শিক্ষানবিশ এএসপির কাণ্ড -তাঁর ওপর আইন প্রয়োগের দায়িত্ব দেওয়া যায় না

সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে ও জনগণের নিরাপত্তা বিধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগটি তখনই নেওয়া হলো, যখন বিভিন্ন স্থানে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার ও তল্লাশিচৌকি বসানোয় জনমনে কিছুটা স্বস্তিও লক্ষ করা যাচ্ছে।
প্রত্যেক নাগরিকের উচিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই কার্যক্রমকে সর্বতোভাবে সহায়তা করা। তারপরও যদি কোনো সাধারণ নাগরিক সেটি করতে ব্যর্থ হন, আমরা অজ্ঞতা বা উপেক্ষা বলে ধরে নিতে পারি। কিন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্বশীল কোনো সদস্য যদি সেই কাজে বাধা দেন এবং কর্তব্যরত সদস্যদের ওপর চড়াও হন, তাহলে সেটি কেবল বেআইনি নয়, অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আর এ কাজটিই করেছেন সাভার অঞ্চলের শিক্ষানবিশ এএসপি। আইনের প্রতি যাঁর ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ নেই, আইনের কাজে যিনি বাধা দেন তিনি ভবিষ্যতে আইন কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করবেন কীভাবে!
পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর চড়াও হলেন এএসপি প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার শাহবাগ তল্লাশিচৌকিতে দুই মোটরসাইকেল আরোহীকে থামালে তাঁদের একজন এএসপি পুলিশ সদস্যদের ওপর চড়াও হন। পরে ওই কর্মকর্তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু তাঁর সহযোগী আরোহীকে কেন ছেড়ে দেওয়া হলো? ছাত্রলীগের সাবেক নেতা বলে? আইন সবার জন্য সমভাবে চলতে হবে।
দেশের মানুষ যখন নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন একজন পুলিশ কর্মকর্তা সেই কাজে বাধা দেবেন, সেটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশের আইজি বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে আমাদের স্পষ্ট কথা হলো, যে ব্যক্তি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান, তাঁর ওপর আইন প্রয়োগের দায়িত্ব দেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হবে না।

No comments

Powered by Blogger.