হাসপাতালে কাতরাচ্ছে শাহাদাত

সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটনের ছোঁড়া গুলিতে
আহত নয় বছরের শিশু শাহাদাত হোসেন
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটনের ছোঁড়া গুলিতে আহত নয় বছরের শিশু শাহাদাত হোসেন (সৌরভ) হাসপাতালের বিছানায় ব্যথায় কাতরাচ্ছে। পায়ের নিচে দেওয়া হয়েছে নরম বালিশ। পাশে বসে ছেলের মাথার হাত বোলাচ্ছেন মা সেলিনা বেগম। কিন্তু নরম বালিশে কিংবা মায়ের আদরে ক্ষতস্থানের ব্যথা কমছে না।
গত ২ অক্টোবর সকালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বাড়ি থেকে হাঁটতে বেরিয়েছিল স্থানীয় বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শাহাদাত। এ সময় সাংসদ লিটন গুলি ছুড়লে শিশুটির বাঁ পায়ে একটি ও ডান পায়ে দুটি গুলি লাগে। ওই দিনই শাহাদাতকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, শাহাদাত সুস্থ হয়ে উঠবে। তবে সময় লাগবে।
শিশুটির স্বজনেরা বলছেন, নিজে বাথরুমে যেতে পারে না শাহাদাত। তাই মায়ের কোলই তাঁর আশ্রয়। চিকিৎসকের উপস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার মা-বাবাকে ধরে একটু হাঁটার চেষ্টা করানো হয়েছে। কিন্তু যন্ত্রণায় হাঁটতে পারেনি সে।
আজ শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুটি বিছানায় শুয়ে আছে। পরনে হাফ-হাতা গেঞ্জি ও লুঙ্গি।
লোকজন দেখলে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে সে। বলে দুই পায়ে খুব ব্যথা।
শাহাদাতের মা সেলিনা বলেন, এখনো ব্যথায় ছটফট করছে। রাতে ঘুমাতে পারছে না। খেতেও পারে না। তাঁর প্রশ্ন, এভাবে আর কত দিন থাকতে হবে? সুস্থ হলেও তাঁর ছেলে আগের মতো হাঁটতে পারবে তো?
শাহাদাতের বাবা সাজু মিয়া বলেন, অনেকে খোঁজখবর নিচ্ছেন। তাতে সাহস পাচ্ছেন।
শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বাবুল কুমার সাহা বলেন, গুলিতে বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে একদিক দিয়ে মাংসপেশিতে ভেদ হয়ে অন্য দিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে। আর ডান পায়ের হাঁটুর নিচে দুটি স্থানে মাংস ছিলে গেছে। এসব ক্ষতস্থানে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সেরে উঠতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে চিকিৎসার কোনো ত্রুটি করা হচ্ছে না।

No comments

Powered by Blogger.