব্যাহত থাকবে’। ওই হামলায় নিহত হয়েছে এক ব্যক্তি, আহত হয়েছে তিন জন। গত মাসেও শিয়া সমপ্রদায়ের একটি মিছিলে বোমা হামলা চালানো হয়। বৃহসপতিবারের হামলায় শিয়া মসজিদের মুয়াজ্জিন মোয়াজ্জেম হোসেন মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে পরে হাসপাতালে মারা যান। মসজিদের ৩৫ বছর বয়সী ইমামসহ আরও তিনজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান বগুড়ার শিবগঞ্জ পুলিশের কর্মকর্তা আহসান হাবিব।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যায় শিয়া জনগোষ্ঠী খুব ছোট একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠী। এর আগে বাংলাদেশে কখনই সামপ্রদায়িক সহিংসতা হয়নি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামিম মোহাম্মদ আফজাল বলেন, এ ধরনের হামলার প্রকৃতি ও সময় খুব উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসে কোন মসজিদে এ ধরনের হামলা দেখিনি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ হামলাটি আরও একটি ইঙ্গিত যে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদী সংগঠনগুলো বাংলাদেশের চরমপন্থী নেটওয়ার্কসমূহের সঙ্গে সমপর্ক গড়ে তুলছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আহসান হাবিব বলেন, আমি এ ধরনের তথ্য শুনিনি বা পাইনি যে, শিয়া সমপ্রদায়ের সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব বা শত্রুতা ছিল। এ হামলাটি আমাকে কেবল বিস্মিত করেছে। ওই অঞ্চলের শিয়া নেতা মোজাফফর হোসেন (৩৫), যিনি বাংলাদেশ ইমামিয়া ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনে’র মহাসচিব, বলেন, বন্দুকধারীরা নিজেদের সঙ্গে তালা নিয়ে এসেছিল। এ তালা দিয়ে তারা মসজিদ প্রাঙ্গণের গেইট আটকে দেয়। এরপরই তারা মসজিদে প্রবেশ করে গুলি ছুড়তে থাকে। তিনি বলেন, বুধবারও তিনি নিজে ওই মসজিদে নামাজ আদায় করেছিলেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আইএস-এর সঙ্গে সমপর্কিত বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া বহু হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে। এসব হামলার মধ্যে শিয়া মিছিলে হামলা ছাড়াও, বাংলাদেশে বসবাসরত দুই বিদেশীকে গুলি করে হত্যা, পুলিশ চেকপয়েন্টে ছুরিকাঘাত ও রোম্যান ক্যাথলিক মিশনে এ মাসে গোলাগুলির ঘটনা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.